বেঙ্গালুরু
শেয়ারবাজারে নিজেদের প্রতিষ্ঠানের ধস সামাল দিতে পারছে না ভারতের আদানি গোষ্ঠী। এতে কমে আসছে আদানি গোষ্ঠীর সম্পদের পরিমাণ। বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় দ্রুত অবস্থান হারাচ্ছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান গৌতম আদানি। সম্পদের কারণে এশিয়ার শীর্ষ ধনীর যে তকমা জুটেছিল আজ বুধবার তা হারিয়েছেন তিনি। এই অবস্থানে উঠে এসেছেন ভারতের আরেক ধনকুবের মুকেশ আম্বানি।
ফোর্বসের রিয়েল টাইম ট্র্যাকারের দেওয়া তথ্য অনুসারে, আজ দিনের শুরুতে বিশ্বের শীর্ষ ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ৮ নম্বরে ছিলেন গৌতম আদানি। আর দিন শেষে তাঁর অবস্থান নেমে এসেছে ১৫ নম্বরে।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে গৌতম আদানির জন্য। গত সপ্তাহে এ প্রতিষ্ঠানটি আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। গৌতম আদানির মালিকানাধীন আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে স্টক জালিয়াতির অভিযোগ তোলে হিনডেনবার্গ রিসার্চ। তারা বলে, জালিয়াতির মাধ্যমে আদানি শেয়ারের দর বাড়িয়েছেন। এরপর আদানি গোষ্ঠীর তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর হু হু করে পড়তে থাকে।
ফোর্বসের দেওয়া তথ্য অনুসারে, আজ আদানির প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় এগুলোর বাজারমূল্য আরও কমেছে। সেই হিসাবে ১ হাজার ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার সম্পদ হারিয়েছেন তিনি। এতে আদানির সম্পদের পরিমাণ কমে এসেছে ৭ হাজার ৫১০ কোটি ডলারে।
অন্যদিকে ভারতের আরেক ধনকুবের মুকেশ আম্বানির সম্পদের পরিমাণ এখন ৮ হাজার ৩৭০ কোটি ডলার। এই সম্পদ নিয়ে ফোর্বসের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ৯ নম্বরে রয়েছেন রিলায়েন্স গ্রুপের চেয়ারম্যান।
এদিকে আদানি গোষ্ঠীর অন্যতম প্রতিষ্ঠান আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারের দাম আজ কমেছে ২০ শতাংশ। আদানির ব্যবসার ‘ইনকিউবেটর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এই আদানি এন্টারপ্রাইজকে। হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন প্রকাশের পর শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় এটির বাজার মূল্য কমেছে ১ হাজার ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার। এ ছাড়া আদানি ফুয়েলের শেয়ারের দর ৫ শতাংশ, আদানি টোটাল গ্যাসের ১০ শতাংশ, আদানি ট্রান্সমিশনের ৬ শতাংশ, আদানি পোর্ট অ্যান্ড স্পেশাল ইকোনমিক জোনের শেয়ারের দাম ১৫ শতাংশ কমেছে।
এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আদানি টোটাল গ্যাস যৌথমালিকাধীন প্রতিষ্ঠান। আদানির এ প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে যুক্ত ফ্রান্সের প্রতিষ্ঠান টোটাল গ্যাস। হিনডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন প্রকাশের পর তাদের বাজারমূল্য কমেছে ২ হাজার ৭০০ কোটি মার্কিন ডলার।
আদানি গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার দাম কমতে থাকার প্রসঙ্গে ভারতের মুম্বাইভিত্তিক বাজার বিশ্লেষক আমবারিশ বালিগা বলেন, হিনডেনবার্গের প্রতিবেদন প্রকাশের পর গতকাল মঙ্গলবার বেশ কিছু শেয়ার বিক্রি হওয়ায় বাজার দর খানিকটা বেড়েছিল। কিন্তু এই বাজার আবার পড়তির দিকে। আদানি গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারের দাম স্থিতিশীল হতে বেশ সময় লাগবে বলে মনে করেন তিনি।