৮ মার্চ ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি
রাজধানীর গুলিস্তান সিদ্দিক বাজারের বিস্ফোরণের ঘটনায় কোন রকমের তদন্ত ছাড়াই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যকে দায়িত্বহীনতার পরিচয় সমালোচনা করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, ঘটনার কোন তদন্ত হয়নি এখনো। কোনো রকম তদন্ত ছাড়াই এ ধরনের বক্তব্য দিয়ে ওবায়দুল কাদেরর দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়েছেন।
বুধবার (৮ই মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকার সিদ্দিক বাজার নর্থ সাউথ রোডে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের উদ্ধার কাজ পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের এমন প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন জোনায়েদ সাকি।
ওবায়দুল কাদেরর বক্তব্য তুলে ধরে সাকি বলেন, এই বিস্ফোরণে নাকি রাজনৈতিক অভিসন্ধি আছে! এবং কোনো কোনো রাজনৈতিক বিরোধী মহল নাকি রাজনৈতিকভাবে ব্যর্থ হয়ে সহিংসতা বা এ ধরনেরর ঘটনা ঘটাচ্ছে! জোনায়েদ সাকী পশ্ন রেখে বলেন, কোনো তদন্ত ছাড়া এ ধরনের রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে তিনি (ওবায়দুল কাদের) পৌঁছে গেলেন! এর চেয়ে দায়িত্বহীন বক্তব্য আর কি হতে পারে? একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে এ ধরনের দায়িত্বহীন বক্তব্য আশা করা যায় না।
রাজনৈতিকভাবে এ ধরনের বক্তব্য খুবই বিপজ্জনক বলে উল্লেখ করে সাকি বলেন, দায়িত্বহীন বক্তব্য না দিয়ে উচিত যথাযথ তদন্তের ব্যবস্থা করা। সুরক্ষার ব্যাপারে নাগরিকদের আশ্বস্ত করা। না হলে নাগরিকরা হতাশার মধ্যে পড়বেন।
বিস্ফোরণ স্থলে উদ্ধারাভিযানেও সমন্বয়হীনতার অভিযোগ আনেন জোনায়েদ সাকি।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক বলেন, নর্থ সাউথ রোডে যে বিস্ফোরণ ঘটল, এখানে উদ্ধার কাজ সম্পন্ন করা দরকার। কিন্তু সরকারের ইঞ্জিনিয়ারিং যে বিভাগগুলো রয়েছে, যাদের দায়িত্ব ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করা দরকার ছিল। কিন্তু তারা এখন সমন্বয় করতে পারেননি, যেটা একটা ব্যর্থতা, যা সরকারের ব্যর্থতা।
তিনি বলেন, এটা তো এখন জরুরি পরিস্থিতি। সেখানে তাদের সেটা সক্ষম হওয়া দরকার ছিল। নাহলে কেন তাদেরকে জাতীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করব। যারা আহত হয়েছেন তাদের যথাযথ চিকিৎসা, ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন দরকার। সেটি সম্পর্কে সরকারের উদ্যোগ কি তা জানতে চাই।
ঢাকা এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে সাকি বলেন, এখানে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো গোটা পুরো ঢাকা শহরটাই ভীষণ রকম অনিরাপদ নগরীতে পরিণত হয়েছে। গ্যাস লাইন, সুয়ারেজ লাইন কিংবা বিদ্যুতের মতো ইউটিলটি সার্ভিসগুলোর কারণে নানা দিক দিয়ে ঢাকা একটা মৃত্যুপুরী। এসব সার্ভিস মেইটেন্যান্স, তত্ত্বাবধান, হালনাগাদ না করার কারণে এমনটি হয়েছে।
তিনি বলেন, মগবাজারেও এ রকম একটা বিস্ফোরণ ঘটেছিল। তখন যদি মগবাজারের বিস্ফোরণের সুষ্ঠু তদন্ত হতো, সুষ্ঠু উদ্যোগ নেওয়া হতো তাহলে ধরনের ঘটনা অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হতো। তদন্ত হয় কিন্তু রিপোর্ট প্রকাশ পায় না। বা তদন্তে সুপারিশ বাস্তবায়িত হয় না।
এ ধরনের বিস্ফোরণ হওয়াটা সরকারের ব্যর্থতা দাবি করে জোনায়েদ সাকি বলেন, অনেক জিনিস পুরোনো হয়েছে। নতুন ব্যবস্থাপনায় পুরোনো ভবন ভাঙা দরকার। নিরাপদ ইউটিলিটি সার্ভিস দরকার। সরকার এই জায়গায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল (৭ই মার্চ) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজার এলাকায় সাততলা একটি ভবনে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে এখন পর্যন্ত ১৭ জন নিহত ও অন্তত দেড় শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।