- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৫ জুলাই ২০২৩, ২২:৫৬, আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৩, ২৩:১৪
বৃষ্টি আইনে জয় পেল আফগানিস্তান। দ্রুত দুই উইকেট তুলে নিয়ে খানিকটা সম্ভাবনা তৈরি করেছিল বাংলাদেশ। যদিও তার জন্য করতে হতো অস্বাভাবিক কিছু৷ তবে ছোটখাটো সেই সব সমীকরণ আর সম্ভাবনা দূরে ঠেলে দেয় বৃষ্টি। বৃষ্টি আইনে আগেই বাংলাদেশের চেয়ে ১৭ রানে এগিয়ে ছিল আফগানিস্তান। পরবর্তীতে নির্ধারিত সময় ১০টা ৩৫ মিনিটে খেলা শুরু না হওয়ায় ওই রানের ব্যবধানেই সফরকারীরা জয় পায়। বাংলাদেশকে প্রথম ওয়ানডেতে হারিয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেছে আফগানিস্তান।
এর আগে অবশ্য প্রত্যাশিত শুরু পেয়েছিল তারা। ১৬৫ রানের সহজ লক্ষ্য টপকাতে ধীরে সুস্থে খেলাতেই মন দেয় তারা। সাবধানে এগিয়ে যেতে থাকে লক্ষ্যে। তবে বাধা হয়ে দাঁড়ান সাকিব আল হাসান। উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তিনি। ১৬তম ওভারে দলীয় ৫৪ রানে রাহমানুল্লাহ গুরবাজকে ফিরিয়ে এনে দেন প্রথম উপলক্ষ। তার ব্যাটে আসে ৪৫ বলে ২২ রান।
গুরবাজ ফিরলে ভাঙ্গে ইবরাহিম জাদরানের সাথে তার ৯৫ বলে ৫৪ রানের জুটি। দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পেতে অবশ্য বেশি দেরি করতে হয়নি, আর ১৬ রান যোগ করতেই দ্বিতীয় উপলক্ষ পায় বাংলাদেশ। এবার উপলক্ষ এনে দেন তাসকিন। তার অফ স্টাম্পের বাইরের এক ডেলিভারিতে খোঁচা দিয়ে ফেরেন রহমত শাহ। ১৪ বলে ৮ রান করেন তিনি।
তবে তখনো একপ্রান্ত আগলে খেলতে থাকেন ইবরাহীম। অধিনায়ক হাশমাতুল্লাহ শাহিদিকে নিয়ে লক্ষ্যপানে এগিয়ে যেতে থাকেন তিনি। এ সময় ম্যাচে তৃতীয়বারের মতো বাগড়া দেয় বৃষ্টি। ২১.৪ ওভারে বন্ধ হয়ে যায় খেলা। আফগানিস্তানের সংগ্রহ তখন ২ উইকেটে ৮৩ রান। আর বৃষ্টি না থামায় এই রানেই জিতে যায় আফগানিস্তান। বৃষ্টি আইনে ১৭ রানে হারিয়ে দেয় বাংলাদেশকে।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে যেন ঘোলা জলে হাবুডুবু খায় বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে দাঁড়াতে পারেনি স্বাগতিকরা। ব্যতিক্রম শুধু এক তাওহীদ হৃদয়। তার অর্ধশতকে ভর করে বাংলাদেশের ইনিংস থামে ৯ উইকেটে ১৬৯ রানে। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৯ বলে ৫১ রান করে হৃদয়।
দলের পক্ষে একাই লড়াই করেন হৃদয়। একাদশের সবচেয়ে তরুণ ক্রিকেটার হয়েও আফগান বোলারদের বেশ ভালোভাবেই সামলান তিনি। সাকিব-মুশফিকের মতো অভিজ্ঞরা তো বটেই, পারেনি আফিফ, মিরাজও তাকে সঙ্গ দিতে পারেননি। দলের নবম উইকেট হয়ে যখন সাজঘরে ফেরেন, ততক্ষণে তুলে নেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় অর্ধশতক।
চট্টগ্রামে অবশ্য আজ বেশ দেখে শুনেই খেলছিল দলের দুই ওপেনার। ফলে প্রথম ৬ ওভারে বাউন্ডারি এসেছিল মোটে একটি। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ফের ফারুকির শিকার তামিম। এই নিয়ে চার ইনিংসে চারবার ফারুকির কাছে পরাস্ত হলেন এই ওপেনার।
৬.৫ ওভারে ৩০ রানে ভাঙে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি। তামিম ফিরেন ২১ বলে ১৩ রান করে। ইনিংস বড় করতে ব্যর্থ হন লিটন দাসও। যেই না হাত খুলে বাড়াতে শুরু করলেন রানের গতি, তখনই থামতে হলো তাকে। থামিয়েছেন মুজিবুর রহমান। তুলে মারতে গিয়ে রহমত শাহকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ৩৫ বলে ২৬ রান করে। পরের ওভারেই শান্তকে তুলে নেন মোহাম্মদ নাবি। দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্যাটার আউট হন ১৬ বলে ১২ রানে করে। ৭২ রানে ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
দলের বিপদে হাল ধরতে পারেননি অভিজ্ঞরা। একেবারেই সাবলীল ছিলেন না সাকিব। যেন নিজেকে হারিয়ে খুঁজছিলেন। একটি বলও পারেননি স্বাচ্ছন্দ্যে খেলতে। ৩৮ বল থেকে মোটে ১৫ রান করেন তিনি। মাত্র ৩৯.৪৭ স্ট্রাইকরেট তার স্বাচ্ছন্দ্যহীনতার প্রমাণ বহন করে। এছাড়া ৬ ওভারের বেশি বল খেলেও একটা বাউন্ডারি হাঁকাতে পারেননি সাকিব।
১০৯ রানে সাকিবের বিদায়ের পর মাঠে আসেন মুশফিক। তবে মিস্টার ডিপেন্ডেবল তকমাটার মূল্য দিতে পারেননি তিনি। দারুণ ছন্দে থাকা এই ব্যাটার ফেরেন ৩ বলে ১ রান করে। মুশফিকের স্ট্যাম্প ভাঙেন রাশিদ খান। দলীয় সংগ্রহ তখন ১১২ রানে ৫ উইকেট।
প্রত্যাবর্তন রাঙাতে পারেনি আফিফ হোসেনও। নিজেকে প্রমাণের সুযোগ পেয়েও ব্যর্থ তিনি। ফেরেন রাশিদ খানের শিকার হয়ে ৮ বলে ৪ রান করে।
মিরাজও পারেনি এদিন আফগান আগ্রাসন রুখতে। ফিনিশিংয়ে নেমে গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি মনে ভালো ইনিংস উপহার দিলেও আজ থামেন মোটে ৫ রানে, ফারুকীর শিকার হয়ে।
১৩৯ রানে ৭ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর সেখান থেকে তাসকিন আহমেদের ৭, হাসান মাহমুদের ৮* রান তাওহীদ হৃদয়কে সহায়তা করে। আফগানিস্তানের হয়ে ২৪ রানে ৩ উইকেট নেন ফারুকী, দুটি করে উইকেট যায় রশিদ খান ও মুজিবুর রহমানের ঝুলিতে।