ভারতের বাংলাদেশ নীতি বদলাতে হবে

ড. এ কে এম মাকসুদুল হক

আমাদের স্বাধীনতা, ঐতিহ্য-ইতিহাস, সংস্কৃতি, রাজনীতি, ব্যবসায়-বাণিজ্য ইত্যাদি সব কিছুতেই ভারত এমনভাবে জড়িয়ে রয়েছে যে, আমরা প্রাকৃতিকভাবেই নিকটতম হয়ে রয়েছি। কিন্তু স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হলেও দু’দেশ স্বাধীনতা, স্বকীয়তা, নিরাপত্তা ও মান-সম্মান নিয়ে একই সমতলে অবস্থান করছে কি না সেটাই প্রশ্ন। আন্তঃরাষ্ট্রীয় স্বার্থের ক্ষেত্রে ভারত কি বাংলাদেশকে তার প্রাপ্য সম্মান ও মর্যাদা দিতে পারছে। কূটনৈতিক ভাষায় তাদের বাংলাদেশ নীতি যাই হোক, বাস্তবে আমরা কী দেখতে পাচ্ছি এবং কী অভিজ্ঞতা অর্জন করছি?

দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সম্পর্কের হিসাব নিতে গেলে প্রথমেই আসে দৃষ্টিভঙ্গিগত বিষয়। বাংলাদেশের প্রতি ভারতের দৃষ্টিভঙ্গির বাস্তবতা আমরা দেখতে পাই আমাদের স্বাধীনতার অব্যবহিত পর থেকেই। তাদের ধারণা, ভারত আমাদের দেশকে স্বাধীন করে দিয়েছে তাই আমরা অনাদিকাল পর্যন্ত তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতায় নতজানু হয়ে থাকব। অথচ ভারতীয় সেনাদের অভিযান আমাদের স্বার্থের অনুকূল না থাকলে কোনো দিনও যে পাকিস্তানিরা পরাজিত হতো না সেটা তারা কখনো বিবেচনায় নেয় না। কাজেই আমাদের মুক্তিযুদ্ধের একতরফা কৃতিত্ব নিয়ে আধিপত্য বজায় রাখতে চায় তারা। এটা পরিষ্কার হয়েছে তাদের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যে যিনি বাংলাদেশী অভিবাসীদেরকে উঁইপোকার সাথে তুলনা করেছেন (আলজাজিরা: ২৪/০৯/২০২৪)! আসামে যুগ যুগ ধরে বসবাস করা বাংলাভাষী নাগরিকদের তারা বাংলাদেশী বহিরাগত হিসেবে চিহ্নিত করে পুশ ইন করার জন্য ‘নাগরিকপঞ্জি’ নামের আইন তৈরি করেছে। স্বাধীনতার পরপরই পঁচিশ সালা চুক্তি করে আমাদেরকে তাদেরই আশ্রিত রাষ্ট্রে পরিণত করার চেষ্টা করেছিল। এভাবে স্পষ্টতই দৃশ্যমান যে, প্রতিবেশীর সাথে পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারত আমাদের অধিকার ও সম্মানবোধ বারবার পদদলিত করেছে। এমনকি সম্প্রতি ভারত সরকারের জিআই জার্নাল নং-১৭৮ এ দাবি করা হয়েছে টাঙ্গাইল শাড়ির ‘জিআই’ ভারতের! এসব ছাড়াও আমাদের সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু হওয়া সত্ত্বেও ভারত রোহিঙ্গা সমস্যায় আমাদেরকে সাহায্য করতে এগিয়ে না এসে শুধু ‘লিপ সার্ভিস’ দিয়ে যাচ্ছে!

নিরাপত্তা সম্পর্ক
বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের নিরাপত্তা ধারণা অত্যন্ত সংবেদনশীল। তাদের বাংলাদেশ নীতির ধারণা মূলত নিরাপত্তা ইস্যুকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয় বলে অনেকেই মনে করেন। তাদের ধারণা হয়তো বা বাংলাদেশের সাধারণ মুসলমানরা ভারতের ডেমোগ্রাফি পরিবর্তন করে একসময় তাদের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে উঠতে পারে। সেই সাথে তারা বাংলাদেশের ইসলাম ধর্মভিত্তিক রাজনীতিকে তাদের নিরাপত্তার হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করেছে বলে মনে হয়। ভারতের প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং স্পষ্ট বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ২৫ শতাংশ লোক জামায়াতে ইসলামীর সদস্য এবং তারা পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ‘আইএসআই’ দ্বারা প্রভাবিত’ (bdnews24.com, ০১/০৭/২০১১)। এসব কারণেই ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী ‘বিএসএফ’ সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকদেরও ‘Shoot on sight’ এবং ‘Shoot to kill’ নীতি অনুশীলন করে থাকে। অন্য দিকে তারা এক যুগেরও বেশি সময় ধরে আমাদের পাহাড়ের সন্ত্রাসীদের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়ে প্রশিক্ষিত করে শান্তি বাহিনী সৃষ্টির মাধ্যমে অশান্তি চাপিয়ে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বাংলাদেশীদের রক্ত ঝরাচ্ছে কয়েক দশক ধরে। সঞ্জয় হাজারিকা লিখেছেন, ‘Bangladesi Insurgents say, India is supporting themÕ (The New York Times: ১১/১৬/১৯৮৯)। পরবর্তীতে ১৯৯৭ সালে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এক ঐতিহাসিক চুক্তির মাধ্যমে সেই রক্তক্ষয়ী সন্ত্রাসের অবসান ঘটে। আমাদের স্বাধীনতার সময় ভারত আমাদের সহযোগিতা করায় আমাদের স্বাধীনতা ত্বরান্বিত হয়েছে। তবে আমাদের স্বাধীনতা তাদের দীর্ঘদিনের চাওয়া এবং স্বার্থ হাসিলের সুযোগ করে দিয়েছে; নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তারা যুগান্তকারী সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে পূর্ব সীমান্তে ভারতের লাখো সৈনিক মোতায়েন করে কোটি কোটি ডলার খরচের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেল চিরদিনের জন্য। অন্য দিকে আমরা ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নির্মূলে সাহায্য করে তাদের প্রচণ্ড মাথাব্যথার উপশম ঘটিয়েছি। ফলে তাদের দীর্ঘদিনের রক্তক্ষরণ, অস্ত্র, জনবল এবং অর্থের ক্ষয়ের অবসান ঘটেছে। এত কিছুর পরেও আমাদের বিষয়ে ভারতের মূল চিন্তা হলো নিরাপত্তা। অবশ্য তাদের এসব আশঙ্কা নিজেদের ধর্মীয় গোঁড়ামির কারণেই হয়ে থাকে। কিন্তু মুসলিম অধ্যুষিত দেশ হলেও আমাদের দেশে নেই কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। যতটুকু সংখ্যালঘু আক্রান্ত হয় তা হয় রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি এবং লুটতরাজের উদ্দেশ্যেই। ইসলাম ধর্মের সাথে এসব হাঙ্গামার কোনো সম্পর্ক নেই। কাজেই এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে যে, ভারত তাদের বাংলাদেশনীতির মর্মস্থলে রেখেছে ধর্মীয় ভিন্নতাকে।

অভ্যন্তরীণ রাজনীতি
বাংলাদেশনীতিতে ভারতের সবচেয়ে বিতর্কিত দিক হলো বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে তাদের দৃষ্টিকটু হস্তক্ষেপ। পূর্বে পর্দার অন্তরালে থেকে হস্তক্ষেপ করলেও একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে এসে ভারতকে নির্লজ্জভাবে আমাদের রাজনীতিতে সরাসরি ও প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায়। ২০১৪ সালে আমাদের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টিকে আনতে পার্টি চেয়ারম্যান জেনারেল এরশাদের সাথে ভারতের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিং বৈঠক করেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে সমর্থন ও সাহস দিয়ে একটি দলকে সহযোগিতা করে জিতিয়ে নিয়ে আসা এবং সদ্যসমাপ্ত ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খোলাখুলিভাবে সরাসরি সমর্থন দিয়ে জিতিয়ে দেয়ার প্রক্রিয়া অন্য দেশের নির্বাচনে প্রতিবেশী দেশের হস্তক্ষেপের ‘পাঠ্যপুস্তক উদাহরণ’স্বরূপ হয়ে থাকবে। এসব কার্যকলাপ মূলত দুই দেশের দুই রাষ্ট্রের বা জনগণের মধ্যে সম্পর্কের চেয়ে দুই সরকারের দুই দলের মধ্যকার সম্পর্ককেই প্রতিফলিত করেছে।

ভৌগোলিক চিত্র
ভূ-প্রাকৃতিক দিক থেকেও বাংলাদেশ ভারতের আধিপত্যবাদ বা একপক্ষীয় কর্তৃত্ববাদের শিকার। প্রথমে মাত্র ৪১ দিনের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে ফারাক্কা বাঁধ চালু করে দীর্ঘদিন পর চুক্তিতে আসা এবং চুক্তি করেও চুক্তি মোতাবেক পদ্মার পানি একতরফা প্রত্যাহার করে নেয়াটা আধিপত্যবাদেরই উদাহরণ। ২০১১ সালে তিস্তা চুক্তির কাছাকাছি এসেও একতরফাভাবে চুক্তি থেকে সরে আসাটা ছিল বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত অবমাননাকর। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার খোঁড়াযুক্তি দিয়ে এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তিস্তা চুক্তি ঝুলিয়ে রেখেছে তারা। অথচ তারা আমাদের ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহার করা শুরু করেছে চুক্তি ছাড়াই এবং পরে ২০১৯ সালে চুক্তির মাধ্যমে ফেনী নদীর পানি তারা ঠিকই নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের তিতাস নদীর প্রবাহ ভরাট করে তাদের মালামাল আমরা আমাদের বুকের ওপর দিয়ে পার করে দিয়েছি। সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ইতিহাসে এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে ভারতীয়দের চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে’ (প্রথম আলো : ০১/০২/২০২৪)। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতকে যা দিয়েছি তা ভারত সারা জীবন মনে রাখবে। অথচ আমরা নেপালে যাওয়ার জন্য বাংলাবান্ধা থেকে কয়েক কিলোমিটার করিডোরের অনুমতি পাচ্ছি না ভারতের। তাদের অবকাঠামো ব্যবহার করে নেপালে মাত্র ৫০ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ কেনার সামান্য সুযোগটুকুও দিচ্ছে না আমাদের সাথে রক্তের রাখি বন্ধনে আবদ্ধ ভারত।

আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতি
প্রকৃতপক্ষে ভারত আঞ্চলিক মোড়লের ভূমিকায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রয়াসে প্রতিটি প্রতিবেশী দেশের সাথে সম্পর্ক বিনষ্ট করেছে। সব প্রতিবেশী দেশের জনগণের বিরাগভাজন হয়েছে ভারত। আমরা দেখতে পেয়েছি ২০২১ সালে আফগানিস্তানে মার্কিন পতনের পর ভারতকেও ব্যবসা-বাণিজ্য এবং উন্নয়ন কাজ গুটিয়ে ফিরত যেতে হয়েছে। জানা যায়, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট ভিক্রমাসিংয়ের সাম্প্রতিক ভারত সফরের প্রতিফলনে স্বচ্ছতার অভাব এবং সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্ভাব্য হুমকির আশঙ্কায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে শ্রীলঙ্কায় (THE DIPLOMAT: ০২/০৮/২০২৩)। আবার সীমান্ত বিতর্ক এবং নেপালি গুর্খাদেরকে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে নিয়োগ বিতর্ক নিয়ে নেপালের সাথে ভারতের সম্পর্ক ইতিহাসের তলানিতে পৌঁছেছে (EASTASIAN FORUM: ৩১/০৭/২০২৩)। সর্বশেষ মালদ্বীপের নির্বাচনে ভারতের প্রতি গণবিদ্বেষের প্রতিফলন ঘটে এবং চীনপন্থী মুইজ্জু নির্বাচিত হয়ে আসেন। আর মুইজ্জু ক্ষমতায় এসেই দ্রুত চীন সফরে যান এবং আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ১৫ মে তারিখের মধ্যে মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা বেঁধে দেন। অথচ মালদ্বীপে ১৯৯৮ সাল থেকে মাত্র ৯০ জনের মতো ভারতীয় সৈনিক এবং দুটি হেলিকপ্টারসহ কিছু মেডিক্যাল সামগ্রী রয়েছে। নিরাপত্তা ও মেডিক্যাল সহযোগিতার নামে মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের হস্তক্ষেপের জনধারণাকে পুঁজি করে প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু ‘India Out’ স্লোগানের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মন জয় করে ফেলেন।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা বারবারই শুধু দিয়ে যাচ্ছি। এখানে ‘জয়-জয়’ পরিস্থিতির তীব্র অভাব রয়েছে। নিরাপত্তা, ব্যবসায়-বাণিজ্য, প্রাকৃতিক সম্পদ, মিডিয়া ইত্যাদি সবক্ষেত্রেই বাংলাদেশের ওপর ভারতের একতরফা আধিপত্য বিরাজমান। আমরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেও সীমান্তে আমাদের নাগরিকদের নির্বিচারে তারা হত্যা করছে। গত ২০১০ সাল থেকে ২০২৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে ১২৭৬ জন বাংলাদেশী নিহত হয়েছে এবং ১১৮৩ জন আহত হয়েছে (ডেইলি স্টার : ২৭/০৬/২০২৩)। এসব কারণে বাংলাদেশে ভারতবিরোধী স্পর্শকাতরতা দানা বেঁধে উঠছে। যার প্রতিফলন আমরা গত বিশ^কাপ ক্রিকেট ফাইনাল খেলায় ভারতের হারের পর দেখেছি। ‘বিএনপি’ও তাদের ভারত তোষণনীতির স্বপ্নভঙে জেগে ওঠার চেষ্টা করছে। বাংলাদেশের জনগণের একটি অংশ ইতোমধ্যেই ভারতের পণ্যসামগ্রী বয়কট নিয়ে কাজ করছে। সম্প্রতি আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, কিছু কিছু ভারতীয় পণ্যের বিক্রি বাংলাদেশে প্রায় শূন্যের কোটায় চলে এসেছে। গত ৩০ জানুয়ারি ভারতের মুম্বাইয়ে একটি সভায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করের উপস্থিতিতে মালদ্বীপ এবং বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে (আলজাজিরা: ০৭/০২/২০২৪)। সঠিক সরকারি কোনো হিসাব না থাকলেও গণমাধ্যমের কল্যাণে জানা যায় যে, ভারত বছরে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার আয় করে বাংলাদেশে কর্মরত ভারতীয়দের রেমিট্যান্স থেকে যা ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আয়। এখানে প্রায় ২৬ লাখ ভারতীয় বিভিন্ন সেক্টরে কর্মরত রয়েছে বলে অসমর্থিত সূত্রে জানা যায়। যেকোনো ধরনের ভারতবিরোধী সংবেদনশীলতা ভারতের এই আর্থিক অবস্থান ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন। আবার ভারত সরকার বাংলাদেশের সাথে অনেক অসম চুক্তি করেছে যেগুলোকে টেকসই করার জন্য অবশ্যই ভারতকে যত্নশীল হতে হবে।

কারণ, একটি দেশের জনগণের মতামতটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জনরায় বিপক্ষে চলে গেলে কোনো সরকারই কোনো চুক্তি নিরাপদ রাখতে পারে না। আমরা ছোট্ট দেশ হলেও মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে রক্ত সাগর পেরিয়ে আমরা এখানে এসেছি। কাজেই ভারতের বর্তমান সরকারের বাংলাদেশের প্রতি তাদের আধিপত্যবাদী নীতি পরিবর্তন করে ন্যায়ানুগ, সমতাভিত্তিক একটি সম্মানজনক নীতি-কৌশল ঠিক করা সময়ের দাবি। মুইজ্জু মালদ্বীপের তরুণদের ভোটবিপ্লবে বিজয়ী হয়েছেন। এই তরুণদেরকে তিনি ‘India Out’ স্লোগানে জাগিয়ে তুলেছিলেন। বাংলাদেশের তরুণদের মাঝেও ভারতবিরোধী স্পর্শকাতরতা জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিশ্বকাপে ভারতের পরাজয়ে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আনন্দ মিছিলে তরুণরাই শামিল হয়েছিল। এর মধ্যে যথেষ্ট ইশারা বিদ্যমান রয়েছে।

লেখক : নিরাপত্তা বিশ্লেষক
Email: [email protected]