বিশ্বজিৎ হত্যা: মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই ছয় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর, হতাশ বিশ্বজিতের পরিবার
৬ অগাস্ট ২০১৭ BBC Bangla
বাংলাদেশের হাইকোর্ট পুরনো ঢাকায় আততায়ীদের হাতে নিহত দর্জি দোকানের কর্মী বিশ্বজিৎ দাস হত্যা মামলায় ছাত্রলীগের ছয় জন নেতাকর্মীকে মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই দিয়েছে।
তবে মোট আটজন আসামীর মধ্যে বাদবাকি দু’জনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়েছে।
নিম্ন আদালতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী ঐ আটজনের প্রত্যেককেই এর আগে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছিল।
এই রায়ের পর বিশ্বজিৎ দাসের ভাই উত্তম দাস বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, “পাঁচ বছর পরে আজকে আরেকটা দু:সংবাদ এটা। আজকের দিনটাতে যে এরকম কিছু শুনতে হবে আমরা আশাই করিনি। এটাই ঠিক যে সরকার যা চাইবে তা-ই হবে। সরকার যদি চাইতো যে অন্তত বিশ্বজিৎ এর ঘটনাটা সুষ্ঠু বিচার হোক-তাহলে হতো। কোথায় আটজনের মৃত্যুদন্ড সেখানে আসলো দুইজনে। কি বলবো বলার ভাষা নাই”।
বিএনপির-নেতৃত্বাধীন ১৮-দলের অবরোধ কর্মসূচি চলার সময় গত ২০১২ সালের ৯ই ডিসেম্বর ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে দিনে দুপুরে খুন হন বিশ্বজিৎ দাস।
অনেকগুলো ক্যামেরার সামনেই ওই ঘটনা ঘটে এবং তাকে নির্মমভাবে হত্যার দৃশ্য সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে এ নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
বিব্রতকর এক পরিস্থিতির মুখে পড়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ওই হত্যার একবছর পর ঢাকার দ্রুত বিচার টাইব্যুনালে মামলার রায়ে ২১ জনের মধ্যে আট জনের মৃত্যুদণ্ড এবং ১৩ জরে যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছিল।
রোববার সেই মামলায় ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের আপিলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ দুইজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রেখে, ছয়জনকে রেহাই দেয়।
মামলা থেকে খালাস দেয়া হয় চারজনকে। যদিও আসামিদের মাত্র আটজনই আটক আছে। পলাতক ১৩জন।
তবে এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তকারী কর্মকর্তার গাফিলতি নজরে এসেছে এবং ময়নাতদন্তে আঘাতের বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য আসেনি বলে আদালত রায়ে উল্লেখ করেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নজিবুর রহমান বিবিসিকে বলেন, তদন্ত কর্মকর্তার গাফিলতির বাইরেও নিহত বিশ্বজিৎ দাসের ময়না তদন্তেও গাফিলতি রয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়। সে ব্যাপারে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছে আদালত।
হাইকোর্টের রায়ে যাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড বহাল রয়েছে তারা হলেন রফিকুল ইসলাম শাকিল এবং রাজন তালুকদার।
সাজা কমিয়ে মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে মাহফুজুর রহমান নাহিদ, এমদাদুল হক এমদাদ, জি এম রাশেদুজ্জামান শাওন এবং মীর মো. নূরে আলম লিমনকে।
আর সাইফুল ইসলাম এবং কাইয়ুম মিঞা টিপুকে মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস দেয়া হয়েছে।