- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রে রাজোয়েলিনা তার পদত্যাগের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। চলমান সরকারবিরোধী বিক্ষোভের মধ্যেই তিনি অভিযোগ তুলেছেন, তার বিরোধীরা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র করছে। তার এমন মন্তব্যের পর দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক সংকট আরও গভীর হয়েছে।

আল জাজিরার খবর অনুসারে, শুক্রবার (৩ অক্টোবর) রাজধানী আন্তানানারিভোতে আবারও ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। কয়েক দিনের ‘কৌশলগত বিরতি’ শেষে ‘জেন-জি’ আন্দোলনকারীরা এদিন রাস্তায় নেমে আসে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনার সরকার বিদ্যুৎ ও পানির মতো মৌলিক সেবা নিশ্চিতে ব্যর্থ হয়েছে, একারণে তারা তার পদত্যাগ দাবি করছে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনে এখন পর্যন্ত অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছে। শুক্রবারও পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে। স্থানীয় একটি টেলিভিশনের ভিডিও ফুটেজে এমন চিত্র দেখা গেছে।
এদিকে, ফেসবুকে দেওয়া এক ভাষণে প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা বলেন, ‘দেশের ধ্বংস থেকে কেউ লাভবান হয় না। আমি এখানে আছি, শুনতে প্রস্তুত, সাহায্যের হাত বাড়াতে প্রস্তুত এবং মাদাগাস্কারের সমস্যার সমাধান আনতে প্রস্তুত।’
তবে তিনি দাবি করেন, জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে তিনি যখন নিউ ইয়র্কে ছিলেন, তখন কিছু রাজনীতিবিদ আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে তার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনা করছিলেন। যদিও এই অভিযোগের পক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ দেননি। তিনি আরও বলেন, ‘কিছু লোক আমাদের দেশ ধ্বংস করতে চায়।’ তবে এই পরিকল্পনার সঙ্গে কারা জড়িত, সে বিষয়ে তিনি কিছু স্পষ্ট করেননি।
‘জেন-জি’ আন্দোলনকারীরা প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্যকে ‘অর্থহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকার তাদের দাবির বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া না দিলে ‘প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ’ নেওয়া হবে।
এরই মধ্যে রাজধানীর বাইরেও বিক্ষোভের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে। শুক্রবার মাহাজাঙ্গা, টুলিয়ারা ও ফিয়ানারানসোয়া শহরেও বিক্ষোভ হয়েছে। এর আগে, গত সোমবার বিক্ষোভের মুখে রাজোয়েলিনা তার সরকার ভেঙে দেন এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে আলোচনার কথা জানান। তবে এতে পরিস্থিতির দৃশ্যত কোনো উন্নতি হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে এক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তৎকালীন মেয়র আন্দ্রে রাজোয়েলিনা ক্ষমতা গ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক চাপের কারণে তিনি ২০১৩ সালের নির্বাচনে অংশ না নিলেও, ২০১৮ সালে নির্বাচিত হন এবং ২০২৩ সালে পুনর্নির্বাচিত হন। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রায় তিন কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার ৭৫ শতাংশই দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছে।মাদাগাস্কারে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছেই, পদত্যাগে অস্বীকৃতি প্রেসিডেন্টের