আবারও বিধ্বস্ত হলো ভারতের শেয়ারবাজার। গতকাল সোমবার বাজার খোলার পর ভারতীয় শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক সেনসেক্স ১ হাজার ৯৫৫ পয়েন্ট পড়ে যায়। নিফটি ৫৯৬ পয়েন্ট খুইয়ে নেমে আসে ১৭ হাজার ৫০-এর নিচে। অর্থাৎ সপ্তাহের প্রথম দিনেই (রোববার ছুটি) বাজার থেকে মুছে গেল বিনিয়োগকারীদের ৯ লাখ ১৫ হাজার কোটি রুপির শেয়ার সম্পদ।
আন্তর্জাতিক বাজারে সমস্যার জেরে ভারতের শেয়ারবাজার এ নিয়ে পঞ্চম দিন বিধ্বস্ত হলো। গত সপ্তাহের শেষে বাজার বন্ধের সময় সেনসেক্স ৪২৭ পয়েন্ট নেমে ৫৯ হাজার ৩৭-এ পৌঁছেছিল। ১৩৯ পয়েন্ট পতনের পর নিফটি পৌঁছায় ১৭ হাজার ৬১৭ পয়েন্টে। সব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীদের ক্ষতির পরিমাণ ৫ লাখ কোটি রুপির বেশি বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ছোট ও মাঝারি কোম্পানিগুলোর পাশাপাশি বড় কোম্পানিগুলোর শেয়ারেরও পতন ঘটেছে সোমবার। প্রায় সব ধরনের শেয়ারের দামই পড়েছে। সেই তালিকায় আছে বাজাজ ফিন্যান্স, জেএসডব্লিউ স্টিল, টেক মহিন্দ্রা, টাটা স্টিল ও উইপ্রোর মতো কোম্পানি। তবে এনটিপিসি, সান ফার্মা, ভারতী এয়ারটেল, আইএসআইএসআই ব্যাংক, ইন্ডাসইন্ড ব্যাংকের মতো কিছু কোম্পানির শেয়ার দর পড়েনি।
বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশের দাবি, দুর্বল বিশ্ব বাজারের ধাক্কায় ভারতের শেয়ারবাজার শক্তি হারিয়েছে। তার ওপর সোম থেকে শুক্রবার বিদেশি বিনিয়োগকারীরা ভারতে ১২ হাজার ৫৪৩ দশমিক ৬১ কোটি রুপির শেয়ার বিক্রি করেছেন। সে কারণেই এই পতন। তবে অন্য অংশের মতে, অস্বাভাবিক দ্রুতগতিতে সূচক ৬১ হাজার পেরোনোর পর বাজারে এই সংশোধন হওয়ারই ছিল। এতে নতুন বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
তবে নতুন বছরের শুরুতে, অর্থাৎ জানুয়ারি মাসের শুরুতে বাজার এতটা বেহাল ছিল না। বছরের প্রথম দুই দিনে সেনসেক্স উঠেছে প্রায় ১ হাজার ৬০০ পয়েন্ট। তখন বাজার বিশ্লেষকেরা বলেছিলেন, করোনার নতুন ধরন যে অতটা বিধ্বংসী হবে না, সে সম্পর্কে আপাতত আশ্বস্ত হয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ফিরতে শুরু করেছিল বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ। রপ্তানি পৌঁছেছিল রেকর্ড উচ্চতায়। সেই সঙ্গে ছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্ব বাজারের উত্থান। এসব কারণে তখন সূচকের গতি বাড়ে।
সিএমআইইর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিসেম্বর মাসে ভারতে বেকারত্বের হার বেড়েছে এবং তা অর্থনীতির কোনো কোনো ক্ষেত্রে ধাক্কার ইঙ্গিত। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই বিনিয়োগকারীরা ভবিষ্যতে বাজারে পা রাখার আগে সতর্কতা অবলম্বন করবেন।
এদিকে চলতি বছর ভারতের শেয়ারবাজারে নতুন অনেকগুলো কোম্পানির আইপিও আসতে যাচ্ছে। বাজারের সাময়িক দুরবস্থার কারণে আইপিও আসার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করবে না বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।