স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিএনপি’র আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব
আমার দেশ
নিজস্ব প্রতিনিধি
স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশ্ন রেখে বলেছেন, স্বাধীনতার চেতনা কি রাষ্ট্রীয় তহবিল চুরি করা? মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া? রমজান মাসে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া কি স্বাধীনতার চেতনা? বর্তমান সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা মুখে বললেও তারা স্বাধীনতার চেতনাকে ধূলিস্যাৎ করেছে।
সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়ে নির্বাচন কমিশন থেকে বিএনপিকে দেওয়া চিঠি হচ্ছে একটি নতুন কৌশল। কমিশনের কিছু করার ক্ষমতা নেই। তিনি বলেন, মূল জায়গায় কাজ করতে হবে। বিএনপি’র দাবি হচ্ছে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন। সেটার ঘোষণা দিতে হবে।
শনিবার (২৫শে মার্চ) দুপুরে রাজধানীর গুলিস্তানে মহানগর নাট্যমঞ্চে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে নতুন খেলায় নেমেছে। মুখে গণতন্ত্র ও ভোটের কথা বলবে আর প্রশাসনকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে চালাবে। আবারও একই পাঁয়তারা করছে, পশ্চিমা বিশ্ব আগের মতো নির্বাচন চায় না।
তিনি বলেন, বিএনপিকে নয় জনগণকে ক্ষমতায় আসতে দেওয়ার সুযোগ করতে হবে। মানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার মেনে নিয়ে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়াতে হবে।
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, সরকার প্রতিটি জিনিসের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দাম কমলেও একই পণ্যের দাম বাংলাদেশে কমে না। সরকারের দুর্নীতি ও সরকারি দলের লোকদের চুরির কারণেই মূলত জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, আজকে যারা জোর করে ক্ষমতায় বসে আছেন তারা ভয়ংকর মিথ্যা ইতিহাস দীক্ষা দিচ্ছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন-স্বাধীনতার চেতনা কী রাষ্ট্রীয় তহবিল চুরি করা? লুট করে ভোট কেড়ে নেওয়া? সিন্ডিকেট করে রমজানে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি করা? সেদিন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক শূন্যতা ও ব্যর্থতার কারণেই ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে গণহত্যা ঘটেছিল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, স্বাধীনতার চেতনা আজ ধূলিসাৎ করে দিয়েছে বর্তমান সরকার। একটি মহলের স্বার্থ রক্ষা করতে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা লুট করছে আওয়ামী লীগ সরকার। আজীবন ক্ষমতায় থাকতে গণহত্যা করেছে। ভোটের অধিকার সব জায়গায় কেড়ে নিয়েছে। ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই জনগণের কাছে দায়বদ্ধতা না থাকায় সিন্ডিকেট করে অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে।
বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলন আরও বেগবান করতে হবে ও স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করতে বাধ্য করতে হবে এবং জনগণ তাই আওয়াজ তুলেছে। মুক্তিযুদ্ধের দল হিসেবে বিএনপিকে দায়িত্ব বেশি নিতে হবে। আজকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা।
স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, বিএনপি ধোঁকাবাজির রাজনীতি করে না, যা বলে তাই করে। বিএনপি মানুষের জন্য কাজ করে। দেশের মানুষের টাকা কেনো লুটপাট করে পাচার করা হচ্ছে, এমন স্বাধীনতা চায়নি বাংলার জনগণ। স্বাধীনতার উদ্দেশ্য ও আদর্শ আবারও প্রতিষ্ঠা করা হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, বাকশালি কায়দায় সবাইকে কারাগারে বন্দি করে নির্যাতন চালাচ্ছে সরকার। আবারও দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা হবে তারেক রহমানের নেতৃত্বে।
দলের প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি ও সহ প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, শাজাহান ওমর বীর উত্তম, মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম), ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, আমান উল্লাহ আমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।