একজন বাঁহাতি স্পিনার। আরেকজনের আঙুলের ঘূর্ণিতে রহস্য—অফ স্পিন ও লেগ স্পিন দুটিই করেন, সুযোগ বুঝে মাঝে–মধ্যে ‘ক্যারম বল।’ বলা হচ্ছে, সাকিব আল হাসান ও মুজিব–উর–রহমানের কথা।
আজ বিপিএলে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে দুই স্পিনারই ১৪ রানের জয় এনে দিয়েছেন ফরচুন বরিশালকে। আগে ব্যাটিং করে ১৯.১ ওভারে ১৪৯ রানে অলআউট হয়েছিল বরিশাল। রান তাড়ায় নেমে সাকিব–মুজিবের যুগলবন্দীতে কুলিয়ে উঠতে পারেনি চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।
১৩৫ রানে অলআউট হয়ে ১৪ রানে হারের আগে সাকিব–মুজিবের স্পিনে স্রেফ ‘নেচেছেন’ চট্টগ্রামের ব্যাটসম্যানরা।
৪–১–৯–৩। এই ম্যাচে আফগান স্পিনার মুজিবের বোলিং পরিসংখ্যান। চট্টগ্রামের ইনিংসে শুধু ১৪তম ওভার দিয়েই তাঁর বোলিংয়ের গল্পটা বলা যায়।
ওই ওভারের আগে ৪২ বলে ৬৯ রান প্রয়োজন ছিল চট্টগ্রামের। হাতে ৬ উইকেট। মুজিব তখন নিজের শেষ ওভার করতে এসে পর পর দুটি দারুণ ডেলিভারিতে তুলে নেন বিপজ্জনক বেনি হাওয়েল ও আকবর আলীকে।
হাওয়েল বোল্ড হন গুগলি বুঝতে না পেরে, পরের বলে মুজিবের হাতের উল্টো পিঠ থেকে ছোড়া অফ স্পিন ভুল লাইনে খেলে বোল্ড আকবর। ওই ওভারের পর হাতে ৪ উইকেট নিয়ে ৩৬ বলে ৬৬ রানের সমীকরণ শেষ পর্যন্ত আর মেলাতে পারেনি চট্টগ্রাম।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে ১৮ রান তুলতে পারেনি দলটি। ১৯.৪ ওভারে অলআউট হয় চট্টগ্রাম।
সাকিবের কথাও আলাদা করে বলতে হবে। চট্টগ্রামের টপ অর্ডারে আফিফ হোসেন, মিডল অর্ডারে চ্যাডউইক ওয়ালটন ও অধিনায়ক নাঈম ইসলামের মতো বিপজ্জনক তিনজনকে তুলে নেন সাকিব।
মুজিব নিজের প্রথম ওভারে উইল জ্যাকসকে তুলে নেওয়ার পর দ্বিতীয় উইকেটে ৬০ বলে ৭০ রানের জুটি গড়েন আফিফ ও শামীম হোসেন। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা এ জুটিকে ১১তম ওভারে ভাঙেন সাকিব, ৩২ বলে ৩৯ রান করা আফিফকে বোল্ড করে।
পরের দুই ওভারে শামীম হোসেন (৩০) ও নাঈমকে হারিয়ে বেশ বিপদে পড়ে যায় চট্টগ্রাম। শামীমকে তুলে নেন মেহেদী হাসান ও নাঈমকে ফেরান সাকিব।
জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটও সাকিব–মুজিবের স্পিনকে বেশ সহায়তা করেছে। দুজনেই বাঁক পেয়েছেন যথেষ্ট।
চট্টগ্রামের ব্যাটসম্যানরা কুলিয়ে উঠতে পারেননি। ৪ ওভারে ২৩ রানে ৩ উইকেট নেওয়া সাকিব ম্যাচসেরাও। তাতে অবশ্য তাঁর দারুণ ব্যাটিংয়েরও অবদান আছে।
৩ ছক্কা ও ৩ চারে ৩১ বলে ৫০ রানের ইনিংস খেলেছেন সাকিব। এই সংস্করণে ৪৫ ইনিংস পর অর্ধশতকের দেখা পেলেন বাংলাদেশের এই তারকা অলরাউন্ডার। ২৮ রান এসেছে নাজমুল হোসেনের ব্যাট থেকে। ১৯ বলে ২৫ রান করা ক্রিস গেইল ঝোড়ো শুরু পেলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি।
মুজিবের মতোই হ্যাটট্রিকের দেখা পেতে পারতেন বরিশালের পেসার মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীও। ১৯তম ওভারে চার বলের মধ্যে ৩ উইকেট পান তিনি। তবে বরিশালকে দেড় শ রানের নিচে গুটিয়ে দিতে পারলেও চট্টগ্রামের ব্যাটসম্যানরা সাকিব–মুজিবের কাছেই হেরেছেন।