দেশের বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো থেকে কেনা বিদ্যুতের বিল পরিশোধ করতে পারছে না বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি)। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে এখন পর্যন্ত আট মাসের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে। বিদ্যুৎ ক্রয় বাবদ এ বকেয়ার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। বিল না পাওয়ায় এরই মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর অর্থ সংকট তীব্র হয়ে উঠেছে। শীর্ষস্থানীয় বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোও এখন কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছে। আবার বিদ্যুৎ কেন্দ্রে বিনিয়োগ করা ব্যাংকগুলোর ঋণের কিস্তিও মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। এতে দেশের অনেক বিদ্যুৎ কোম্পানিই খেলাপির ঝুঁকিতে রয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে।
বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশন (বিআইপিপিএ) সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিদ্যুৎ ক্রয় বাবদ বেসরকারি কোম্পানিগুলোর বিপিডিবির কাছে আট মাসের বকেয়া পাওনা রয়েছে। গত এপ্রিল থেকে এ বকেয়া পাওনা পরিশোধ হয়নি। প্রতি মাসে যে পরিমাণ বিপিডিবিতে জমা পড়ছে তার ২৫-৩০ শতাংশ বিল পাচ্ছে বলে দাবি আইপিপি উদ্যোক্তাদের।
বিপুল পরিমাণ বকেয়া পাওনার বিষয়টি অস্বীকার করেননি বিপিডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, অর্থ বিভাগ থেকে চাহিদা অনুযায়ী টাকা পাওয়া যাচ্ছে না। অন্যদিকে ডলারের সংকট রয়েছে। যে কারণে এ বকেয়া আরো বেড়ে যাচ্ছে।
বিপিডিবির নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ ক্রয় বাবদ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যে পরিমাণ টাকা পাবে তা ৩০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি। প্রতি মাসে প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানকে কয়েক ধাপে বিল পরিশোধ করা হচ্ছে। তবে তা সীমিত পরিসরে।’
গত ৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে এক প্রশ্ন-উত্তর পর্বে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানান, বর্তমানে দেশে বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানি (আইপিপি) রয়েছে ৮২টি।
আইপিপিগুলোর বকেয়া পাওনাসংক্রান্ত জটিলতা প্রায় দুই বছর ধরে চলছে। বিভিন্ন সময়ে বকেয়া পরিশোধে সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেয়া হলেও তাতে খুব বেশি গতি আসেনি বলে জানান আইপিপি উদ্যোক্তারা। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে বকেয়া পরিশোধ ও আইপিপিগুলোর অবস্থা তুলে ধরলেও তার কোনো সমাধান পাচ্ছেন না তারা।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ইনডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের (বিআইপিপি) সভাপতি ফয়সাল খান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘আইপিপিগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। এ পরিস্থিতি আরো দীর্ঘায়িত হলে এবং বিপিডিবির বিদ্যুৎ চাহিদা বাড়লে তার প্রভাব (লোডশেডিং) পড়বে। দেরিতে বিল পরিশোধ এবং টাকার অবমূল্যায়নজনিত ক্ষতি সামাল দেয়ার মতো সক্ষমতা আইপিপিগুলো হারিয়ে ফেলেছে।’
দেশের বিদ্যুৎ সক্ষমতা বাড়াতে ও সরবরাহ দিতে আইপিপিগুলো বিপুল অংকের বিনিয়োগ করেছে বিদ্যুৎ খাতে। বিদ্যুৎ বিক্রি বাবদ অর্থ দিয়ে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ, বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনাসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহ করার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে বকেয়া পড়ে থাকায় আইপিপিগুলো এখন ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না। বিষয়টি বিনিয়োগকারী ব্যাংকগুলোও স্বীকার করেছে। তারা এখন বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে ঋণ দিয়ে বিপাকে রয়েছে বলে জানা গেছে।
দেশের অর্ধডজন ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী বণিক বার্তাকে জানিয়েছেন, বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোকে দেয়া ঋণ নিয়ে তাদের উদ্বেগ বাড়ছে। সরকার বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর বিল পরিশোধ করতে পারছে না। এ কারণে ব্যাংকের ওভারডিউ (মেয়াদোত্তীর্ণ) ঋণের পরিমাণ বাড়ছে। এতদিন বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর চার-পাঁচ মাসের বিল বকেয়া ছিল। এখন বকেয়া এ বিলের পরিমাণ বাড়ছে। কোনো কোনো বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৮-১০ মাসের বিলও বকেয়া পড়েছে। এভাবে চলতে থাকলে অর্থ সংকটে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। এতে ব্যাংকের ঋণও খেলাপির মুখে পড়বে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে দেশের প্রথম প্রজন্মের একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান, অপেক্ষাকৃত নিরাপদ হওয়ায় আমরা বিদ্যুৎ খাতের অনেক কোম্পানিকে ঋণ দিয়েছিলাম। এখন দেখা যাচ্ছে, এসব ঋণ খেলাপির খাতায় ওঠার ঝুঁকিতে পড়েছে। ব্যাংকের স্বার্থেই ঋণগুলো খেলাপি না করে নিয়মিত দেখানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু বকেয়ার পরিমাণ যে জায়গায় পৌঁছেছে, তাতে আর বেশিদিন এসব ঋণ নিয়মিত দেখানোর সুযোগ থাকবে না। সরকারের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিল না পাওয়ায় অনেক কোম্পানির কর্মীদের বেতন-ভাতা পরিশোধও অনিশ্চিত হয়ে গেছে।
শুধু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিলই নয়, বরং সরকারের সব ধরনের অর্থ পরিশোধই বিলম্বিত হচ্ছে বলে জানান মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহী সৈয়দ মাহবুবুর রহমান। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বিল, নগদ প্রণোদনা, ঠিকাদারদের বিলসহ সব ধরনের বিল পরিশোধই বিলম্ব হচ্ছে। সরকারের পেমেন্ট বিলম্বের কারণে এসব খাত থেকে ব্যাংকের ঋণ আদায় কমেছে। কোম্পানিগুলোর পরিচালন ব্যয়ও চাপের মুখে পড়েছে। এমনিতেই ব্যাংক খাত খেলাপি ঋণের ঝুঁকিতে আছে। এ অবস্থায় সরকারি পেমেন্টে বিলম্বের কারণে কোনো গ্রাহক খেলাপি হয়ে গেলে সেটি দুঃখজনক।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১২ হাজার ৩১৮ কোটি টাকার রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। অর্থ সংকটের কারণে সরকার এখন ট্রেজারি বিল-বন্ডের মাধ্যমে ব্যাংক খাত থেকে প্রায় ১২ শতাংশ সুদেও ঋণ নিচ্ছে।
গত দুই বছরে ডলারের বিপরীতে দেশে টাকার রেকর্ড অবমূল্যায়ন ঘটেছে। এ অবমূল্যায়নের বিরূপ প্রভাবও বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর ওপর পড়েছে। গত বছরের জানুয়ারিতেও দেশে প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৬ টাকা। ধারাবাহিকভাবে এ বিনিময় হার বেড়ে প্রতি ডলার ১১১ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। দেশের বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর তেল আমদানির ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে এ দরে ডলার কেনা যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো বলছে, ডলারের বিনিময় হারজনিত ক্ষতির কারণে দেশের বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার লোকসান হয়েছে। জ্বালানি তেলে ঋণপত্র (এলসি) খোলার সময় প্রতি ডলারের বিনিময় হার ছিল ৮৬ টাকা। সে এলসি দায় সমন্বয়ের সময় প্রতি ডলারে ১০-১৫ টাকা পর্যন্ত বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে।
দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় সারা বছর অর্ধেকের বেশি বিদ্যুৎ আসে বেসরকারি কেন্দ্রগুলো থেকে। সক্ষমতার তুলনায় বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকলেও আর্থিক ব্যয় থেকে মুক্তি নেই বিপিডিবির। বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসে থাকলেও তার কেন্দ্র ভাড়া বাবদ মোটা অংকের টাকা ব্যয় করতে হয় বিদ্যুতের ক্রেতা প্রতিষ্ঠানটিকে। ফলে বেসরকারি কেন্দ্রগুলোর দীর্ঘ সময় ধরে বকেয়া জমতে থাকায় সেটি এখন বিপুল অংকের আকার ধারণ করেছে।
বিপিডিবি ও আইপিপি-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত বিপিডিবি বকেয়া পরিশোধ করেছে। এরপর আট মাস পার হয়েছে। প্রতি মাসে কম-বেশি গড়ে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকার ওপরে বিল আসে। সেই হিসাবে এরই মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বকেয়া জমা পড়েছে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা।
বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকরা জানিয়েছেন, বকেয়া পরিশোধের বিষয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও সেটি খুব বেশি কাজে আসছে না। বিপুল অংকের বকেয়া পড়ায় এখন বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদন কোম্পানিগুলো বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালন বাবদ ব্যয়, কেন্দ্রের জ্বালানি আমদানি, ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নজনিত লোকসান এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে বের হতে বিদ্যুৎ বিভাগের স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি বিদ্যুৎ খাতে সাবসিডি থেকে বেরিয়ে আসার কথাও জানিয়েছেন তারা।
বেসরকারি বিদ্যুৎ খাতের উদ্যোক্তা ও কনফিডেন্স গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইমরান করিম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বকেয়া এখন একটি বাস্তবতা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এটার শিগগিরই কোনো সমাধান দেখি না। বকেয়ার কারণে অনেক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মালিক ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না। কেন্দ্র চালাতে অপারেশনাল ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে। অন্যদিকে টাকার অবমূল্যায়নজনিত ক্ষতি এটাকে আরো প্রকট করে তুলেছে। শুধু অবমূল্যায়নজনিত লোকসান প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। এ ব্যয় সামাল দেয়ার মতো পরিস্থিতি কোথায়?’ তিনি বলেন, ‘এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার। যেখানে বিদ্যুতে ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে এসে মূল্য সমন্বয়টা জরুরি। তাছাড়া এটার কোনো সমাধান এখন দেখা যাচ্ছে না।’
বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মতো সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোরও বিপুল অংকের বকেয়া জমেছে বিপিডিবির কাছে। এর মধ্যে দেশের বৃহৎ পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের বকেয়া পড়েছে ৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। চলতি বছরের মে মাস থেকে নভেম্বর পর্যন্ত কেন্দ্রটির বিল বকেয়া রয়েছে বলে কেন্দ্রটির পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) সূত্র নিশ্চিত করেছে। সার্বক্ষণিক চালু থাকা সাপেক্ষে বৃহৎ এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রটির অর্থের জোগান নিরবচ্ছিন্ন হওয়া জরুরি বলে মনে করেন কেন্দ্রটির শীর্ষ নির্বাহীরা।
এ বিষয়ে বিসিপিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এএম খোরশেদুল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বৃহৎ পাওয়ার প্লান্ট হিসেবে পায়রা তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সার্বক্ষণিক উৎপাদনে রয়েছে। এ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিচালনা করতে অর্থের জোগানটাও নিরবচ্ছিন্ন হওয়া জরুরি।’
দেশের পুঁজিবাজারে বর্তমানে নয়টি আইপিপি কোম্পানি তালিকাভুক্ত রয়েছে। বিপিডিবির পক্ষ থেকে দেরিতে বিল পরিশোধের কারণে কোম্পানিগুলোকে তহবিল ব্যবস্থাপনায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে বিনিয়োগ করেছিলেন উদ্যোক্তারা। প্রতি মাসেই এসব ঋণের কিস্তি সুদসহ পরিশোধ করতে হয়। কিন্তু বিপিডিবির কাছে বিল আটকে যাওয়ার কারণে ব্যাংক ঋণের কিস্তি দিতে গিয়ে অর্থ সংকটে পড়ছে আইপিপিগুলো। তার ওপর প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালন খাতেও প্রতি মাসে অর্থ ব্যয় করতে হয়। ফলে অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে পরিচালন ব্যয় মেটাতে গেলে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা যাচ্ছে না। আবার ঋণ পরিশোধ করলে পরিচালন ব্যয় মেটানোর অর্থ সংকটে পড়তে হচ্ছে। এ অবস্থায় ঋণ পরিশোধ ও পরিচালন ব্যয় মেটাতে নতুন করে ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হচ্ছে। এতে ঋণের সুদ বাবদ কোম্পানিগুলোর আর্থিক ব্যয় আরো বেড়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি সুদের হার বাড়ার কারণে এ খাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যয় আরো বেড়েছে।
নাম অপ্রকাশিত রাখার শর্তে একটি আইপিপি কোম্পানির প্রধান নির্বাহী জানান, বিল বকেয়া থাকার কারণে তারা ব্যাংকের অর্থ পরিশোধ করতে পারছেন না। এ অবস্থায় ব্যাংকের কর্মকর্তারা কোম্পানিতে এসে টাকার জন্য তাগাদা দিচ্ছেন। অন্যদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি হিসেবে তেল আমদানির জন্য নতুন করে এলসি খুলতে হবে। কিন্তু ব্যাংকের আগের পাওনা পরিশোধ না করলে তারা নতুন করে এলসি খুলতে অপারগতা জানিয়েছেন। এ অবস্থায় বকেয়া বিল, ব্যাংক ঋণ ও পরিচালন ব্যয়ের ফাঁদে পড়েছেন। এ পরিস্থিতি থেকে কবে পরিত্রাণ মিলবে সেটি বুঝতে পারছেন না।
বারাকা পাওয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ফাহিম আহমেদ চৌধুরী বণিক বার্তাকে বলেন, ‘মূলত ডলারের বিপরীতে টাকার অবমূল্যায়নের কারণে আইপিপিগুলোকে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়তে হচ্ছে। মুদ্রার বিনিময় হারজনিত ওঠানামার কারণে আমাদের বড় অংকের লোকসান দিতে হচ্ছে। এলসি খোলার সময় ডলারের দর যা ছিল, এলসির অর্থ পরিশোধের সময় এটি আরো বেড়ে যাচ্ছে। বাড়তি এ ব্যয়ের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে আমাদের মুনাফার ওপর।’
বনিক বার্তা