ভারতে বসে অপতথ্য ছড়াচ্ছে আওয়ামী লীগ

বশীর আহমেদ
প্রকাশ : ০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৫: ৪৯

জুলাই বিপ্লবের প্রথম বর্ষপূর্তি, অর্থাৎ ৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারে নেমেছে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ। ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তা ও পরিকল্পনায় দিল্লি থেকে বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি, অন্তর্বর্তী সরকার, বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে জঘন্য মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে বাংলাদেশে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষিত দলটি। আমার দেশকে এসব তথ্য জানিয়েছে দিল্লি ও কলকাতার একাধিক কূটনৈতিক সূত্র।

বিভিন্ন সূত্র জানায়, কয়েকদিন আগে ড. ইউনূসের ছবিসংবলিত ‘দ্য বুচার অব এ নেশন-প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূস’, ‘দ্য বুচার অব বাংলাদেশ-প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনূস’ এবং ‘মাইক্রো ক্রেডিট টু মেগাস্ক্যামস’ শিরোনামে বুকলেট তৈরি করে দিল্লি প্রেস ক্লাবে ভারতীয় এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন থিংক ট্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে বিলি করা হয়েছে। ইংরেজি ভাষায় প্রকাশিত এসব বুকলেটে জুলাই গণহত্যার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে দায়ী করে বলা হয়েছে, ড. ইউনূসই জুলাই গণহত্যা ঘটিয়েছেন। সহিংস অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তিনি ক্ষমতা দখল করে নির্বিচারে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করেছেন।

এসব বুকলেট প্রচারের পাশাপাশি বাংলাদেশবিরোধী বিভিন্ন পোস্টার তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। ‘নির্ভীক নিউজ’ নামে ভারতের একটি নিউজ পোর্টাল নিয়মিতভাবে বাংলাদেশবিরোধী অপপ্রচারে লিপ্ত। ভারতীয় ডিপ স্টেট, তথা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নেপথ্যে থেকে এ ধরনের নিউজ পোর্টাল পরিচালনা করে বলে জানা গেছে।

নির্ভীক নিউজে প্রকাশিত এডিটেড এবং ভুয়া ছবি দিয়ে আওয়ামী লীগ এসব পোস্টার বানিয়েছে বলে সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে। এ ধরনের একাধিক পোস্টার আমার দেশ-এর কাছে এসেছে। এর একটি পোস্টারে ১১০ জনের ছবি দিয়ে তাদের সংসদ সদস্য হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে- ‘তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’ তবে এসব ছবি বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ছবিগুলোর মধ্যে জাতীয় পার্টি (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর ছবিও আছে। তবে তিনি গ্রেপ্তার নন এবং অন্তর্বর্তী সরকারের সময় তিনি গ্রেপ্তার হননি। এছাড়া এ ১১০ জনের মধ্যে একাধিক ব্যক্তি আছেন, যারা কখনো এমপি হননি।

‘হোয়েন দ্য ইউনিফর্ম ফেইল’ শিরোনামে আরেকটি পোস্টারে অগ্নিকাণ্ড, ভাঙচুর এবং রাস্তায় পড়ে থাকা একজন পুলিশের ছবি দেখানো হয়েছে। এ পোস্টারের মাধ্যমে তারা বলতে চেয়েছে, জুলাই আন্দোলনের সময়ে ড. ইউনূসই এসব নাশকতা ঘটিয়েছেন।

তবে প্রকৃত সত্য হলো, শেখ হাসিনার নির্দেশেই জুলাই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। তার সরকারের আইজিপি সম্প্রতি আদালতে এ বিষয়ে সাক্ষ্যও দিয়েছেন। এছাড়া জাতিসংঘের এক ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং রিপোর্টেও শেখ হাসিনাকে জুলাই গণহত্যার মাস্টার মাইন্ড আখ্যায়িত করা হয়েছে।

এদিকে আগামী ৫ আগস্ট উপলক্ষে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ‘শেখ হাসিনার খোলা চিঠি’ নামে একটি বিবৃতি নিষিদ্ধ ঘোষিত দলটির নেতাকর্মীদের কাছে পাঠানো হয়েছে। ওই বিবৃতিতে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট একটি কালো অধ্যায় এবং গণতন্ত্র পতনের দিন। ওই বিবৃতিতে আরো বলা হয়, এক বছর আগে এই দিনে আমাদের এ জাতি ইতিহাসের এক জঘন্য সহিংসতার সাক্ষী হয়েছে। সহিংস অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অনির্বাচিত ব্যক্তিরা ক্ষমতা দখল করেছে। এটা ইতিহাসের কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে।

শেখ হাসিনা তার নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, তারা ক্ষমতা দখল করতে পারলেও আমাদের চেতনাকে হনন করতে পারবে না। আওয়ামী লীগ আছে এবং থাকবে। গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যে নাশকতা চালিয়েছে, তার পক্ষে সাফাই গেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, তোমরা যে সাহস দেখিয়েছ তাতে আমি উৎসাহিত হই। আমরা আবারও বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণ নেব।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা গত বছরের ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে ভারত চলে যান। তিনি বর্তমানে দেশটির সরকারের আশ্রয়ে দিল্লিতে অবস্থান করে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে নানা অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। শেখ হাসিনার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, দলের নেতা জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিমসহ বেশ কয়েক প্রভাবশালী নেতা কলকাতা ও দিল্লিতে অবস্থান করে নানা অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।

1 COMMENT

  1. Can’t be emphasized enough again and again that what we see is only the tip of the iceberg, if any. There is no question that the sole purpose of India in keeping SH safe and secure in India, instead of handing her over for her crimes is to use her again for a power grab in Bangladesh. This is how India has been controlling its neighbors for eternity. But, Bangladesh is not Sikkim, Bhutan or Nepal. It is a huge country with 200 + million people,, with a proud history and already shown three times that it can destroy the yoke of any foreign occupation – first the British Raj, then Pakistan and then SH/AL dictatorship. So, India should beware. And, we should remain 1000 percent vigilant against this goon SH and her pary goons inside and outside the country hatching plots, creating chaos (lke in Gopalganj) and spreading falsehoods.

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here