দুটি পুরোপুরি ভিন্ন ম্যাচ। দুই ম্যাচের মাঝখানে ব্যবধান ২৮ বছরের। অথচ দুই ম্যাচের বিভিন্ন ঘটনা প্রবাহে কী আশ্চর্য মিল! ভারত, পাকিস্তান ক্রিকেট লড়াই উত্তেজনা ছড়ায়, ছড়িয়ে দেয় নানা ধরনের রোমাঞ্চ; কিন্তু দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর এ দুটি লড়াই যেন রহস্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন।
ভারত ও পাকিস্তানের এ লড়াই দুটির একটি শারজায় অন্যটি ঢাকায়। ১৯৮৬ সালে শারজায় অস্ট্রেলেশিয়া কাপের সেই ফাইনাল। ভারতীয় পেসার চেতন শর্মার বলে ছক্কা মেরে শেষ বলে পাকিস্তানকে জিতিয়েছিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদ। ২৮ বছর পর ২০১৪ সালে ঢাকার এশিয়া কাপে একই ধরনের পরিস্থিতিতে শেষ বলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে ছক্কা মেরে পাকিস্তানকে জিতিয়েছিলেন শহীদ আফ্রিদি। দুটি ম্যাচেই পাকিস্তান জিতেছিল ১ উইকেটে। দারুণ মিল না!
ভারত–পাকিস্তানের সে দুই ম্যাচের প্রসঙ্গে ফেরা যাক। কেবল শেষ বলের ছক্কা, আর জয়ের ব্যবধানই নয়। এ দুটি ম্যাচে আরও বেশ কয়েকটি অদ্ভুত মিল রয়েছে, যেগুলো অবাক করার মতোই।
দুটি ম্যাচেই প্রথমে ব্যাটিং করে ভারত তুলেছিল ২৪৫। ২৪৬ রানের লক্ষ্যমাত্রা তাড়া করতে নেমে দুই ম্যাচেই পাকিস্তান হারই দেখছিল। কিন্তু দুটি ম্যাচেই দুজন ক্রিকেটারের একক কারিশমায় জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে পাকিস্তান। তবে এক্ষেত্রে পার্থক্য ছিল ১৯৮৬ সালে জাভেদ মিয়াঁদাদ অস্ট্রেলেশিয়া কাপের ফাইনাল জিতিয়েছিলেন ১১৬ রানের দুর্দান্ত এক ম্যাচজয়ী ইনিংস খেলে। আর ২০১৪ এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানকে জিতিয়েছিলেন আফ্রিদি মাত্র ১৮ বলে ৩৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে। দুই ম্যাচজয়ীর মধ্যে অবশ্য একটা জায়গায় মিল আছে—দুজনই তাদের ইনিংসে ৩টি করে ছক্কা মেরেছিলেন।
দুই ম্যাচে আরও যেসব মিল
· ১৯৮৬ সালের ম্যাচে ভারতের ওপেনার কৃষ্ণমাচারি শ্রীকান্ত ২ ছক্কা মেরেছিলেন। ২০১৪ সালে ২ ছক্কা মেরেছেন ভারতীয় ওপেনার রোহিত শর্মা।
· ১৯৮৬ ম্যাচে ভারতীয় দলের তিনটি হাফ সেঞ্চুরি হয়েছিল। ২০১৪ সালেও একই ব্যাপার। ১৯৮৬ তে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন—শ্রীকান্ত, সুনীল গাভাস্কার ও দিলীপ ভেংসরকার। ২০১৪ সালে তিন হাফ সেঞ্চুরি রোহিত শর্মা, আম্বাতি রায়ডু ও রবীন্দ্র জাদেজার।
· পাকিস্তানের ইনিংসে ২টি রান আউটের ঘটনা ছিল ১৯৮৬–তে। ২০১৪ সালেও একই ব্যাপার। ১৯৮৬তে রান আউট হয়েছিলেন সেলিম মালিক ও ওয়াসিম আকরাম, ২০১৪ সালে মিসবাহ–উল–হক ও শোয়েব মাকসুদ।
· ১৯৮৬ সালে পাকিস্তানের ১০ নম্বর ব্যাটসম্যানকে প্রথম বলেই বোল্ড করেছিলেন চেতন শর্মা। ২০১৪ সালে পাকিস্তানের ১০ নম্বর সাঈদ আজমলকে প্রথম বলে বোল্ড করেন অশ্বিন।
· ১৯৮৬ সালে পাকিস্তানের ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান তৌসিফ আহমেদ খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি সিঙ্গেলস নিয়ে মিয়াঁদাদকে শেষ বলে স্ট্রাইক দিয়েছিলেন। পরে মিয়াঁদাদই শেষ বলে ছক্কা মেরে পাকিস্তানকে জেতান। ২০১৪ সালে পাকিস্তানের ১১ নম্বর ব্যাটসম্যান ছিলেন জুনায়েদ খান। তিনি একইভাবে একটি সিঙ্গেলস নিয়ে আফ্রিদিকে শেষ বল খেলার সুযোগ দেন। সেই শেষ বলেই ছক্কা মেরে দেন আফ্রিদি।
· ১৯৮৬ সালে ম্যাচের শেষ ওভারটি করেছিলেন চেতন শর্মা। তাঁর শেষ বলেই ছক্কা মেরে ভারতকে হারান মিয়াঁদাদ। সে ম্যাচে চেতন পেয়েছিলেন ৩ উইকেট। ২০১৪ সালে ৩ উইকেট পাওয়া অশ্বিনের শেষ বলেই ছক্কা মারেন আফ্রিদি।