রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ১১ সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে। এ নিয়ে টানা তৃতীয় সপ্তাহ রিজার্ভ কমল। ১৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়া সপ্তাহে তাদের রিজার্ভ ৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন বা ৫৭০ কোটি ডলার কমে ৫৬১ দশমিক ২৭ বিলিয়ন বা ৫৬ হাজার ১২৭ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।
একই সঙ্গে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার সোনার রির্জাভও কমেছে। ১৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়া সপ্তাহে তাদের সোনার রিজার্ভ ১০০ কোটি ডলার কমে ৪১ দশমিক ৮২ বিলিয়ন হয়েছে। খবর দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের।
এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়া সপ্তাহেও ভারতের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১১ মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নেমে আসে। রুপির মান স্থিতিশীল রাখতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া যে হারে ডলার বিক্রি করছে, সম্ভবত সে কারণেই রিজার্ভ কমছে বলে টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
টানা তৃতীয় সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমার আরেকটি কারণ হলো, রিজার্ভ ব্যাংকে বিদেশি মুদ্রায় রক্ষিত সম্পদ কমে যাওয়া, যা আগের সপ্তাহে ৪৫০ কোটি ডলার কমে ৪৯ হাজার ৬০৭ কোটি ডলার হয়েছে।
পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে বেশ বড় পরিমাণে পুঁজি ভারতের বাইরে চলে যাওয়ার কারণে। আদানি গোষ্ঠীর ওপর দিয়ে যে ঝড় বয়ে যাচ্ছে, তাতে ভারতে বিনিয়োগের বিষয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা কিছুটা উদ্বিগ্ন। এতেও ডলারপ্রবাহ কমছে।
ভারতের এইচডিএফসি সিকিউরিটিজের গবেষণা বিশ্লেষক দিলীপ পারমার দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ডলার ব্যতীত অন্যান্য মুদ্রায় রক্ষিত সম্পদ কমে যাওয়া এবং ডলারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে ডলার বিক্রি করার কারণেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এভাবে কমছে।’
গত বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে আরবিআইয়ের রিজার্ভ বাড়লেও কয়েক সপ্তাহ ধরে তা কমছে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। ফলে মূল্যস্ফীতি যে হারে কমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছিল, তা হচ্ছে না। এতে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ আরও কিছুদিন নীতি সুদহার বাড়াবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে দেশটির বন্ডের সুদহার আবার বেড়েছে। বিনিয়োগকারীরা ভারতসহ উন্নয়নশীল দেশ থেকে বিনিয়োগ তুলে সেখানে বিনিয়োগ করছেন। ফলে ডলারের বিনিময় হার আবার বাড়তে শুরু করেছে। আজ প্রতি ডলারে মিলছে ৮২ দশমিক ৭০ ডলার। বাড়ছে আমদানি ব্যয়, কমছে রিজার্ভ।
বিনিয়োগকারীরা ভারতের শেয়ারবাজারেও বিনিয়োগ কমিয়ে দিয়েছেন। সে জন্য গত বুধবার ভারতের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন হয়।