বিভিন্ন জেলায় বিএনপির কর্মসূচিতে জঙ্গি আ’লীগের হামলা

 আমার দেশ
৯ এপ্রিল ২০২৩

বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের জঙ্গি সন্ত্রাসীরা

বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের জঙ্গি সন্ত্রাসীরা

নিজস্ব প্রতিনিধি

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিদ্যুৎ, গ্যাস, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বিভিন্ন জেলায় বিএনপির কর্মসূচিতে হামলা চালিয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ ও এর বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের জঙ্গি সন্ত্রাসীরা।

পটুয়াখালী:

পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরীর গাড়ির বহরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার সুবিদখালী তিন রাস্তার মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এতে তিনজন আহত হয়েছে। তাদের মধ্যে আহত মির্জাগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. নাজমুল মৃধা ও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য মো. আল-আমিনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। উপজেলা মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান হাসিনা বেগমকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।

মির্জাগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহাবুদ্দিন নান্নু জানান, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলার সুবিদখালীতে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি ছিল। কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে কাঁঠালতলী এলাকা থেকে নেতাকর্মীরা এ কর্মসূচিতে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। পথে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় একটি মাইক্রোবাস এবং বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।

এ ব্যাপারে মির্জাগঞ্জ থানার ওসি মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বিএনপির কর্মসূচি স্থলে কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে পথে কে বা কারা একটি মাইক্রোবাসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে এ ঘটনার পর উপজেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে বিএনপির কর্মসূচি পালিত হয়। উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. শাহাবুদ্দিন নান্নুর সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আলতাফ হোসেন চৌধুরী।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য মো. মাকসুদ আহমেদ বায়জিদ পান্না মিয়া, দেলোয়ার হোসেন খান নান্নু, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন ফরাজী প্রমুখ। এ কর্মসূচিতে উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

লক্ষ্মীপুর:

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক সাংবাদিকসহ ১৫ জন আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষের সময় অন্তত ১০টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৬ থেকে ৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে।

শনিবার (৮ই এপ্রিল) বিকেল ৩টার দিকে রামগঞ্জ পৌর ৫ নম্বর ওয়ার্ড সাতারপাড়া চৌরাস্তায় এসব ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- বিএনপি কর্মী আবদুর রহমান, কবির ভাট, আবদুর রহমান মিলন, শেখ কামরুল, নজরুল ইসলাম পিন্টু এবং দৈনিক কালবেলার উপজেলা প্রতিনিধি ইকবাল হোসেনসহ আরও অনেকে। আহতরা রামগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও বিএনপি নেতা ড. মামুন আহম্মেদ ও কেন্দ্রীয় যুবদলের সহ-সভাপতি ইমাম হোসেন জানান, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে অবস্থান কর্মসূচি পালনের জন্য উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা সাতারপাড়া এলাকা থেকে বাইপাস সড়কে বের হয়। অন্যদিকে, আগে থেকেই সাতারপাড়া চৌরাস্তায় অবস্থান নেয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা। সেখান থেকে তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ইট-পাটকেল ও কাঁচের বোতল নিক্ষেপ করে। সেখানে পুলিশ সদস্যরাও ছিল। তবে বিএনপি নেতাকর্মীরা পাল্টা ইট-পাটকেল ছুঁড়লে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে।

উপজেলা যুবলীগ নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া সুমন বলেন, আমাদের পূর্ব নির্ধারিত শান্তি সমাবেশ ছিল। বিএনপির নৈরাজ্য ঠেকাতে আমরা সমাবেশ ডাকি। তারা নৈরাজ্যের চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তা প্রতিহত করে।

রামগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমদাদুল হক বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৬ থেকে ৭ রাউন্ড শটগানের গুলি ছুঁড়েছে। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।

দাগনভূঞা (ফেনী):

দাগনভূঞায় বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার বেলা তিনটার দিকে বাজারের চৌমুহনী রোডে পেট্রলপাম্পের সামনে হামলার ঘটনাটি ঘটে।

উপজেলা বিএনপির সভাপতি আকবর হোসেন হামলার জন্য ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ বিএনপির বিদ্রোহী অংশকে দায়ী করেছেন।

আকবর হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিদ্যুৎ, গ্যাস, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আওয়ামী সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে বেলা তিনটার দিকে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাউদ্দিন আলাল ও তাঁর নেতৃত্বে দাগনভূঞা বাজারের চৌমুহনী রোডে অবস্থিত পেট্রলপাম্পের সামনে অবস্থান নেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে লাঠিসোঁটা হাতে আওয়ামী লীগের ২০-৩০ জন অতর্কিত হামলা চালান এবং ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। একপর্যায়ে তাঁরা অবস্থান কর্মসূচি বন্ধ করে চলে যান।

আকবর হোসেন বলেন, হামলায় তিনি নিজেসহ কমপক্ষে ২০ বিএনপি নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, এই হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগ-যুবলীগ ছাড়াও বিএনপির একটি অংশ জড়িত।

দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম জানান, বাজারের চৌমুহনী রোডে বিএনপির অবস্থান নেওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বাধা দিতে যান। এ সময় পুলিশ সবাইকে ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

তালতলী (বরগুনা):

বরগুনার তালতলীতে বিএনপির গণ-অবস্থান চলাকালে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে একপর্যায়ে বিএনপির ধাওয়ায় পিছু হটেছে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে উপজেলার মালিপাড়া সালেহিয়া মাদ্রাসা মাঠে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দুই গ্রুপের লোকজন ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ফিরোজ-উজ-জামান মামুন মোল্লা বলেন, আমরা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মালিপাড়া সালেহিয়া মাদ্রাসা মাঠে নেতা-কর্মীকে নিয়ে গণ-অবস্থান কর্মসূচি শুরু করি। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবি উল কবির জোমাদ্দারের নির্দেশে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দা ও লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। এতে আমাদের বেশ কিছু নেতা কর্মী আহত হন। পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা প্রতিহত করে পাল্টা ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পিছু হটে। এর পরে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের রেজবি উল কবিরের ঘরে উঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিএনপির সভাস্থলে হামলা চালিয়ে ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে চেয়ার ভাঙচুর করেছে তারা।’

হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রেজবি উল কবির বলেন, আমি ব্যক্তিগত কাজে ঢাকা যাইতেছি। বিএনপি-জামায়াত এ দেশে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করার জন্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। তা ছাড়া আমাদের কোনো নেতা-কর্মী হামলার সঙ্গে জড়িত না। উল্টো তারা (বিএনপি) আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, কোনো পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে কি না, তা আমার জানা নেই। আমি ভিডিওতে দেখতে পেয়েছি বিএনপির সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে।

এ বিষয়ে তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, আজকের ঘটনাটি অনাকাঙ্ক্ষিত। পুলিশ দুই পক্ষের এই ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। ঘটনার পর শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মাদারীপুর:

মাদারীপুর জেলার ডাসারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে কমপক্ষে ১৫ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

শনিবার (৮ই এপ্রিল) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার কাঁঠালতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

হামলায় আহত বিএনপি ও ছাত্রদলের ১০ জনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- কালকিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফজলু ব্যাপারী (৬০), ছাত্রদল নেতা শামীম মোল্লা (৩০), তরিকুল ইসলাম (২৮), রাসেল মাতুব্বর (৩০), রাজ্জাক সরদার (৫০), বনি আমিন (২৫), বায়েজিদ সরদার (৩২), সারাফাত ব্যাপারী (২৫), দুলাল বিশ্বাস (৩৫) ও মামুন শিকদার (৩৭)।

জানা গেছে, শনিবার (৮ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে ৩টায় ডাসার উপজেলায় ডাসার ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন তালুকদারের সভাপতিত্বে উপজেলার কাঁঠালতলা বাজার এলাকায় প্যান্ডেল করে দলটির অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়। এ সময় ডাসার বাজার আওয়ামী লীগের কার্যালয় থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখানে এসে বিএনপির কর্মসূচি বন্ধ করতে বলেন। আর এতেই ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বাকবিতণ্ডা বেধে যায়। একপর্যায়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জঙ্গি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালায়। এতে উল্লেখিতসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।

এদিকে কর্মসূচিতে জড়িত থাকার অভিযোগ এনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকন, নুরু তালুকদার, মো. শহীদুল ইসলাম, আব্দুল মান্নানসহ ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

তবে কালকিনি উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন দাবি করে জানান, তারা কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে ডাসারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। তাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ হামলা চালিয়েছে। এতে তাদের দলের অনেকেই আহত হয়েছেন।

এ বিষয়ে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসানুজ্জামান বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়েছে। বেশ কয়েকজন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।

ভোলা:

ভোলার মনপুরায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলায় উপজেলা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ সময় উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেন মনপুরা উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি সেলিম মোল্লা।

এছাড়াও পরপর দুইবার হামলা চালিয়ে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়কের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

শনিবার (৮ই এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে পুরান হাসপাতাল সংলগ্ন সড়ক দিয়ে উপজেলা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নয়ন ফিরে যাওয়ার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলায় আহতরা হলেন- উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শামসুদ্দিন মোল্লা, উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ছালাউদ্দিন প্রিন্স, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জামাল মেম্বার, যুবদলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম, স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা সেলিম, স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক মো. মিজান, যুবদল নেতা মহিউদ্দিন, ওবায়দুল, বাহার, নুরনবী, ইলিয়াস, স্বেচ্ছাসেবক দলের তুহিন, ছাত্রদলের শুভ ফরাজীর নাম পাওয়া যায়।

এদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ছালাউদ্দিন প্রিন্স ও স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা তুহিনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ভোলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি সেলিম মোল্লা জানান, শনিবার সকাল ১০টার দিকে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে আসা কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নয়নসহ নেতাকর্মীরা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শামসুদ্দিন মোল্লার বাড়িতে অবস্থান নিয়ে উপজেলা বিএনপির অফিসের সামনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনের প্রস্ততি নেয়। এই সময় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে পরপর দুইবার হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে। পরে কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল ইসলাম নয়ন চলে যাওয়ার পথে ফের হামলা চালিয়ে ২০ নেতাকর্মীকে আহত করে। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ভোলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে এ ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী লীগসহ যুবলীগ-ছাত্রলীগ জড়িত নয় বলে দাবি করেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনির।

তারা জানান, উপজেলা বিএনপি আলম-নয়ন গ্রুপে বিভক্ত। তারা নিজেদের মধ্যে মারামারি করে এখন আওয়ামী লীগের ওপর দায় চাপাতে চায়।

এ ব্যাপারে মনপুরা থানার দায়িত্বে থাকা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এস আই) লুৎফুর রহমান জানান, দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটির জেরে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ ব্যাপারে বিএনপির পক্ষ থেকে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ পাওয়া যায়নি।

নাটোর:

নাটোরে কেন্দ্রঘোষিত অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসার সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।

আজ শনিবার দুপুরে এই হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন নাটোর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন এবং তেবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আকন্দ।

বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আওয়ামী লীগ সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং সরকারের পদত্যাগসহ গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ১০ দফা দাবিতে আজ শনিবার মহানগরীর সব থানা ও সব উপজেলায় ২ ঘণ্টা যুগপৎ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।

এর অংশ হিসেবে নাটোর শহরের আলাইপুর এলাকার বিএনপি কার্যালয়ে আজ বিকেল ৩টা থেকে এই কর্মসূচি পালন করতে শুরু করেন দলের নেতাকর্মীরা।

বিএনপি নেতাকর্মীরা বলছেন, এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য বিএনপি কার্যালয়ের দিকে আসার সময় আলাইপুর নেসকো অফিসের সামনে যুবলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আবুল হোসেনের ওপর হামলা চালান। গুরুতর আহত অবস্থায় পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। এরপর চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তার পরিবারের সদস্যরা।

এই হামলার ঘটনায় তেবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাসুদ আকন্দও আহত হন বলে জানান নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজ।

নাটোর:

নাটোর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ আবুলকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বিএনপির চলমান অবস্থান কর্মসূচি ও আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ঘিরে উত্তেজনার মধ্যে শনিবার দুপুরে শহরের আলাইপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

জানা যায়, বিএনপি কার্যালয়ে আসার পথে ফয়সালের ওপর হামলা হয়। দুর্বৃত্তরা তাঁকে বেধড়ক পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে যায়। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের মধ্যে ছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, ছাত্রলীগ কর্মীরা পুলিশের সামনেই এই হামলা চালিয়েছে।

এদিকে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের সময় আলাদা সমাবেশ করেছেন সদর আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুল ও তাঁর অনুসারীরা। জেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বাশিরুর রহমান খান চৌধুরী এহিয়ার নেতৃত্বে এমপি শিমুলের অর্ধশত অনুসারী মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষে তাঁরা শহরের দিকে চলে যান।

প্রায় একই সময়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম রমজানের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা বিএনপি কার্যালয়ের অদূরে অবস্থান নিলে উত্তেজনা দেখা দেয়। তাঁরা বিএনপির নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে শান্তি সমাবেশ করে। তবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা প্রায় ঘন্টাব্যাপি অবস্থান নিলেও অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি। সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ মোর্ত্তুজা আলী বাবলু ও মালেক শেখ, পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি সৈয়দ মোস্তাক আলী মুকুল প্রমুখ।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহিন বলেন, শনিবার বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি ছিল বিকেল ৩টা থেকে। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা পুলিশের উপস্থিতিতে লাঠিসোটা নিয়ে বিএনপি অফিসের সামনে আসে। এ সময় দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা ফয়সালকে দেখে তারা তেড়ে যায়। তাকে কুপিয়ে এবং লাঠি ও হকিস্টিক দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। এর পর অফিসের অদূরে আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশ করে। দেওয়ান শাহিন অভিযোগ করে বলেন, এলাকায় বিপুল সংখ্যক পুলিশ অবস্থান করলেও তাদের সামনেই আবুলের ওপর হামলা চালানো হয়।

নেতৃবৃন্দ যা বললেন:

‘আপনারা ৭২ থেকে ৭৫ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। এরপর ২১ বছর রাস্তায় রাস্তায় ঘুরেছেন। কেউ আপনাদের ভোট দেয়নি। পরে অতীতের ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে ক্ষমতায় এসেছেন। গত ১৪ সালের নির্বাচনেই আপনাদের জেতার কোনো সম্ভাবনা ছিল না। সেই কারণেই নির্বাচন থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা তুলে দিয়েছেন। গত ১৫ বছর ধরে আপনারা যা করেছেন, তাতে আগামী ১০০ বছর মানুষ আপনাদের ভোট দেবে না।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে পূর্বঘোষিত অবস্থান কর্মসূচিতে আজ শনিবার বিকেল চারটার দিকে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে এসব কথা বলেন।

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আপনারা মানুষকে এই বোঝান, সেই বোঝান। মানুষ এখন সবই বোঝেন। মানুষকে বোকা বানানোর চেষ্টা করবেন না। মানুষ এখন আপনাদের বিরুদ্ধে খেপে গেছেন। বাজারে গেলে চাল-ডাল, পেঁয়াজ, মুরগি, ডিমসহ কোনো কিছু কিনবার উপায় নাই। আপনারা তো লুটের টাকায় চলেন। আপনারা ব্যাংক খালি করে দিয়ে চলেন। আপনারা কীভাবে বুঝবেন সাধারণ মানুষ কী অবস্থায় আছে। মানুষের অবস্থা খুব খারাপ। মানুষ এখন জেগে উঠেছে। এই মানুষ আপনাদের গদি থেকে টেনে নামাবে।’

রুমিন ফারহানা সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এ দেশে নির্বাচন হবে না। হতে দেওয়া হবে না। বিএনপিসহ বিরোধী কোনো দল নির্বাচনে যাবে না। আমরা শতভাগ নিশ্চিত আন্দোলন করে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে।’

গত ১ ফেব্রুয়ারিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া–২ (সারাইল-আশুগঞ্জ) আসনে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে বিএনপির দলছুট সংসদ সদস্য (বর্তমানে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য) উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়ার উদ্দেশে রুমিন ফারহানা বলেন, ‘দলের সঙ্গে বেইমানি করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। দেখলেন তো ভোটকেন্দ্রে কেউ যায়নি। কেন্দ্রে কুত্তা ঘুমাইছে। বিএনপির সঙ্গে বেইমানি করে কেউ ভালো করতে পারে না। অতীতেও তাই হয়েছে। এই আসন বিএনপির ঘাঁটি। খালেদা জিয়ার ঘাঁটি।’

উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে উপজেলা সদরের বড্ডাপাড়া গরু বাজারে অনুষ্ঠিত অবস্থান কর্মসূচির সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনিছুল ইসলাম ঠাকুর। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শেখ মোহাম্মদ শামিম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান লস্কর, সাংগঠনিক সম্পাদক ডি এম দুলাল, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, সদস্যসচিব নূর আলম, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জামাল লস্কর প্রমুখ। সভায় কয়েক শ নেতা–কর্মী উপস্থিত ছিলেন।

নুরুজ্জামান লস্কর বলেন, ‘বিএনপির পূর্বঘোষিত অবস্থান কর্মসূচি সরাইল উপজেলা সদরের হাসপাতাল মোড় হওয়ার কথা ছিল। পুলিশ আমাদের বাধা দিয়েছে। এ জন্য তিনবার স্থান পরিবর্তন করতে হয়েছে। আমরা প্রখর রোদে কর্মসূচি পালন করেছি। এর পরও আমাদের সভায় অনেক লোকসমাগম হয়েছে।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় অভিযোগ করে বলেছেন, এই যে তেলের দাম বৃদ্ধি, গ্যাসের দাম বেড়েছে একদম অকারণে। এই যে বিদ্যুতের ক্রাইসিস, এটা তাদের (আওয়ামী লীগ) সৃষ্ট।

এটার মধ্য দিয়ে তারা বহু কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, যার পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ কোটি টাকা। যার কারণে আজ দেশের অর্থনীতির এই অবস্থা।

শনিবার (৮ই এপ্রিল) দুপুরে আশুলিয়ার জিরাবো এলাকায় আশুলিয়া থানা বিএনপি কর্তৃক আয়োজিত সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে তিনি এ অভিযোগ করেন।

বিএনপির এই নেতা এসময় বলেন, প্রশ্ন উঠতে পারে, কেন আমরা এই রমজান মাসে কর্মসূচি দিলাম! আমরা জনগণের জন্য কর্মসূচি দিয়েছি, জনগণের পক্ষে, জনগণের দাবি জানাতে। এই রমজান মাসে কোনো জিনিসের দাম কী কমেছে? কমেনি, বরং বেড়েছে।

তিনি বলেন, এলাকায় এলাকায় চাঁদাবাজি বেড়েছে, জুলুম নির্যাতন, অত্যাচার বেড়েছে। এইযে তেলের দাম বৃদ্ধি, একদম অকারণে, গ্যাসের দাম বেড়েছে। এইযে বিদ্যুৎ এর ক্রাইসিস, এটা তাদের (আওয়ামীলীগ) সৃষ্ট। এটার মধ্য দিয়ে তারা লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, যার পরিমাণ প্রায় ১০ লক্ষ কোটি টাকা। যার কারনে আজ দেশের অর্থনীতির এই অবস্থা।

বিএনপি নেতা আরও বলেন, দুই চারটি দেশে গিয়ে বিদ্যুতের কথা বলে যে প্রকল্পগুলো তৈরি করা হয়েছে, তাতে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন হওয়ার কথা, তা যদি উৎপাদন হয়, তাহলে দেশে বিদ্যুতের ক্রাইসিস থাকতে পারে না। উল্টো তাদের বিদ্যুতের জ্বালানি কেনার পয়সা নাই।

এসময় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, প্রশাসনের যারা আছেন, তাদের বলবো, তারা দেশের প্রশাসন, তারা এই রাষ্ট্রের প্রশাসনেরই কর্মকর্তা। তারা আমাদের মতই দেশের নাগরিক। পার্থক্য হলো, আমরা রাস্তায় থাকি, তারা অফিসে কাজ করেন। সুতরাং জনগণের বিরুদ্ধে যাওয়া তাদের কাজ না। যদি প্রশাসন জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়ায় তাহলে অবস্থা কী হতে পারে? তাহলে পরিস্থিতি হতে পারে ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধের মতো।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য আরও বলেন, তখনও প্রশাসন, পাকিস্তানি পুলিশ, আমাদের বিরুদ্ধে, জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল। আমরা ৯ মাস যুদ্ধ করে তাদের প্রতিহত করেছি, দেশ স্বাধীন করেছি। আমরা দেশকে স্বাধীন করেছি ন্যায় বিচারের জন্য, আমরা দেশটা স্বাধীন করেছিলাম গণতন্ত্রের জন্য। অথচ আজ দেশে গণতন্ত্র নেই। সেই কারণে নৈতিক দায়িত্ব থেকে আজ আমরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছি, জনগণের পক্ষে গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছি। আর দুর্নীতির মাধ্যমে যারা কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে, সেই টাকা আমরা দেশে ফিরিয়ে আনতে চাই রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য।

অবস্থান কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা-১৯ আসনের সাবেক সাংসদ ডা. দেওয়ান মো. সালাহউদ্দিন বাবু, আশুলিয়া থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল গফুর মিয়া, আশুলিয়া থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শরিফুল ইসলাম প্রমুখ।

চাঁদপুর জেলা বিএনপির সভাপতি শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বলেছেন, সরকারের পতন শুরু হয়ে গেছে। ঈদের পর বৃহত্তর আন্দোলন আসছে।

সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।

শনিবার (৮ই এপ্রিল) দুপুর ২টায় শহরের জে এম সেন গুপ্ত রোডের দলীয় কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন এই বিএনপি নেতা। এসময় দল ও এর অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিদ্যুৎ, গ্যাস, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ঘোষিত ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করে চাঁদপুর সদর উপজেলা বিএনপি।

এতে শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক বলেন, গত কয়েকদিন আগে হাইমচর উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সফিককে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাংবাদিকরাও আজ নিরাপদ নয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে সরকার সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। এ আইন সংশোধন করতে হবে।

সদর থানা বিএনপির সভাপতি শাহজালাল মিশনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সলিম উল্লাহ সেলিম।

সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. জাহাঙ্গীর খানের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জসিম উদ্দিন খান বাবুল, সদর থানা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. শামছুল ইসলাম মন্টু, সহ-সভাপতি অ্যাড. জাকির হোসেন ফয়সাল, এ কেএম ফজলুল হক সেলিম, মাসুদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড. তাফাজ্জল হোসেন, শহর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল কাদের বেপারী প্রমুখ।

বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেছেন, সরকার নিজেদের ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করতে সংবিধানকে ইচ্ছামতো কাটাছেড়া করেছে। শনিবার (৮ই এপ্রিল) বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাব চত্বরে খুলনা মহানগর বিএনপি আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আওয়ামী সরকারের দুর্নীতির প্রতিবাদ এবং পূর্ব ঘোষিত ১০ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনায় এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বিএনপি।

এসময় সাবেক এই ছাত্রদল সভাপতি বলেন, সরকার বিএনপিকে নির্বাচনে চাচ্ছে, আবার সংবিধান সম্মত নির্বাচনের দাবি করছে। তারা নিজেদের ক্ষমতাকে নিরঙ্কুশ করতে সংবিধানকে ইচ্ছামতো কাটাছেড়া করেছে।

তিনি বলেন, সামরিক স্বৈরশাসকের পতনের লগ্নে ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচন সংবিধান সম্মতভাবে হয়নি, হয়েছিল সময়ের প্রয়োজনের দাবিতে। ৯৬ সালেও সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তন করতে বিএনপিকে অনেক প্রতিকূলতা মোকাবিলা করতে হয়েছে।

কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা। বক্তব্য রাখেন জেলা আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান, নগরের সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন, জেলা সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, খান জুলফিকার আলী জুলু, স ম আব্দুর রহমান, শের আলম সান্টু, আবুল কালাম জিয়া, বদরুল আনাম খান, আশরাফুল আলম খান নান্নু, মাসুদ পারভেজ বাবু, শামসুল আলম পিন্টু, শেখ সাদী, হাসানুর রশিদ চৌধুরী মিরাজ, এনামুল হক সজল প্রমুখ। কর্মসূচি সঞ্চালনা করেন চৌধুরী শফিকুল ইসলাম হোসেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমান বলেছেন, আওয়ামীলীগ সরকার ভোটারবিহীন প্রহসনের আরেকটি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতার ধারাবাহিকতা রক্ষা করার জন্য নীল নকশা প্রণয়ন করেছে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক কখনো ব্যালটে আবার কখনো ইভিএমে ভোটের ঘোষণা দিচ্ছে। নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার বহুমুখী অপতৎপরতা শুরু করেছে। কিন্তু তাতে কোন লাভ হবে না। সরকারের নীল নকশা বুমেরাং হয়ে যাবে। আমরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে চলমান গণ-আন্দোলনকে তীব্র থেকে তীব্রতর করে এই সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করবো।

শনিবার (৮ই এপ্রিল) বিকাল ৩টায় নগরের পাহাড়তলি সাগরিকা স্কয়ারের সামনে বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচীতে তিনি এ কথা বলেন।

নোমান বলেন, দেশে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও সুবিধা-ভোগীরা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। সরকার দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে দেশটাকে ফোকলা বানিয়ে ফেলেছে। দুর্নীতিবাজরা এখন পালানোর পরিকল্পনা করছে। অনেক মন্ত্রী, এমপি ইতোমধ্যে লাল পাসপোর্ট স্যারেন্ডার করেছে, আরো অনেকে করবে।

পাহাড়তলি থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জসীম উদ্দিন জিয়ার সভাপতিত্বে অবস্থান কর্মসূচীতে অন্যান্যের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শামসুল আলম, অ্যাডভোকেট মফিজুল হক ভূইয়া, কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ ম জামাল উদ্দীন, সরাইপাড়া ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি খাজা আলা উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আশরাফ খান, দক্ষিণ কাট্টলী ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সাইফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শফিউল্লাহ, মহানগর যুবদল নেতা ফজলুল হক সুমন, নুর আহমেদ গুড্ডু, কুতুব উদ্দীন, রাজু খান, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আনিসুজ্জামান পাটোয়ারী টুটুল, নুর সেলিম বাঙ্গালী, মঞ্জুর আলম ও সৈয়দ আলমগীর প্রমুখ।

এছাড়া হালিশহর ওয়াপদা মোড়ে হালিশহর থানা বিএনপি আয়োজিত পৃথক অবস্থান কর্মসূচীতে আবদুল্লাহ আল নোমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। হালিশহর থানা বিএনপির আহবায়ক মোশারফ হোসেন ডিপটির সভাপতিত্বে কর্মসূচীতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মহানগর বিএনপি নেতা কাজী বেলাল, থানা ও ওয়ার্ড বিএনপির নেতবৃন্দ।

ভোলার মনপুরায় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের হামলায় উপজেলা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ সময় উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেন মনপুরা উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি সেলিম মোল্লা।

এছাড়াও পরপর দুইবার হামলা চালিয়ে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়কের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

শনিবার (৮ই এপ্রিল) দুপুর ১২টার দিকে পুরান হাসপাতাল সংলগ্ন সড়ক দিয়ে উপজেলা বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নয়ন ফিরে যাওয়ার সময় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলায় আহতরা হলেন- উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শামসুদ্দিন মোল্লা, উপজেলা বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ছালাউদ্দিন প্রিন্স, ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জামাল মেম্বার, যুবদলের সদস্য সচিব আবদুর রহিম, স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা সেলিম, স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক মো. মিজান, যুবদল নেতা মহিউদ্দিন, ওবায়দুল, বাহার, নুরনবী, ইলিয়াস, স্বেচ্ছাসেবক দলের তুহিন, ছাত্রদলের শুভ ফরাজীর নাম পাওয়া যায়।

এদের মধ্যে উপজেলা বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ছালাউদ্দিন প্রিন্স ও স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা তুহিনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ভোলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

উপজেলা বিএনপির সহ সভাপতি সেলিম মোল্লা জানান, শনিবার সকাল ১০টার দিকে অবস্থান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে আসা কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ সভাপতি ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নয়নসহ নেতাকর্মীরা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শামসুদ্দিন মোল্লার বাড়িতে অবস্থান নিয়ে উপজেলা বিএনপির অফিসের সামনে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি পালনের প্রস্ততি নেয়। এই সময় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা নিয়ে পরপর দুইবার হামলা চালিয়ে বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে। পরে কেন্দ্রীয় নেতা নুরুল ইসলাম নয়ন চলে যাওয়ার পথে ফের হামলা চালিয়ে ২০ নেতাকর্মীকে আহত করে। এদের মধ্যে দুইজনের অবস্