Farhad Mazhar 30 August 2023
ভারতের কিছু কিছু সংবাদপত্রের অতিশয় নিম্ন মানের প্রতিবেদন দেখে বাংলাদেশের জনগণ আর অবাক হয় না। অনেকে বলবেন কিছু কিছু সংবাদপত্র অতিশয় নিম্নস্তরের। বিশেষ করে যখন তারা নির্লজ্জ ভাবে ক্রমাগত বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে এবং ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্য প্রপাগান্ডা চালায়। এর আগে আমরা আনন্দবাজারের ফালতু রিপোর্ট দেখেছি। এমনকি ডেইলি টেলিগ্রাফও একই রকম রিপোর্ট করেছে। অগাস্টের ২৮ তারিখে হিন্দুস্তান টাইমসও শুরু করেছে। একই কথা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হাসিনা সরকারের ওপর চাপ দিলে জামায়াত শক্তিশালী হবে। বিএনপির ঘনিষ্ঠ মিত্র জামায়াতে ইসলামির পুনরুজ্জীবন ঘটবে। সেটা ভারতের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। বিএনপি-জামাত ভারত বিরোধী এবং পাকিস্তানের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে। গত ১০ জুন ঢাকায় ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো বিশাল সমাবেশ করেছে জামায়াত। অতএব দিল্লী ভীত। তারা প্রতিবেশী দেশের প্রতি দিল্লীর নীতি বদলানোর কথা বলছে না। বরং একই ভাঙা রেকর্ড বাজাচ্ছে: জামাত ঠেকাও। ইসলামপন্থিদের দমন কর। তাদের দাবি জামায়াত শক্তিশালী করলে চরমপন্থী শক্তি উৎসাহিত হবে এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী ভারতের পূর্ব ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির জন্য হুমকির সৃষ্টি হবে। আনন্দবাজারের মতো হিন্দুস্তান টাইমসও কোন সূত্র দিল না। তারাও ‘ডিপ থ্রোট’ রহস্যের সূত্র দিয়েছে। বাংলাদেশে এইসব নিয়ে হাসাহাসি হয়। ভারতীয় পত্রপত্রিকার সম্পাদকদের এইসব বুঝতে হবে।
হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, শেখ হাসিনা, ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশে ক্ষমতায়। এবং তিনি নাকি “অভূতপূর্ব চতুর্থ মেয়াদের ওপর নজর রাখছেন”। অর্থাৎ জামায়াত ও ইসলাম্পন্থিদের ঠেকাতে হলে তাঁকে চতুর্থবারের মতো আবার দিল্লীকে ক্ষমতায় বসাতে হবে। কেন? কারন ‘প্রতিবেশী অঞ্চলে ভারতের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্রদের” মধ্যে শেখ হাসিনা একজন। কেন তিনি এত প্রিয় হিন্দুত্ববাদী শক্তির? কারন তিনি “ভারত-বিরোধী” বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলি দমন করার পাশাপাশি, উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে পণ্য পরিবহনের জন্য মূল বন্দরগুলি ব্যবহারসহ এনার্জি সেকটর এবং বাণিজ্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ভারতের সাথে সংযোগ বাড়িয়েছেন। অর্থাৎ ভারতকে অকাতরে শেখ হাসিনা দান করেছেন এবং বাংলাদেশকে ভারতের কলোনিতে পর্যবসিত করবার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছেন। অতএব কোন ভাবেই দিল্লির উচিত হবে না শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরানো। ব্লাহ ব্লাহ ব্লাহ ইত্যাদি!
চিন নিয়ে ভারতের উৎকন্ঠা আছে। সেটা দোষের নয়। সেই ক্ষেত্রে দিল্লির উচিত প্রতিবেশীর প্রতি তাদের আগ্রাসী এবং অন্যায় নীতি আমূল পালটানো। ভারতীয় গণমাধ্যমে অনেকে সে কথা বলেছেনও বটে। বাংলাদেশের জনগণ দিল্লী আর ভারতের জনগণকে সমার্থক গণ্য করে না। প্রতিবেশী রাজ্যগুলোর সঙ্গে আমরা সুসম্পর্ক চাই। আদানপ্রদান যোগাযোগ বাড়ুক। কারণ দিল্লি শুধু আমাদের শত্রু নয়, ভারতের বহুরাজ্যের বিকাশের জন্যো বাধা। কিন্তু ভারতকে সাম্প্রদায়িক হিন্দুত্ববাদী দেশে রূপান্তরিত করে দিল্লী গোড়ায় গলদ করে বসে আছে। সেই গোড়ার গলদ শোধরানোর খবর নাই। উলটা কিছু নিম্ন শ্রেণীর ভারতীয় সাংবাদিক গণমাধ্যমে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকারের পক্ষে নির্লজ্জ দালালি শুরু করেছে।
ভারতের আভ্যন্তরীণ রাজনীতি বহু ভাবে বিভক্ত। ভারতের নিজের সমস্যা বিস্তর। সেইসব সমাধানের খবর নাই। অথচ ভারত পরাশক্তি হতে চায়, ভান করে হিন্দু সভ্যতার — অথচ হিন্দু নামে কোন ধর্ম ভারতে ছিল না। নানান ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি, জাতি নিয়ে ভারত। এই বৈচিত্র্যকে আশ্রয় করেই মুঘল আমলে মুঘলদের নেতৃত্বে ভারত ‘সাম্রাজ্য’ হয়ে উঠতে পেরেছিল। স্থানীয় জনগণের ভাষা ও সংস্কৃতিকে বিপুল ভাবে উৎসাহিত করে বাংলার সুলতানরা বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশ নিশ্চিত করেছিলেন। সেটাই ছিল বাঙালির প্রথম জাগরণ মুহূর্ত, ইসলাম সেখানে দেয়াশলাইয়ের ভূমিকা পালন করেছে। ভারতের ধর্ম, ভাষা, সংস্কৃতি ও জনগোষ্ঠির বৈচিত্র্য ভারত রাজনৈতিক ভাবে ধারণ করতে সক্ষম হলে সাতচল্লিশে দেশভাগের প্রয়জনই পড়ত না। মুঘল সাম্রাজ্য এশিয়ার প্রধান শক্তিতে পরিণত হোত। কিন্তু হিন্দুত্ববাদীরা তার গোড়া শেকড়সুদ্ধ কেটে ফেলতে চায়। চিন নয়, বহু আগে এশিয়ায় ভারত পরাশক্তি হয়ে উঠত। আজ প্রতিবেশী দেশ সহ ভারত দুনিয়ায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারত। অথচ আজ বিশ্বে ভারত একটি সাম্প্রদায়িক দেশ হিশাবে পরিচিত। যে দেশে জেনোসাইড বা গণহত্যার পরিবেশ বিশ্বাবাসীকে আতংকিত করে রেখেছে। যারা জনগণের হাগামুতার ব্যবস্থা এখনও নিশ্চিত করতে পারে না তারা চন্দ্রযান পাঠিয়ে হাত্তালি দিয়ে নিজেরাই নিজেদের জোকার বানিয়ে ফেলছে। নিজ দেশের সাধারণ মানুষের চোখে ধূলা দিচ্ছে।
দ্বিতীয়ত চিনের ইতিহাস ও ভারতের ইতিহাস ভিন্ন। ভারতের জন্ম দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে দুর্বল কলোনিয়াল শাসকদের সঙ্গে দেনদরবার করে, লড়ে নয়। সশস্ত্র যুদ্ধে চিনের মতো কলোনিয়াল শক্তিকে পরাজিত করে নয়। চিনকে শুধু নিজের দেশকে পরাশক্তি মুক্ত করে ক্ষান্ত হতে হয় নি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে চিনের পুনর্গঠন করতে হয়েছে। বিপুল হতদরিদ্র গরিব ও সমাজের নীচু তলায় জনগোষ্ঠিকে চিন অর্থনৈতিক দুর্দশা থেকে টেনে তুলে চিন বিশ্বে বিস্ময় সৃষ্টি করেছে। চিনের কাছে আমাদের শেখার আছে বিস্তর। বিপরীতে ভারত ব্রিটিশ কলোনিয়াল সভ্যতার বিকৃত মফস্বলী রূপ মাত্র। আমরা কিছু শিখলে ব্রটিশদের কাছেই শিখব, বৃটিশদের ক্যারিকেচার শিখতে যাব কেন? ভারতের কাছ থেকে আমাদের শেখার বা নেবার কিছু নাই।
দিল্লী প্রতিবেশী দেশগুলোর প্রধান দুষমণ। আমাদের আগে সেটা নেপালি জনগণ বুঝেছে। ভারতের জনগণকেও বুঝতে হবে এই মফস্বলী ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিকৃত স্থানীয় সংস্করণের খোলনলচে পাল্টানোই চিনকে মোকাবিলার এক্মাত্র পথ। দিল্লী সেটা করবে না, ফলে এই উপমহাদেশ একদকে রুশ-চিন এবং বিপরীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের ন্যাটো সদস্যদের লো ইন্টেন্সিটি প্রক্সি যুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরি করছে দিল্লী। তাই জামাতে ইসলামী ও ইসলামি শক্তিকে টেনে আনছে কিছু সংবাদপত্র। নিজের আভ্যন্তরীণ সমস্যার দিকে মনোযোগ দিলে প্রতিবেশী দেশ সহ ভারত স্বমহিমায় দাঁড়াতে পারতো। কিন্তু তার কোন সম্ভাবনা আমরা ভারতে দেখি না।
বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট শক্তিকে উৎখাত ছাড়াও আমাদের কাজ আছে। ব্রাহ্মণ্যবাদ এবং বাইরে থেকে আরোপিত তথাকথিত আর্যসভ্যতার অতলে হারিয়ে যাওয়া প্রাচীন অনার্য সনাতন ধর্মের বিপুল সাংস্কৃতিক বৈচিত্র, ঐতিহ্য ও ইতিহাস থেকে আমরা বিচ্ছিন্ন নই, সেইঐতিহ্য থেকে আমাদের অনেক কিছুই শেখার আছে। আমি এর আগেও বারবার বলেছি, একত্ববাদ ‘ইসলাম’ কিম্বা সেমিটিক রিলিজিয়নের একান্ত কোন বৈশিষ্ট্য নয়। মনে রাখতে ইসলামের বৈশিষ্ট্যসূচক দিক ‘একত্ববাদ’ নয়, বরং আত্মসমর্পন। নিজেকে ‘গায়েব’-এর কাছে সমর্পন করতে শেখা। মানুষকে ভালবাসা দয়া, প্রেম, অপরের প্রতি সহানুভূতি ইত্যাদি ঐশ্বরিক গুণাবলী চর্চার মধ্য দিয়েই একটি জনগোষ্ঠি মহৎ হয়ে ওঠে, সভ্যতার নতুন ভিত্তি ও ইমারত গড়ে ওঠে। বিশ্বের জনগণ আকৃষ্ট হয়। যারা ইসলামকে জাতিবাদী ধর্মে পর্যবসিত করে অন্য ধর্মাবলম্বিদের ঘৃণা করতে শিখায়, জুলুম করতে প্ররোচিত করে, তারা বাংলাদেশের জনগণের শত্রু। তারা হিন্দুত্ববাদের দোসর। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা তাদের জবাব দিয়ে দিয়েছি। আমরা জানি এবং সচেতন যে মানুষ মৃত্যুর দ্বারা সীমিত এবং শুধু বুদ্ধি ও যুক্তির দ্বারা সত্যের দাবিও ইসলামের আন্তরিক বৈশিষ্ট নয়। ইসলাম আরব দেশে নতুন আসে নি। সৃষ্টির আদি থেকেই রয়েছে। সব জাতি বা জনগোষ্ঠির মধ্যেই পথ প্রদর্শক এসেছেন। আরবের ইসলামেরও আগে এই অঞ্চলে তৌহিদ বা একের উপাসনা ছিল। অদ্বৈতবাদ বা ‘এক’-এর উপলব্ধি ও চর্চাকে আমরা বাংলাদেশের জনগণের তৌহিদী চিন্তাচেতনার আলোকে নতুন করে পাঠ করতে পারি। নতুন করে নিজেদের জানতে পারি। তা না করে আমরা পেট্রোডোলারের দৌরাত্মে ইসলামের রাজতান্ত্রিক গণবিরোধী ব্যাখ্যাকে ‘ইসলাম’ বলে শিখি। এই অজ্ঞতা থেকে আমাদের মুক্ত হতে হবে। ভারতের সাধারণ জনগণের সঙ্গে মৈত্রীর ক্ষেত্র সজ্ঞানে চর্চা ছাড়া বাংলাদেশ দিল্লির হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লড়তে পারবে না।
বাংলাদেশের জনগণ উপমহাদেশে নতুন বার্তা নিয়ে হাজির হয়েছে। এটাই নতুন ঐতিহাসিক বাস্তবতা। মূর্খ ও অজ্ঞ হিন্দুত্ববাদী ভারতীয় সাংবাদিকদের সেটা বুঝতে হবে। যাঁরা প্রাজ্ঞ তাঁরা বাংলাদেশের জনগণের ন্যায্য উৎকন্ঠাকে আমলে নিয়ে থাকেন। দিল্লী বাংলাদেশকে দমন করতে চায়। আনন্দবাজার, ডেইলি টেলিগ্রাফ ও হিন্দুস্তান টাইমসের রিপোর্টগুলো সেটাই জানান দেয়।। দিল্লির এই নীতি ভুল নীতি।
বাংলাদেশের সঙ্গে হিন্দুত্ববাদী ভারতের দ্বন্দ্ব মৌলিক – এটা ভারতের গণতান্ত্রিক জনগণকেও বুঝতে হবে। এর মীমাংসা বাংলাদেশের জনগণ একা করবে না, ভারতের হিন্দুত্ববাদ বিরোধী গণরাজনৈতিক ধারাগুলোকেও করতে হবে। ফ্যাসিস্ট শাসক ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ব্যবস্থার পক্ষে ওকালতির কোন সুযোগ নাই। জামাতে ইসলামি বা ইসলামের জুজু দেখানো অতিশয় হাস্যকর ব্যাপার।
আবারও বলি, হিন্দুত্ববাদী দিল্লী শুধু বাংলাদেশ বা ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলোর নয়, ভারতের জনগণেরও দুষমণ। অতএব দিল্লির আগ্রাসী ও হিন্দুত্ববাদী নীতির পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের ভাবতে হয় চিন-রাশিয়া নাকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ন্যাটো জোটভূক্ত পাশ্চাত্য ইউরোপ? – কে আমাদের মিত্র, কে আমাদের শত্রু ? – দিল্লির দুষমনির জন্য আমাদের জন্য সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক জিজ্ঞাসা হয়ে উঠেছে। লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই সেটা ঠিক হবে। এখানে দিল্লির চশমা পরে বাংলাদেশকে বিচার করার কোন সুযোগ নাই।
বলা বাহুল্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্যাংকশান এবং ফ্যাসিস্ট শক্তিকে নাস্তানাবুদ করার মার্কিন নীতি আমাদের এই সময় খুবই কাজে লেগেছে, লাগছে এবং লাগবে। এটা আমাদের কথা বলার সামর্থ দেয়, মত প্রকাশের স্বাধীনতা দেয়, আমরা নিশ্বাস নিতে পারি। বাংলাদেশের ফ্যাসিস্ট সরকারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রর চাপে রাখা আমাদের জন্য অতিশয় জরুরি। অতএব দিল্লি ওয়াশিংটনকে কিসব ছাইপাশ ছাতু বলল বা কি বলল না তাতে কিছুই আসে যায় না।
চরম সাম্প্রদায়িক হিন্দু সভ্যতা এবং হিন্দুরাষ্ট্র বাংলাদেশের অস্তিত্বের জন্য হুমকি। কারন হাজার বছর ধরে এই দেশের দলিত, নিম্নবর্ণ, নমঃশূদ্রের লড়াই-সংগ্রামের ফল এই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। আমাদের পূর্বপুরুষরা ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন ব্রাহ্মণ্যবাদ ও বর্ণাশ্রম প্রথা থেকে মুক্তি পাবার জন্য। এখন টিকে থাকার জন্য হিন্দুত্ববাদের বিরুদ্ধে লড়তে হবে আমাদের যেন উপমহাদেশের দলিত, শূদ্র ও নিপীড়িত জাতিগোষ্ঠির মুক্তি সংগ্রামে আমরা নেতৃত্ব দিতে পারি। চিনকে ঠেকাতে হলে ভারতের নিজেকে বদলাতে হবে। আনন্দবাজার, ডেইলি টেলিগ্রাফ কিম্বা হিন্দুস্তান টাইমসের প্রপাগান্ডায় কাজ হবে না।
Sourced from Farhad Mazhar’s Facebook entry