- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৯ আগস্ট ২০২০
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি ও মির্জা ফখরুল খুন ও খুনিদের পক্ষে বক্তব্য দিচ্ছেন। আজ দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে টেলিভিশন নাট্যশিল্পীদের সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘ ও দর্শক শ্রোতা পাঠক ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি একথা বলেন।
অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি শহিদুজ্জামান সেলিম, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবীব নাসিম, সংঘের সাবেক সভাপতি ও দর্শক শ্রোতা পাঠক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক শহীদুল আলম সাচ্চুসহ শিল্পী প্রতিনিধিরা সভায় অংশ নেন। সভার শুরুতেই মন্ত্রী ১৫ আগস্টে শহীদ বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান ।
ড. হাছান বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত সেটি আজকে দিবালোকের মতো স্পষ্ট। “আপনারা জানেন, কর্ণেল ফারুক-রশীদ বিবিসি’র সাথে সাক্ষাৎকারে বলেছিল, তারা যখন এই ষড়যন্ত্র শুরু করে, তখন জিয়াউর রহমানের কাছে গিয়েছিল এবং জিয়া তাদেরকে এগিয়ে যেতে বলে। জিয়ার বক্তব্যটা এমনই ছিল- আমি যেহেতু সিনিয়র অফিসার, আমি পর্দার অন্তরালে থাকবো, তোমরা এগিয়ে যাও। আর বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের দন্ডপ্রাপ্ত আসামী ক্যাপ্টেন মাজেদ, যার দন্ড কিছুদিন আগে কার্যকর করা হয়েছে, তিনি তার ফাঁসির আগে যে বক্তব্য রেখেছেন, তাতে জিয়াউর রহমান কিভাবে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত ছিল, তা স্পষ্ট হয়েছে।”
জিয়াউর রহমানের কাছে কর্ণেল বেগের চিঠির কপি আপনারা হয়তো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখেছেন, আমার কাছেও আছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমান যখন রণাঙ্গণে অর্থাৎ মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তখন তার কাছে কর্ণেল বেগ চিঠি লিখেছিলেন যে- ‘তোমার কাজকর্মে আমরা খুশি এবং তোমার স্ত্রী-পুত্রদের জন্য চিন্তা করিও না, তারা ভালো আছে। মেজর জলিল সম্পর্কে তুমি একটু সতর্ক থেকো। তোমার কাজকর্মের জন্য তুমি পুরস্কৃত হবে’। আমরা পরবর্তীতে দেখতে পেয়েছি সেই কর্ণেল বেগ পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান হয়েছিল।’
জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের প্রধান কুশীলব খন্দকার মোশতাকের প্রধান সহযোগী না হতো, তাহলে হত্যাকান্ডের পর কেন তিনি জিয়াউর রহমানকে সেনাবাহিনীর প্রধান বানাবেন -প্রশ্ন রাখেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, আরো প্রমাণ হচ্ছে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধু হত্যাকারিদের তিনি পুরস্কৃত করে বিদেশী মিশনে চাকুরি দিয়েছিল এবং ’৭৯ সালের পার্লামেন্টে ইনডেমনেটি অধ্যাদেশকে আইনে পরিণত করেছিল, যাতে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচার না হয়। এসকল ঘটনা প্রবাহই তো সাক্ষ্য দেয় জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে ওতোপ্রোতভাবে যুক্ত।
আজকে যখন ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ডের সাথে জিয়াউর রহমানের সম্পৃক্ততা দিবালোকের মতোই স্পষ্ট হয়ে গেছে, তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আর রিজভী আহমেদসহ বিএনপি নেতারা আবোল তাবোল বকা শুরু করেছেন। তাদের এই বক্তব্য হচ্ছে খুনি এবং খুনের পক্ষে। আমি তাদেরকে অনুরোধ জানাব, তারা যেন খুনি এবং খুনের পক্ষে অবস্থান না নেন।
তথ্যমন্ত্রী এসময় দেশের বিভিন্ন অঙ্গণের শিল্পী এবং কলাকুশলীদের করোনাকালীন সহায়তা দিতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কলাকুশলী বলতে যে মাইকম্যান তাকেও চিন্তায় রাখতে হবে, মঞ্চ এবং টেলিভিশনের পর্দার পেছনে যে কাজ করে তার কথাও চিন্তা করতে হবে- এটিই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা।
তিনি বলেন, সংগঠনগুলোর কাছ থেকে চাহিদা মোতাবেক তালিকা পেলেই আমরা সহায়তার ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত রয়েছি। শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় কিভাবে টেলিভিশন শিল্পীসহ সকল শিল্পীর কল্যাণ সাধন করা যায়, সে বিষয়ে কাজ চলছে বলেও জানান মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
টিভি নাট্যশিল্পী মনিরা ইউসুফ, বন্যা মির্জা, শামীমা তুষ্টি, আফজাল, আশরাফ কবীর, আরমান পারভেজ মুরাদ, কোহিনুর, নাজমুন নেসা নিপা, ইয়ামিন জুয়েল, কচি খন্দকার, মাহবুবা মিনহাজ বিপা, শুভ খান, ইয়ামিন জুয়েল, শারমিন মিশু, শোয়েব সাদিক, আরিফ, অন্তু করিম, মনিশা শিকদার, জারা, অপু আহমেদ, তমাল, তন্দ্রা, নাসরিন ইসলাম, নিথর মাহমুদ, জিনিয়া প্রমুখ এসময় প্রাণবন্ত আলোচনায় অংশ নেন। বাসস