ভারতে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিক অক্টোবর-ডিসেম্বরে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) ৮ দশমিক ৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। উৎপাদন ও নির্মাণ খাতে উচ্চ প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে দেশটির জিডিপি প্রবৃদ্ধি বিশ্লেষকদের অনুমানকে ছাড়িয়ে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর মিন্ট’র।
জিডিপি প্রবৃদ্ধির এই হিসাব ভারতের জাতীয় পরিসংখ্যান অফিস (এনএসও) গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশ করেছে। যদিও অর্থনীতিবিদেরা ইতিপূর্বে তৃতীয় প্রান্তিকে ভারতের অর্থনীতিতে ৬ দশমিক ৬ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিলেন।
এনএসওর তথ্যানুযায়ী, ২০১১-১২ অর্থবছরের ভিত্তি মূল্যে বা স্থির মূল্যে চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে জিডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ৪৩ দশমিক ৭২ লাখ কোটি রুপি, যা গত ২০২২-২৩ অর্থবছরে একই সময়ে ছিল ৪০ দশমিক ৩৫ লাখ কোটি রুপি। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে দেশটির জিডিপি বেড়েছে ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে চলতি মূল্যে জিডিপির আকার গত ২০২২-২৩ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ছিল ৬৮ দশমিক ৫৮ লাখ কোটি রুপি। চলতি অর্থবছরের একই প্রান্তিকে সেটি ১০ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ৭৫ দশমিক ৪৯ লাখ কোটি রুপি।
এই জিডিপি প্রবৃদ্ধি ভারতীয় অর্থনীতির শক্তি ও সম্ভাবনারই প্রতিফলন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) মন্তব্য করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি লিখেছেন, ‘চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তৃতীয় প্রান্তিকে ৮ দশমিক ৪ শতাংশের মতো উচ্চ প্রবৃদ্ধি ভারতীয় অর্থনীতির শক্তি ও সম্ভাবনা প্রদর্শন করে। দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে, যা ১৪০ কোটি ভারতীয়কে উন্নত করতে সহায়তা করবে।’
এদিকে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পেঁয়াজের মতো একটি প্রধান খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে গত বছর জনগণের ক্রয়ক্ষমতা কমেছিল। তবে খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এমন বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছিল দেশটির সরকার।
সাম্প্রতিক বছরগুলোয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অবকাঠামো নির্মাণে সরকারি ব্যয় বাড়িয়েছেন। এ ছাড়া ভারতকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষম হিসেবে গড়ে তুলতে মুঠোফোন, ইলেকট্রনিকস, ড্রোন ও সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনে প্রণোদনা বাড়ানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভারত সরকার প্রায় দেড় হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগে তিনটি সেমিকন্ডাক্টর প্ল্যান্ট নির্মাণে সবুজ সংকেত দিয়েছে।
ভারতীয় জিডিপির ১৫ শতাংশের জোগানদাতা কৃষি খাত কম বৃষ্টির কারণে সংগ্রাম করছে। আবার কৃষকদের একটা অংশ ফসলের ন্যূনতম মূল্যের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন।