ডলার বুকিং দেওয়া যাবে এক বছরের জন্য। ডলারের ভবিষ্যৎ দাম (ফরওয়ার্ড রেট) সর্বোচ্চ কত হবে তাও বেঁধে দেওয়া হয়। আগাম ডলার বুকিংয়ের এ নির্দেশনায় জনমনে শঙ্কা সৃষ্টি হয়। নানা মহলে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। এমন পরিস্থিতিতে সার্কুলার জারির একদিন পরই সংশোধন এনেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগের পরিচালক মো. সারওয়ার হোসেন বলেন, ফরওয়ার্ড রেটের সার্কুলারে আগে বলা হয়েছিল এক বছরের জন্য ডলার বুকিং দেওয়া যাবে। ডলারের দাম ‘এসএমএআরটি’ বা স্মার্ট হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত বেশি নিতে পারবে ব্যাংক।
কিন্তু ফরওয়ার্ড হয় সাধারণত এক সপ্তাহ বা সর্বোচ্চ এক মাসের জন্য। এজন্য নতুন করে নির্দেশনায় বলা হয়, শুধু আমদানিকারকরা আগাম ডলার বুকিং দিতে পারবে। এটা তিন মাসের বেশি হবে না।
তিনি জানান, এখন কোনো আমদানিকারক তিন মাসের জন্য ডলার বুকিং দিলে তিন মাস পর তাকে প্রতি ডলারে ১১৩ টাকা ৫০ পয়সার মতো গুনতে হবে। এখন আমদানি ডলারের রেট ১১০ টাকা ৫০ পয়সা।
এর আগে রোববার ভবিষ্যতের জন্য ডলার বুকিং সংক্রান্ত সার্কুলার জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেখানে আগাম ডলার নেওয়ার ক্ষেত্রে এক বছর পর সর্বোচ্চ দাম কী হবে তাও বেঁধে দেওয়া হয়। নতুন নিয়মে এক বছর পর ব্যাংক ডলারের দাম বর্তমানের চেয়ে স্মার্ট হারের সঙ্গে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ পর্যন্ত বেশি নিতে পারবে।
আগাম ডলার বুকিংয়ের নির্দেশনায় জনমনে শঙ্কা সৃষ্টি হয়। অনেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, আগামীতে ডলার সংকট আরও বাড়বে। এজন্য আগে থেকে ডলার বুকিং দিতে বলা হচ্ছে। অনেকে বলছেন, এক বছর পর ডলারের রেট ১২৩ টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
এ বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও মো. আফজাল করিম বলেন, ডলার বুকিং বিষয়ে সার্কুলার হওয়ার পর অনেকে বলছে এক বছর পর ডলার রেট হবে ১২৩ টাকা। এমন তথ্য ছড়িয়ে পড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারের ক্ষেত্রে যে ব্যাখ্যাটা দেওয়া হয়েছে তা ঠিক হয়নি। ইতোমধ্যে সংশোধন আনা হয়েছে। যেটা হবে আগাম ডলার বুকিং দিতে পারবে শুধু আমদানিকারকরা, সর্বোচ্চ তিন মাসের জন্য।
নতুন নিয়মে এক বছরের জন্য ডলার বুকিং দিয়ে রাখা যাবে। এজন্য গ্রাহককে অতিরিক্ত অর্থ দিতে হবে। এটা নির্ধারণ হবে এখন যে পদ্ধতির ওপর ভিত্তি করে ঋণের সুদহার নির্ধারিত হয়, তার মাধ্যমে। যেটা স্মার্ট বা সিক্স মান্থস মুভিং অ্যাভারেজ রেট অব ট্রেজারি বিল হিসেবে পরিচিত, সংক্ষেপে যার নাম ‘এসএমএআরটি’।
সোনালী ব্যাংকের এমডি বলেন, আগাম ডলার বুকিংয়ের ক্ষেত্রে বছরে ১২ শতাংশ অতিরিক্ত অর্থ দিতে হলে তিন মাসের জন্য দিতে হবে তিন টাকা। এখন আমদানি ডলারের রেট ১১০ টাকা ৫০ পয়সা। তিন টাকা যোগ করলে সর্বোচ্চ রেট হবে ১১৩ টাকা ৫০ পয়সা।