বেক্সিমকোর ঋণ বেড়ে ৬ হাজার কোটি টাকা

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বেক্সিমকো লিমিটেড ও তার সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর বিদায়ী অর্থবছরে ৩৭২ কোটি টাকার বেশি ঋণ বেড়েছে। এতে করে প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে এই ঋণ নেয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ২০২২-২৩ হিসাব বছরের বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

এতে দেখা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে বেক্সিমকোর স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি ঋণের স্থিতি ছিল ৫ হাজার ৯৫৬ কোটি ৭৮ টাকা। যদিও ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে ঋণের স্থিতি ছিল ৫ হাজার ৫৮৪ কোটি আট লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে প্রতিষ্ঠানটির ঋণ বেড়েছে ৩৭২ কোটি ৭০ লাখ টাকা বা ৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ।

গত অর্থবছর শেষে বেক্সিমকো দীর্ঘমেয়াদি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে চার হাজার ৫৮৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে এই ঋণের স্থিতি ছিল ৩ হাজার ২৩৮ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ বেড়েছে ১ হাজার ৩৪৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা বা ৪১ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এসব দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ ১২ বছর পর্যন্ত সময় পাবে কোম্পানিটি।

দীর্ঘমেয়াদি ৪ হাজার ৫৮৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার ঋণ রয়েছে ১২টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে। প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত অর্থবছর শেষে বেক্সিমকোর সোনালী ব্যাংকে ঋণ স্থিতি ছিল ১ হাজার ৩০৯ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, রূপালীতে ৮৬৬ কোটি ৯৮ লাখ, জনতায় ৭২১ কোটি ৬০ লাখ, অগ্রণীতে ৪১৯ কোটি ৯১ লাখ, ন্যাশনাল ব্যাংকে ১৪৯ কোটি ৭৮ লাখ, এক্সিম ব্যাংকে ৩২৩ কোটি ১০ লাখ, এবি ব্যাংকে ১৫১ কোটি ৬৩ লাখ এবং ইউসিবি ব্যাংকে ৩০৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফিনিক্স ফাইন্যান্সে সাত কোটি চার লাখ টাকা, বিআইএফএফএলে ৮৬ কোটি ২৬ লাখ টাকা। আর ডাচ বহুজাতিক ব্যাংক আইএনজি ব্যাংকে ২৪২ কোটি ৫৭ লাখ টাকা ঋণ রয়েছে।

এর বাইরে চলতি অর্থবছর বেক্সিমকোকে বেশকিছু দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পরিশোধ করা হবে। গত অর্থবছর শেষে তার স্থিতি দাঁড়ায় ৭৩৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা, যা তার আগের অর্থবছর (২০২১-২২) ছিল ১ হাজার ৮৮০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে এ ঋণ কমেছে ১ হাজার ১৪৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা। ৭৩৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা ঋণের গত অর্থবছর শেষে সোনালী ব্যাংকে স্থিতি ছিল ২২৫

কোটি ৬০ লাখ, রূপালীতে ১২৬ কোটি ৮২ লাখ, জনতায় ১১৪ কোটি ৪৬ লাখ, অগ্রণীতে ৩১ কোটি চার লাখ, ন্যাশনাল ব্যাংকে ২৬ কোটি দুই লাখ, এক্সিম ব্যাংকে ৬৪ কোটি ৮৭ লাখ, এবি ব্যাংকে ৩৬ কোটি ৪৯ লাখ এবং ইউসিবি ব্যাংকে ৫৯ লাখ ৬১ লাখ টাকা। এছাড়া আর্থিক প্রতিষ্ঠান ফিনিক্স ফাইন্যান্সের ২২ কোটি পাঁচ লাখ টাকা, বিআইএফএফএলের ৯ কোটি ৬৪ লাখ এবং বহুজাতিক আইএনজি ব্যাংকের ২০ কোটি টাকা ঋণ চলতি অর্থবছর শোধ করতে হবে।

প্রতিবেদন বিশ্লষণে দেখা যায়, বিদায়ী অর্থবছর প্রতিষ্ঠানটির স্বল্পমেয়াদি ঋণ বেড়েছে ১৭০ কোটি ২৭ লাখ টাকা বা ৩৬ দশমিক ৬২ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে বেক্সিমকোর স্বল্পমেয়াদি ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৬৩৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা, যা ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে ছিল ৪৬৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। প্রতিষ্ঠানটির স্বল্পমেয়াদি ঋণের মধ্যে গত জুন শেষে জনতা ব্যাংকে স্থিতি ছিল ৩৯৫ কোটি ৬৫ লাখ, এক্সিম ব্যাংকে ১৬৪ কোটি ৯২ লাখ এবং সোনালী ব্যাংকে ৭১ কোটি আট লাখ টাকা।

শেয়ার বিজ