ভারতে মারধর করে ট্রেন থেকে ফেলে দেয়া হলো মুসলিমদের
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় কয়েকজন মুসলমানকে মারধর করে চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে।
প্রহারের শিকার মুসলিমদের দুজন বিবিসিকে বলেছেন, তাদের মাথায় টুপি এবং মুখে দাড়ি নিয়ে চলন্ত ট্রেনের কয়েকজন তরুণ টিকা-টিপ্পনী কাটতে থাকে।
এক পর্যায়ে ‘জয় শ্রীরাম’ শ্লোগান দিতে বলা হয় ওই মুসলিমদের। না দেয়ায়, তারা চড়াও হয়ে মারধর শুরু করে।
মার খাওয়া দু’জন বলেন, ঘটনার পর থেকে তারা আতঙ্কে ভুগছেন। একজন বলেছেন, ট্রেনে উঠতে হবে বলে তিনি ভয়ে কাজে পর্যন্ত যাচ্ছেন না।
পুলিশ বলছে, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা।
বৃহস্পতিবার সকালের ওই ঘটনাটির কথা জানা যায় মঙ্গলবার রাতে। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার ক্যানিং – শিয়ালদহ লোকাল ট্রেনে চেপে রোজকার মতো কাজের জায়গায় যাচ্ছিলেন এই মুসলমান যাত্রীরা। সেদিনই হিন্দু সংহতি নামের একটি কট্টর হিন্দু সংগঠনের জমায়েত ছিল কলকাতায়, এবং তাদের সমর্থকরাও নানা স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠছিলেন ও ‘জয় শ্রীরাম’ শ্লোগান দিচ্ছিলেন।
কিছু পরেই হিন্দুত্ববাদীদের সংখ্যাটা প্রতি কামরায় ৭০-৮০ জন মতো করে হয়ে যায়।
আহত মুসলিমদের একজন মান্নান মোল্লা বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন যে প্রথমে তাদের বলা হয় জয় শ্রীরাম শ্লোগানে গলা মেলাতে বলা হয়।
“এর সঙ্গেই চলতে থাকে পোশাক ও দাড়ি নিয়ে কটুক্তি, বলা হয় যে এইসব পোশাক পরা যাবে না.. ইত্যাদি।”
বিবিসি বাংলায় আরো খবর:
সাংবাদিককে দেয়া দুদকের চিঠির ভাষা: আইন কী বলে
মাদকের বিরুদ্ধে কি যথেষ্ট সচেতনতা তৈরি হয়েছে
আপনার বাড়ির কোথায় কোথায় সবচেয়ে বেশি জীবাণু
বাংলাদেশ, শ্রীলংকা ও পাকিস্তানের সেমিফাইনালের হিসাব
আর তারপরে চলন্ত ট্রেনেই শুরু হয় মারধর। ট্রেনটির বিভিন্ন কামরায় মারধর চলছিল বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
শাহরুফ হালদার নামে আরেকজন জানিয়েছেন, পার্ক সার্কাস স্টেশনে ঢোকার পরে তিনি ও আরও কয়েকজন মুসলমান যাত্রী নেমে যেতে চেষ্টা করছিলেন, সেখানে তাদেরও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় এবং তার আগে তাদেরও মারধর করা হয়। একজন হিন্দু ধর্মাবলম্বীকেও পেটায় ওই সংগঠনটির কর্মীরা।
রেল পুলিশ বলছে, মারধর আর ধাক্কা মারার অভিযোগের তদন্ত করছেন তারা।
আহতদের চোট খুব গুরুতর নয়, কিন্তু বাইরে থেকে আঘাতের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে, কারো কারো মাখায় সেলাই দিতে হয়েছে বলেও জানানো হয়।
হিন্দু সংহতির প্রধান মি. তপন ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এই প্রসঙ্গে কোনও কথা বলতে রাজী হন নি।
কিন্তু ওই সংগঠনটির কয়েকটি সূত্র সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করে যে তাদের কোনও কর্মী সমর্থক এই ঘটনায় জড়িত ছিলেন না।