বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ-এর প্রতিনিধিদের দেখছি না

logo

তারিক চয়ন

১৭ এপ্রিল ২০২৩

সম্প্রতি রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে সরকারের আচরণের বিপরীতে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। গত ১৩ই এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের ১০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দ্য  ডেইলি স্টার সেন্টারে আয়োজিত এক গোলটেবিল  বৈঠকে ঘটনার সূত্রপাত। যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি’র সহায়তায় ‘শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং ট্রেড ইউনিয়নের অধিকার: আমরা কোথায় দাঁড়িয়ে?’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছিল সলিডারিটি  সেন্টার বাংলাদেশ এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাংলাদেশ কাউন্সিল (আইবিসি)। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট সকল মহলের  স্টেকহোল্ডাররা অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকলেও বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটপণ্য প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ) এবং সরকারের (যেমনঃ  শ্রম অধিদপ্তর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর) কোনো প্রতিনিধিকে ওই অনুষ্ঠানে দেখা যায় নি! এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, ‘আমি লক্ষ্য করছি যে, আজ এখানে সকল স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত হন নি। বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ এর কোনো প্রতিনিধিকে এখানে দেখতে পাচ্ছি না। সিকিউরিটি সার্ভিসের লোকজন ব্যতীত সরকারের অন্যকোনো প্রতিনিধিকেও দেখতে পাচ্ছি না।’ শুধু তাই নয়, এ ঘটনার ইঙ্গিত কি হতে পারে সেদিকে দৃষ্টিপাত করে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, এই ঘটনার মাধ্যমে কি সিগন্যাল দেয়া হয়েছে সেটা নিয়ে আমাকে ভাবতে হবে। সরকার কেন নীতিনির্ধারকদের মাধ্যমে প্রতিনিধিত্ব না করে  কেবল সিকিউরিটি সার্ভিসের মাধ্যমেই করলো।’ অন্যদিকে, বাংলাদেশে তৈরি  পোশাক খাতের শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতির জন্য উপস্থিত সবাইকে কৃতিত্ব দিয়ে মার্কিন দূত বলেন, ‘যদিও রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর তৈরি পোশাক খাতে কিছু ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে, তবে সেগুলো যথেষ্টর ধারেকাছেও নয়। বাংলাদেশ  যেহেতু এলডিসি থেকে উত্তরণের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তাই বাংলাদেশের কাছ থেকে আরও বেশি আশা করা হবে।’ ওদিকে, উক্ত অনুষ্ঠানের ঠিক পরদিনই (১৪ই এপ্রিল) যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে কেমন নির্বাচন চায় সে বিষয়ে কথা বলার এক পর্যায়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন রানা প্লাজার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চায় ইলেকশনের সময় যেন মারামারি কম হয়। তাদের দেশেও গত জানুয়ারির ৬ তারিখ কয়েকজন লোক মারা গেছে কংগ্রেসের। সে জন্য তারা চাইছে যে বাংলাদেশে একটা আদর্শ নির্বাচন করে পৃথিবীকে দেখাবে  যে আমরা খুব ভালো।

বাংলাদেশ ইজ আ ল্যান্ড অব ম্যাজিক। আমরা যা চাই, আমরা পারি। এক সময়ে রানা প্লাজার ঝামেলা হলো, এখন পৃথিবীর মধ্যে ১০টা সবচেয়ে ইকো-ফ্রেন্ডলি ফ্যাক্টরি হচ্ছে। এর ৮টিই হচ্ছে বাংলাদেশে।’ স্মরণ করা যেতে পারে যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন এর আগে যখন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন, তখন তিনি (রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর) যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে বলেছিলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশ, আন্তর্জাতিক সংস্থা, বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ, বিভিন্ন সংগঠন এই ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ে এগিয়ে আসলেও একমাত্র হাত গুটিয়ে  থেকেছে যুক্তরাষ্ট্র। উপরন্তু ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’-এর মতো দেশটি বাংলাদেশকে আঘাত হেনেছে জিএসপি সুবিধা বাতিল করে।’