নাজমা মোস্তফা
২১ আগষ্ট ২০০৮ সালে প্রথম আলোর ই পেপারে প্রকাশিত প্রতিবেদনের হেডিং ছিল “হামলায় জড়িত পাশর্^বর্তী দেশ ও আওয়ামী লীগের কতিপয় নেতা”। নারায়নগঞ্জের শামীম ওসমান ক্যানাডা থেকে ষড়যন্ত্রে থাকার প্রমাণ এসেছে। পাশর্^বর্তী একটি দেশের একটি আয়রন বডি ট্রাকের ডামি চারপাশে গ্রেনেড থ্রোয়িংএর মহড়া সম্পন্ন করে। বিশেষ ট্রেনিং দ্বারা পরবর্তী ঘটনা ঘটানোর জন্য একাধিকবার ‘রেকি’ সম্পন্ন করে। লেখাতে এরকম খবরের বিস্তারিত বিবরণ এসেছে।
২০১৭ সালের ২৩ ফ্রেব্রুয়ারীতে আবারো নতুন সংযোজন এ প্যারাটি। বিস্তারিত লেখাটিতে আছেই। ২১ আগষ্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলাকে প্রতিটি আওয়ামী লীগের বিতর্কীত বক্তা সব সময়ই এটিকে অপকর্মের ঢাল হিসাবে ব্যবহার করে। জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোতে প্রকাশিত গ্রেনেড হামলার মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী আবু বকরের জবানবন্দি এর প্রমাণ। দেশটিকে জঙ্গি প্রমাণিত করার বহু কৃত হাসিনা সরকারের অপকর্মের একটি উল্লেখযোগ্য নমুনা মাত্র। যার জন্য তড়িঘড়ি দেড় ঘন্টার নোটিশে সমাবেশ স্থান পরিবর্তন, দায়িত্ব পড়েছিল ওলেমা লীগের কাঁধে, পরিকল্পনা অনুযায়ী আবুবকরকে ডেকে আনা হয়। কারণ জঙ্গি প্রমান করতে ইসলামের সাথে যুক্ত মানুষকে দেখাতে হবে, তাহলে মানুষ গিলবে ভালো। র্যাব হেফাজতে থাকা আবুবকর সাংবাদিকদেরে এসব প্রকাশ করেন। তিনি ও হুজির আরেক সদস্য আহসান উল্লাহ কাজলসহ আরো কয়েকজনকে হামলার আগে আওয়ামী ব্যানারে জড়ো করেন। ২০০৪ সালের ২১ আগষ্টের সকালে হুজির নেতা কাজল তাকে ফোনে ঢাকায় প্রোগ্রাম আছে তাই আসতে জানান। তাই এই মাদ্রাসার শিক্ষক, ঐ দিনই ঈশা খাঁ পরিবহনে কিশোরগঞ্জ থেকে ১০ টায় রওয়ানা দিয়ে ১২টায় গুলিস্তানে পৌছান। ঢাকায় পৌছার পর হুজি নেতা কাজল তাকে খাওয়ান ও অনেকের সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর আসরের নামাজ সারেন প্রেসক্লাবে গিয়ে। সেখানে মিলিত হন ওলামা লীগের সভাপতি আখতার হোসেন বোখারী ও গাজিপুর জয়দেবপুরের ইমামসহ ৪০/৫০ জন টুপি পরিহিত লোক এর সাথে। এরা সবাই জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা এগিয়ে যাও, আমরা আছি তোমার সাথে, এসব স্লোগান দিয়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউএর দিকে যান। মাইকে আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল বক্তব্য রাখছেন। এরপরই হাসিনার বক্তব্য, এরকম সময়ে বিকট আওয়াজে বিস্ফোরণ। এর পর পরই আবু বকর দৌড়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদে গিয়ে মাগরিবের নামাজ পড়ে ফেরত কিশোরগঞ্জ চলে যান। কাজলের উৎসাহেই তিনি ওলেমা লীগে যোগ দান করেন। আবুবকরের বিরুদ্ধে বোমা ছুড়ে মারার অভিযোগ এসেছে। আসামী আবুবকরের বক্তব্য শোনার পরও কেন তবে বোখারী আসামী হন না, সেটি কোনভাবেই স্পষ্ট হয়না। তিনি বুখারীও নামাজের দোহাই দিয়ে প্রথম আলোর যোগাযোগ এড়িয়ে যান। আবুবকর জানান তাদেরে ভাড়াটে বোমারু হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে, এবং সেটি করেছেন বোখারী নিজে। এরপরও বোখারী কেন ধৃত রিমান্ডের আসামী হননা। হাসিনা হত্যার উদ্দেশ্যেই যদি এটি সাজানো হয় কোনভাবেই কেন হাসিনাকে আক্রমণ করা হলো না, বোমা ছোঁড়া হলো না, এর কারণ কি? উল্টো অনেক পরে হলেও খালেদা জিয়া ও তার পুত্র তারেককে বা চার দলীয় জোটের লোকদেরে কেন এর আসামী করে জঙ্গি নাটক সাজানোর পায়তারা চলমান রয়েছে? ছাঁ পোষা বিচারক হয়তো বিচারিক ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবেন, বিচিত্র নয়! তারপরও সমগ্র জাতি কি এ প্রশ্নগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে না? কোন সরকার যদি ধর্মকে নিয়ে এসব খেলা খেলে তবে সমগ্র মুসলিম জাতির পক্ষ থেকে এর প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তোলা দরকার। এরা শুধু দেশের শত্রুই নয় এরা বিশে^ ইসলামের বড় শত্রু পক্ষ। এরা এভাবে দুর্বল ঈমানের অধিকারী মুসলিমকে দিয়ে প্রকৃত ইসলাম ধ্বংস করতে ময়দানে নেমেছে। বাংলাদেশ নামের একটি মুসলিম প্রধান দেশকে শিকড় থেকে ধ্বংস করে দিতে এসব নষ্ট নাটক চলমান রয়েছে একটি বড় সময় থেকে। এ জাতিকে জাগতেই হবে, এর বিকল্প কিছু নেই।
সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে সব সময়ই শিষ্টের বদলে দুষ্টের কথাই মনে পড়ে সবার আগে। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ মুজিব হত্যার পর তার মন্ত্রীসভার সব সদস্যরা পরবর্তী মোশতাকের মন্ত্রী সভাতে যোগ দেন। সেদিন খোদ আওয়ামী লীগের মন্তব্য ছিল, ফেরাউন ধ্বংস হলো। এটি বলার বহুবিধ কারণ বর্তমান ছিল। সেদিনের ট্যাংকবাজরা আজ টকবাজ হয়ে ঐ দলের প্রথম সারিতে অবস্থান করে সমানেই উৎকট ব্যাঙ্গোক্তি করে চলেছেন। ইউটিউবে দেখা যায় শেখ সেলিম ও ওবায়দুল কাদের নিজ দলের অপকর্মের ফিরিস্তি স্বজ্ঞানে মেনে নিয়ে মন্তব্য রাখছেন। এসব বছর কয় থেকে আমরা দেখে অভ্যস্ত হয়ে আছি। “আওয়ামী স্ক্যান্ডাল” দিয়ে সার্চ দিলেই সব তর তর করে বেরিয়ে আসে। আওয়ামীরা অপকর্মে যে কতদুর হাত দাগাতে পারে, এর উদাহরণ শত শত চারপাশে ছড়ানো। সেদিন এক বোন বলছিল ‘আজকাল বিয়ের প্রসঙ্গে ছেলেরা কেউ আওয়ামী লীগ হলে মানুষ ধরে নেয় এর বখাটে হবার সম্ভাবনাই অতিরিক্ত। বিবেচনা পাঠকের জমা খাতাতেই থাক।
রাজনীতির যে রংবাজি খেলা চলছে সারা দেশ জুড়ে, দেশের মানুষ নীতি নৈতিকতা ভুলেই গেছে। এসব আর কোন অভিধানে জমা নেই। ধরো মারো খাও এটি হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতির ভাষা। বয়স্ক বিরোধী রাজনেতাদের কারাগারে নিয়ে রিমান্ড দিচ্ছে সরকার। কারণ কালো আইনের বদৌলতে নিজেরা সারা পাড়াময় মস্তানী করলেও সারাক্ষণ বিরোধীরাই আসামী হচ্ছে আর গোটা জাতি জীবনযুদ্ধে বিপর্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। ৫৭ ধারার অপব্যবহারের প্রতিবাদে সম্পাদকেরা প্রতিবাদ করছেন। বর্তমান সময়ে মাহমুদুর রহমানের মত সজ্জনরা কারাগারে, কুজনরা সমানেই মাঠে ময়দানে মস্তানী করে বেড়াচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে বহুদিন থেকেই সরকার রাখঢাকা না রেখেই প্রকাশ্যে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে তার দলবাজদের হাতে। সংবাদের শিরোনাম ১২,০০০ অস্ত্রের লাইসেন্স, এক আসনেই ৩,০০০। এসব উন্নয়নের জোয়ার এর আলামত মাত্র। লীগযুক্ত সদস্য, স্বজন, ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অস্ত্র পাচ্ছে। বিগত ৬বছর আট মাসে ১২,০০০ আর এ যাত্রা ছলের নির্বাচনের পর মাত্র ৩,০০০। এ হচ্ছে দেশের অল্পপরিধি অস্ত্র আর সন্ত্রাসীদের হিসাব। এভাবে দেশকে মৃত্যু উপত্যকা বানানো হচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে কিছু বিধি নিষেধ ছিল যে, লাইসেন্সধারীদের টেক্স পরিশোধ করতে হবে। নতুন সংশোধনীতে স্পিকার, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, বিচারক থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক অনুমোদিত কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে আয়কর দিতে হবে না। কি অদভুত সোয়ারীর পিঠে চলেছে এ দেশ! লাইসেন্স দেয়া হচ্ছে রাজনীতির বিবেচনায় আর বেশিরভাগ পাচ্ছেন লীগের গডফাদাররা।
একটি খবরে চোখ আটকে গেল। ২০৪১সাল পর্যস্ত আওয়ামী লীগের ক্ষমতার জবরদখল চাই। “তোরা যে যা করিস ভাই আমার সোনার হরিণ চাই”। সারা দেশের সুস্থ মানুষ মেরে তক্তা বানাচ্ছে সরকার, ঢালছে পেট্রোল বোমা আর বলছে বিরোধীরে ধর। একটি “পেট্রোল বোমা ফাইলে” দেখলাম তথ্য প্রমাণসহ প্রায় ডজন উদাহরণ ছবিসহ বর্তমান, যেখানে সরকারের দাগীরা ধরা পড়েছে। তারপরও সরকার চিৎকার চেচামেচি করছে এসব বিরোধীর কাজ। ধারণা করি আজও বাংলাদেশের অনেকের ভেতর বিবেক নড়েচড়ে। এক মন্ত্রী বলছেন, বর্তমান ছলের প্রধানমন্ত্রীই হবেন আগামী নির্বাচনে সরকার প্রধান, বিএনপি মানুক না মানুক। গোটা জাতি আজ কপটের হাতে জিম্মী। ধুকে ধুকে মরছে আর বিড়ম্বিত স্বাধীনতার স্বাদ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। পুলিশকে ফুলিশ বানিয়ে জাহান্নামের চেলা বানিয়ে কিনে রেখেছে সরকার। উঠ বললে উঠে, বস বললে বসে। স্বজ্জন ব্যক্তিদেরই দুর্দিন। জাতির দুর্দিনে সম্মুখ সমরে দাঁড়ানোর অপরাধে বহুবিধ মামলায় ৮০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। ইতিহাস ও ধর্ম বলে এরকম অবস্থায় আল্লাহর গজব নেমে আসে ধুলির ধরাতে। এত বাড় ভালো না, গোটা দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে। দৈবের কর্ম বড়ই শক্ত, ফেরাউন নমরুদ সাদ্দাদ যুগে যুগে উদাহরণ হয়ে আছে। নিজ হাতে গড়া বেহেশতের বসতি সাদ্দাদের ভাগ্যে জুটে নি। প্রতি বিরোধীনেতার পেছনে ডজন ডজন মামলা। বাহাদুররা হাততালি দিচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী তো নারী না, দেশের একমাত্র পুরুষ। ১৬ কোটি জনতার দেশে একজন পুরুষ। শেখ সাদি বলেছিলেন, “আমি তারেই বেশি ভয় পাই, যে মোটেও আল্লাহকে ভয় পায় না।” স্বাধীনতা হারাবার শংকা কেন জাগছে? পাঠক লেখাটি দেখতে পারেন। আর নীচে আসামী পক্ষের ভিডিটিও যুক্তির কথা বলছে।
২১ শে আগস্ট এর কথ শেখ হাসিনা জানতেন- তারেক জিয়া
১৫ ই আগষ্ট ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবস আর বাংলাদেশে মুজিব হত্যা দিবস। সেদিন ভারত ২৭ আগষ্ট স্বীকৃতি দিলে চীন দেয় ৩১ আগষ্ট, বৃটেন ১৮ আগষ্ট আর যুক্তরাষ্ট্র ২২ আগষ্ট । এর কিছুদিন আগে ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাথে মোশতাকের সাক্ষাৎ হয়। (মিযানুল করিম, নয়াদিগন্ত, ২২ আগষ্ট ২০১৫)। এসব হচ্ছে রাজনীতির খেলা। মুজিব হত্যার পর কোন মানুষ গোটা দেশে রাও করেনি, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ছাড়া, মতিউর রহমান রেন্টুও ঐ প্রতিবাদে শরিক ছিলেন, তার লেখা থেকে জানি। ক্রসফায়ার সুবিধাবাদীরা মারছে, একজনকে মেরে অন্যকে বাঁচানোর প্রয়াস চলছে, মন্ত্রী মন্তব্য করছেন সরকার একশনে নেমেছে। মানুষ মন্তব্য করছে, চুনোপুঠি মেরে রাঘব বোয়ালকে বাঁচানোর কসরত চলছে।
স্বজ্জনকে মারা আওয়ামীদের বহু পুরানো ক্রেডিট। ওতে হাত দাগিয়েছেন খোদ শেখ মুজিবও। যদিও তিনি নিজে মুক্তিযুদ্ধে ছিলেন না, কিন্তু নষ্ট দলবাজদের বাঁচাতে সম্ভবত তিনি এ কাজে হাত দাগিয়েছিলেন। জহির রায়হানকে কেন হত্যা করা হলো? এ বিতর্ক সেই স্বাধীনতার সময়কাল থেকেই নিরব যুদ্ধের মত কানে বাজে। জহির রায়হান ছিলেন জাতির এক মেধাবী সন্তান। শহীদুল্লাহ কায়সারের ভাই হলেও শহীদুল্লাহ হত্যার বিচার চাই কিন্তু জহির রায়হান হত্যার বিচার চাইতে লজ্জা কেন? সাহসী এ সন্তান সেদিন বলেছিলেন সাংবাদিক সম্মেলন করে শে^তপত্র প্রকাশ করবেন। তিনি আওয়ামীদের সব অপকর্ম তথ্য প্রমাণসহ জমা করেছেন, সব উন্মোচন করে দেবেন। পরিণতি হলো সাগর রুণির মতই। সেখানে জমা ছিল মুজিবনগর সরকারের সব গোপন তথ্য, তিনি হাটে হাড়ি ভেঙ্গে দেবেন। হাটে হাড়ি ভাঙ্গার জন্য ওটিই কি কম? শেখ মুজিবের হাড়ি সেদিন থেকেই ভেঙ্গেছে। এসব নিয়ে কথা হয় না, কার স্বার্থে এসব হয়? মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ঐ গুমের ইতিহাস ঐদিন থেকে শুরু হয়েছে । এসব তথ্যাবলি বাংলাদেশের পত্র পত্রিকাতে হালকাভাবে হলেও এসেছে। শেখ মুজিবও সেদিন জহির রায়হানের বড়বোন নাসিমা কবিরকে ডেকে নিয়ে হুমকি দেন যে, চিৎকার চেঁচামেচি করলে তাকেও গুম করে দেয়া হবে। তা জাতি জেনেছে জহির রায়হানের স্ত্রী সুমিতা দেবীর সাক্ষাৎকার থেকে (দৈনিক আজকের কাগজ, ৮ ডিসেম্বর ১৯৯৩ সাল)। ঐ দিন তিনি আরো বলেন যে রফিক নামের ব্যক্তি কল করে ডেকে নিয়েছিল জাহির রায়হানকে (তিনি আর ফিরে আসেন নি)। আসামী রফিককে পরবর্তীতে বিদেশে নিরাপত্তার স্বার্থে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ভারতে থাকা অবস্থাতে ঐ দলের চুরি দুর্নীতি, অবৈধ ব্যবসা, যৌন কেলেংকারীসহ নানা অপকর্মের প্রামাণ্য দলিল তার কাছে ছিল। ওটিই তার জীবনের কাল হয়ে দাড়ায়। বিডিআর বিদ্রোহের মতই বিচারের নামে এক ভূয়া তদন্ত কাজ করেছে আওয়ামী লীগ জহির রায়হানকে নিয়ে। এটি ঘটে ১৯৭৫ সালে। “এর আগে জহির রায়হানসহ অনেক বুদ্ধিজীবিকে হত্যা করা হয়েছে। কই তাদের তো বিচার হলো না” (অনল রায়হান, জহির রায়হানের মেজো ছেলে, দৈনিক বাংলা, ৯ আগষ্ট ১৯৯৯ সাল)। ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারী বড় ভাই শহীদ সাংবাদিক শহীদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে গিয়ে মিরপুর থেকে তিনি ইলিয়াস আলী ও আরো অনেকের মতই গায়েব হয়ে যান।
ষ্টুয়ার্ড মুজিব বলে আর একজন নিবেদিতপ্রাণ ব্যক্তি যিনি ৯ নম্বর সেক্টরের অধীনে এবং পরে ৮ নং সেক্টরে যুদ্ধ করেছিলেন। স্বাধীনতার মাত্র সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই ঢাকার গুলিস্তান চত্বর থেকে হাইজ্যাক হয়ে যান স্টুয়ার্ড মুজিব। এভাবে আর একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হারিয়ে যায় মুজিব সময়কালীন ক্ষমতাশীনদের কপট কারসাজিতে। ভারতে প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধাদের পাশে ‘মুজিব বাহিনী’ বলে আর একটি দল গঠন করতে হয়। ঐ মুজিব বাহিনী যুদ্ধে অংশ নেয়ার সুযোগই পায়নি, যুদ্ধ শেষ হয়ে যায়। তখনকার অবস্থাপন্ন ছাত্রলীগেরাই এর সদস্য ছিল। এর ট্রেনিং চলে “র”এর মেজর জেনারেল উবানের নেতৃত্বে দেরাদুনে, যেখান থেকে এরশাদও পরবর্তীতে হাত দাগান। এদের তৈরী করা হয় পরবর্তীতে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধাদেরে খতম করার জন্য। এসব তথ্য জানা যায় মেজর অবসরপ্রাপ্ত এম এ জলিলের “অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা” গ্রন্থ থেকে, পৃষ্ঠা ৩৯-৪১। ১৯৭৪ সালে ‘কালো আইন’ করা হয় অভিযোগ ছাড়াই মানুষ আটক করার জন্য। বর্তমানে ঢাকাতে মামলা হয়েছে ৪ হাজার। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলছে ১৩টির বিচার, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ৭৬টি, মির্জা ফকরুলের বিরদ্ধে ৭৮টি, রিজভী আহমেদের বিরুদ্ধে ৪৪টি, ভারতে অবস্থানরত সালাহ উদ্দিনের বিরুদ্ধে ২৭টি এভাবে হাজার হাজার মামলা চলছে, স্বাধীন দেশের মঙ্গলের পক্ষে কথা বলায় এরা অপরাধী। বিএনপির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, “সরকারের কৌশল হচ্ছে দ্রুত বিচার শেষ করে খালেদা জিয়াকে জনসমক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করে সাজা প্রদান করা”।
আগষ্ট হচ্ছে চিকন মাথার সন্ত্রা
বিশ^বিদ্যালয় ডাকাতের গ্রাম না
সন্ত্রাস বিরোধী সভাতে ময়দানের সন্ত্রাসী নায়কদের উপস্থিত না থাকার যুক্তি দেখছি না। এটি শুধু ঐ সময় থেকেই নয়, তার বহু আগ থেকেই তারা সন্ত্রাসের শিরোমনি। অতি চালাকের গলায় দড়ি বলে একটি কথা আছে! হিন্দুদের মন্দিরে হামলা করে সমানেই বিরোধীর উপর ও জামাতিদের উপর দাগিয়ে দেয়ার খেলা তো গোটা বিশ^ই দেখলো। এবার হিন্দু সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে হাসিনার বেয়াইএর বিরুদ্ধে, কমিটি গঠন করা হয়েছে তাকে বাঁচানোর জন্য। উল্লেখ্য তিনি এক নামে চিহ্নিত রাজাকার। ২২/০৮/২০১৫ তারিখে কলকাতার আনন্দবাজারে লোকদেখানো কমিটি গঠনের খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। নিজেদের লোক দিয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। সারাদেশেই চলছে বিরোধী নিধনের এ খেলা। দেশেও এ সম্পত্তি দখলের প্রতিবাদী ঝড় বইছে। রাজাকার বেয়াই হলে মন্ত্রী হওয়া যায়। জঙ্গি গীত দিয়ে বিডিআর বিদ্রোহের মোড় ঘুরাতে চেয়েছে সরকার বারে বারে। দেশবাসীকে এসব মনে রাখতে হবে মির্জা আজম ছিলেন যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। তিনি মনের খেদ মেটাতে পিলখানাতে কর্নেল গুলজারের চোখ উপড়ে ফেলতে ও দেহ নষ্ট করতে নির্দেশ দেন। এসবের ভিডিও রেকর্ডও প্রমাণ। এর প্রধান কারণ, গুলজারের কারণেই মির্জা আজমের দুলাভাই জেএমবি প্রধান শায়খ আব্দুর রহমানকে ধরা হয় ও পরে ফাঁসি দেয় তৎকালীন খালেদা সরকার। বিদ্রোহের দিন ঐ আজমের নির্দেশেই গুলজারের লাশ জ¦ালিয়ে নষ্ট করা হয়।
ভুলে যাবেন না ২০০৪ সালে নানক ও
সাঈদীর মামলা সাজাতে সুখরঞ্জন বালী নাটক, উষা রাণী, উত্তম মালাকার, মধুসূদন ও হরেণ ঠাকুর, সতিশ বালা চিত্তরঞ্জন তালুকদার, মুখেন ঠাকুরের প্রসঙ্গ আমরা ইউটিউবে দেখি। বালী বলেন, তাকে নানাভাবে শাসকপক্ষ চাপের মাঝে রেখেছে। ভারতে বন্দীত্ব, সালাহউদ্দিন নাটক, রেশমা নাটক, ইয়াসমিন নাটক কত আর বলা যায়? মহাভারত লিখা যাবে এদের বিরুদ্ধে। তাই এরা এমনই সন্ত্রাসী যে এসব বলতেও রুচিতে বাধে, এরা জন্মসন্ত্রাসী। নিজের দলের লোক মেরে রাজনীতির স্বাক্ষর রাখে, গ্লিসারিনের অভিনয় করার মত নেতা এরা। হাসিনা সরকারের প্রাইভেট সেক্রেটারী থরে বিথরে লিখে এসব কষ্টের কথা প্রকাশ করেছেন, যা গোটা জাতিই আজ জানে। এসব অপকর্ম গোটা জাতীয় জীবনের কলঙ্ক হয়ে বিবেকের কামড় হয়ে আছে। আজো সন্ত্রাসের দংশণে গোটা জাতি কুকড়ে মরছে। যদিও এত এত যুক্তির পরই লেজকাটা কিছু শিয়ালসহ প্রধানমন্ত্রী বলতেই পারেন যে, গ্রেনেড হামলায় খালেদার জড়িত থাকা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই ! সরকার যে কত নোংরামি করছে তার উত্তম উদাহরণ এই ভিডিওটি, পাঠকরা পরখ করুন।
https://www.youtube.com/watch?
নাজমা মোস্তফা, ২৪ আগষ্ট ২০১৫ সাল।
আজ ২১শে আগষ্ট ২০১৭ সাল। ঘটনার ১৩ বছর পর কামরুল ইসলামের ফেইসবুক থেকে পাওয়া একটি লেখা সংযোজন করছি। আওয়ামীলীগের জঙ্গি রা
———————
ঘটনার ১২ বছর পার হয়ে গেলেও ঐ ঘটনার রহস্য উদঘাটন হয়নি, বরং বার বার জন্ম হচ্ছে নতুন নতুন জজ মিয়া নাটক, একেক সরকারের সময় একেক বক্তব্য একেক কাহিনী। আওয়ামীলীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত বাবু পরিস্কার বলেছেন- এটি রাজনৈতিক মামলা। কাজেই মামলার রায়ও হবে রাজনৈতিক- এটাই স্বাভাবিক! কাজেই এসবে অবাক হওয়ার কিছু নাই। ২১ আগস্টের ঘটনা নিয়ে নিচের পয়েন্টগুলো একটু ভালো করে খেয়াল করুন। তাহলে বুঝতে কষ্ট হবে না- কারা কেনো কি উদ্দেশ্যে ঐ হামলা করেছিল, আর মামলার বিচারই বা কেনো হচ্ছে না।
পয়েন্ট এক:
২১ আগস্ট ২০০৪ শেখ হাসিনার মিটিং নির্ধারিত ছিল মুক্তাঙ্গনে। হঠাৎ করে শেখ হাসিনার নির্দেশে এক ঘন্টার মধ্যে স্থান বদলে ফেলে আওয়ামীলীগ অফিসের সামনে করে, কিন্তু পুলিশকে জানানো হয়নি, মাইক ব্যবহারের অনুমতিও নেয়নি। সেখানেই ঘটে গ্রেনেড হামলার ঘটনা। কেনো পাল্টিয়েছিল স্থান? যাতে করে নিজেদের এলাকায় সফলভাবে প্লানটা বাস্তবায়ন করা যায়? আওয়ামী এখনও প্রকাশ করেনি, কোনো তারা ১ ঘন্টা আগে জনসভার স্থান বদলেছিল? কি ছিল তাদের গোয়েন্দা তথ্য? পুরো ঘটনাটি বোঝার জন্য এই এক পয়েন্টই যথেষ্ট।
পয়েন্ট দুই:
গ্রেনেড ফাটার সময় হাসিনা বকতৃতা করছিলেন, কিন্তু তখন তার রাজনৈতিক সচিব সাবের চৌধুরী অবস্থান করছিলেন জিরো পয়েন্টে? কি করছিলেন উনি সেখানে? উনি কি জানতেন গ্রেনেড হামলা হবে?
পয়েন্ট তিন:
নিজ অফিসের সামনে যায়গা হাসিনার জন্য অত্যন্ত নিরাপদ বিবেচনা করেই স্থান বদল করে। কিন্তু বাইরের যে কারো জন্য এ রকম সুরক্ষিত স্থানে অপারেশন চালানো চরম ঝুকির। নতুন স্থানে বাইরের লোক এসে হামলা করতে পারে না। রেকি করা ছাড়া এত বড় কাজে কেউ নামবে না। এটা কোনো পাগলেও কি বিশ্বাস করবে যে, বাইরের লোক গিয়ে হাসিনার অফিসের সামনে জনসভার মধ্যে ঢুকে গ্রেনেড হামলার মত রিস্ক নেবে? এতগুলা লোক হামলা করলো, অথচ এক জনকেও হাতে নাতে ধরা গেলো না! হিসাবটা কি?
পয়েন্ট চার:
যে গ্রেনেডগুলো ছোড়া হয়েছিল, সেগুলোর উৎস কি? আসামের একটি পত্রিকা লিখেছিল, ওগুলো ভারত থেকে সরবরাহ করা!
পয়েন্ট পাঁচ:
গ্রেনেড হামলা হওয়ার ঠিক আগে আগে আইভি রহমানকে রাস্তা ছেড়ে ট্রাকে উঠতে বার বার হাসিনা ডাকছিলেন। অথচ আইভি ওঠেননি, এবং কিছুক্ষন পরে আহত হয়ে পরে মারা গেলেন। হাসিনা কি ঠিক জানতেন ট্রাক বাদ দিয়ে বাইরে হামলাটি হচ্ছে?
পয়েন্ট ছয়:
হামলার পরে হাসিনা নিজের বাসায় চলে গেলো বিকল্প গাড়িতে। কিন্তু সাবের চৌধূরী নতুন কাপড় চোপড় পড়ে ধানমন্ডিতে গিয়ে রাষ্ট্রদূতদের হাসিনার গাড়িতে গুলি হওয়ার চিহ্ন দেখায়। কিন্তু পরে যখন এফবিআই যায়, ডিবি তদন্ত করতে চায় সেই গাড়িটি আর দেখাতে পারেনি। গাড়িটা নাকি তারা ধংস করে ফেলেছে? কেনো? কি লুকাতে চেয়েছে তারা? এতবড় আলামত কেনো ধংস করলো? কি লুকাতে চাইলো? জানা গেছে ঐ গাড়ির কাঁচে সাবের নিজেই তার পিস্তল দিয়ে গুলি চালায় এটা বোঝাতে যে হাসিনাকে হত্যা করতে গুলি চালানো হয়। অথচ গাড়িতে লাগা গুলির বা হাসিনার সাথে থাকা লোকদের অস্ত্র থেকে বের হওয়ার গুলির কোনো ব্যালাস্টিক বা ফরেনসিক কোনো টেষ্টই হরা হয়নি। করতে দেয়নি আওয়ামীলীগ।
পয়েন্ট সাত:
ঘটনার পরে হাসিনা কি আসলেই অসুস্থ হয়েছিল? বলা হয়েছিল তার বাম কান নস্ট, পরে দেখা গেছে নস্ট কানেই সে টেলিফোন ধরে আছে।। এরপরে দেখা গেলো দু’কানেই কথা শুনছেন। প্রশ্ন করলে একবার বলে ডান নষ্ট, আবার বলে বামটা নষ্ট। ডান বাম নাটকটা বেশ জমে উঠেছিল!
পয়েন্ট আট:
হাসিনার গাড়িটা ছিলো মার্সিটিজ বেঞ্জ বুলেটপ্রুফ। মার্সিটিজ কোম্পানী বলেছে, ঐ গাড়িতে গুলি প্রবেশ করা অসম্ভব। অথচ হাসিনার লোকজন দাবী করে- গুলি গাড়িতে প্রবেশ করে নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়। কিন্তু বিশ্বস্ত সুত্র জানিয়েছে
পয়েন্ট নয়:
এই মামলার আসামী মুফতি হান্না
পয়েন্ট দশ:
২১ আগস্টের হামলাকারীরা হাসিনার সমাবেশে ঢুকেছিল ওলামালীগের তখনকার সভা
পয়েন্ট এগার:
বিএনপির স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্
মূলত, বিএনপি সরকার পতনের লক্ষে ঐ বছরেই অন্তত তিনটি ষড়যন্ত্র চালায় ভারতের র এবং আওয়ামীলীগ।
দ্বিতীয় চেষ্টায়, ঐ বছর এপ্রিল মাসের ৩০ তারিখে সরকার পতনের জন্য আ’লীগের সাধারন সম্পাদক আবদুল জলিলের ঘোষিত ‘ট্রাম্প কার্ড!’ আ’লীগ ও “র”য়ের ঐ প্লানের আওতায় ১০ লাখ লোক ভাড়া করার কথা একটি এনজিওর, বিএনপির ১০০ এমপি কিনে নিয়ে সরকার পতন ঘটাবে। সেটাও ব্যর্থ হয়।
তৃতীয় প্রয়াসে, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা ঘটায় নিজেদের সমাবেশে। এতে এত হতাহত হবে যে, তাদের ধারনা ছিল বিএনপি সরকারের পতন ঘটে যাবে। সেটাও সফল হয়নি।
এর পরের বছর হাসিনার নির্দেশে সা