BBC BANGLA
একটি নির্দিষ্ট অর্থবছরে দেশের কোন খাতে কোথায় কত ব্যয় হবে সরকারের এই আর্থিক পরিকল্পনার চিত্র প্রতিফলিত হয় বাজেটের মাধ্যমে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট থেকে শুরু করে গত বছর পর্যন্ত যেসব বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে তাতে দেখা যায় সময়ের সাথে প্রত্যেকটা বাজেটের আকার বেড়েছে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, বাজেটে টাকার পরিমাণ বাড়লেও অর্থনীতির অনুপাত হিসেবে বাজেট বাড়েনি। তাদের মতে, সময়ের পরিবর্তনে বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে ‘গুণগত’ যে পরিবর্তন হওয়া উচিত ছিল তা হয়নি।
গত পাঁচ দশকের বাজেট প্রণয়নের ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যাবে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা প্রণয়নের ক্ষেত্রে এক ধরনের পরিবর্তন এসেছে।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যেখানে রাষ্ট্রায়ত্ব খাতের ওপর নির্ভর করে শিল্পায়নের কথা চিন্তা করা হতো, সরকার বদলের সাথে সাথে সেখানে রাষ্ট্রের জায়গায় ব্যক্তিখাতের ভূমিকাকে বড় করা হয়েছে।
বাংলাদেশের প্রথম বাজেট
বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে প্রথম জাতীয় বাজেট উপস্থাপিত হয় ১৯৭২ সালের ৩০শে জুন। ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেট পেশ করেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমেদ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী- দেশের প্রথম বাজেটের পরিমাণ ছিল ৭৮৬ কোটি টাকা। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর এসে এই বাজেটের আকার দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ কোটি টাকারও বেশি।
স্বাধীনতার পরে প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের তৈরি ওই বাজেটটি বাংলাদেশের একটি ‘ঐতিহাসিক বাজেট’ হিসেবে উল্লেখ করে থাকেন অর্থনীতিবিদেরা।
“মাত্র ছয় মাস হয়েছে দেশ মুক্ত হয়েছে, এরকম একটা সময়ে ওই বাজেট হয়। যেখানে সরকারের বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ ছিল না, রাজস্ব আদায় সেভাবে ছিল না। সরকারের বৈদেশিক সাহায্যের ব্যাপারটিও অনিশ্চিত ছিল,” বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন অর্থনীতিবিদ ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের বিশেষ ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য ।
“সম্পদের অনিশ্চিত পরিস্থিতির ভেতরে একদিকে উদ্বাস্তুদের পুনর্বাসনের বিষয় ছিল, এর পাশাপাশি যেসব অবকাঠামো ভগ্ন অবস্থায় ছিল – হাজার হাজার সেতু, একইসাথে কৃষি শিল্প ইত্যাদি ক্ষেত্রে পুনর্বাসন বা পুনর্গঠনের বিষয় ছি,” বলেন মি. ভট্টাচার্য ।
দেশের প্রথম সেই বাজেট আকারে ছোট হলেও ‘গুণমানসম্পন্ন’ একটি বাজেট সেসময় তৈরি হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২-১৯৭৫ সাল পর্যন্ত শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনামলে বাজেটকে “সমাজতন্ত্রের দিকে অগ্রসর হওয়ার বাজেট’ হিসেবে বর্ণনা করছেন ঢঅকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এম এম আকাশ।
“তখন পুনর্বাসনের বিষয় ছিল। মিশ্র অর্থনীতির মধ্যে রাষ্ট্রীয় খাতের প্রাধান্য রেখে বঙ্গবন্ধুর শাসনামলের বাজেটগুলো হয়েছে। যাতে বৈষম্য কমানোর তাগিদ ছিল, কর্মসংস্থান সৃষ্টির তাগিদ ছিল। বৈদেশিক প্রভুত্ব কমানোর তাগিদ ছিল। স্বনির্ভর হওয়ার তাগিদ ছিল,” বলেন অধ্যাপক আকাশ।
তখন বৈদেশিক সাহায্য নেয়ার ব্যাপারে সরকার অনেক সতর্ক ছিল এবং বাজার প্রয়োগ না করে রেশন ও ন্যায্যমূল্যের উপরে সরকার গুরুত্ব দিয়েছে।
বাজেটের আকার বেড়েছে
তাজউদ্দীন আহমদ অর্থমন্ত্রী থাকাকালীন মোট তিনটি বাজেট পেশ করেন। সেসব বাজেটে বরাদ্দ ছিল যথাক্রমে ৭৮৬ কোটি টাকা, ৯৯৫ কোটি টাকা এবং ১ হাজার কোটি টাকা (প্রায়)।
স্বাধীনতার ৫১ বছরের ব্যবধানে ২০২২-২৩ অর্থবছরের যে বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছিল সেটির আকার হয়েছিল ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা।
এবার পঞ্চমবারের মতো বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের সম্ভাব্য আকার প্রায় ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকা।
দুই হাজার সাত সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসার পর এক বছরে ৩০ হাজার কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ বাড়ানো হয়। ২০০৬-০৭ অর্থবছরে এম সাইফুর রহমান ৬৯৭৪০ কোটি টাকার বাজেট দেওয়ার পর ২০০৭-০৮ অর্থ বছরে মির্জা আজিজুল ইসলাম ৯৯৯৬২ কোটি টাকার বাজেট দেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দুই বছরের বাজেটে সবচেয়ে বেশি ব্যবধান ছিল সেবারই প্রথম। এরপর প্রতি বছরেই বাজেট ব্যবধান বাড়তে দেখা গেছে।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০০৯-২০১০ অর্থবছরে পর প্রথম লক্ষ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। এরপর প্রতি বছরই গড়ে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ বেড়েছে।
স্বাধীনতার পর অর্থমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদের হাতেই বাজেট হাজার কোটির কোটায় আসে এবং পরে তা লক্ষ কোটির কোটায় নিয়ে যান আওয়ামী লীগের বর্তমান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মি. মুহিতের পেশ করা ২০০৯-২০১০ অর্থবছরের বাজেটকে ‘প্রথম উচ্চাভিলাষীর বাজেট’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়ে থাকে।
বাংলাদেশের বাজেটের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বাজেট পেশ করেছেন এম সাইফুর রহমান ও আবুল মাল আব্দুল মুহিত। তারা দুজনেই ১২টি করে বাজেট পেশ করেছেন।
বেড়েছে ব্যক্তিখাতে নির্ভরতা
অর্থনীতিবিদদের মতে, বাজেটের ক্ষেত্রে প্রথম বড় ‘পলিসি শিফট’ বা ‘নীতির পরিবর্তন’ হয়েছে সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে। রাষ্ট্রায়ত্ব খাতের ভূমিকাকে সীমিত করা হয়েছে ও ব্যক্তিখাতের ভূমিকাকে বড় করা হয়েছে।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলছিলেন “রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নাগরিকদের জন্য যে দায়িত্বের জায়গা আছে সেটা ক্রমান্বয়ে ব্যক্তিখাতের কাছে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। প্রথমে এটা ছিল মালিকানার ক্ষেত্রে এবং পরে এটা বাজার ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও এটা পরিলক্ষিত হয়েছে। এবং তারপরে বৈদেশিক সম্পর্কের মাধ্যমে।”
জিয়াউর রহমান তার আমলের বাজেটে তিনি মিশ্র অর্থনীতির কোন কোন অংশ রাখার চেষ্টা হয়েছিল বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। সেখানে ব্যক্তিখাত এবং রাষ্ট্রায়াত্ব খাতকে সমান গুরুত্বদেয়া হয়েছিল।
“রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কলকারাখানাগুলো ব্যক্তিখাতে ফেরত দেয়া প্রসঙ্গে বাজেটে জিয়াউর রহমান বলেছিলেন ‘আমি যদি কোনও কারখানা লাভজনক পাই ও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব হবার পরও যদি লাভজনক পাই কেন আমি ব্যক্তিখাতে দিয়ে দেব, তখন তো লাভটা দিয়ে শিক্ষা সামাজিক খাতে ব্যবহার করতে পারবো” বলেন মি. আকাশ।
বিরাষ্ট্রীয়করণ এবং বাজার অর্থনীতির ধারা জোরালো রূপ পায় জেনারেল এইচএম এরশাদ সরকারের সময়। যার প্রতিফলন দেখা যায় বাজেেট।
অর্থনীতিবিদ ফাহমিদা খাতুন মনে করেন “সত্তরের দশকের সমাজতান্ত্রিক চিন্তাভাবনা থেকে যে বিভিন্ন সরকার সরে আসতে থাকে তা বাজেটে প্রতিফলিত হয়েছে। এবং আস্তে আস্তে মুক্তবাজার অর্থনীতির দিকে গেছে সরকার”।
মুক্তবাজারে প্রবেশ
বাংলাদেশের প্রথম দিকের বাজেটে বৈশ্বিক চিন্তাভাবনার বিষয়টি প্রতিফলিত না হলেও আশির দশকের শেষ দিক থেকে বাজেটে কাঠামোগত পরিবর্তন দেখা যায়।
আশির দশকে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিনিয়োগ তুলে দিয়ে সেটা ব্যক্তি খাতে যাবার যে প্রক্রিয়াটা শুরু হয় নব্বইয়ের দশকে এসে সেটা আরও ত্বরান্বিত হয়।
“আশির দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে যে তৈরি পোশাক শিল্পের রপ্তানি শুরু হলো তখন বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে যে সুযোগ-সুবিধা ছিল তাতে যুক্ত হতে থাকলাম আমরা। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা যে কোটামুক্ত প্রবেশাধিকারের সুযোগ তৈরি করে দিল তাতে কিন্তু আমরা জড়িত হলাম। ওপেন মার্কেট ইকোনমিতে যুক্ত হলাম আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে নব্বইয়ের দশকে সেটা আরও প্রসারিত হলো” বলছিলেন ফাহমিদা খাতুন।
তার মতে তারপরে যে সরকারই এসেছে মোটামুটি একই ধরনের নীতিমালা অর্থাৎ মুক্ত বাজার অর্থনীতি বজায় রেখেছে।
এরশাদ সরকারের শাসনামলের বাজেটকে ‘ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও আইএমএফ’র’ কাঠামোগত সংস্কার কর্মসূচি প্রতিপালনের বাজেট’ বলে মনে করেন অধ্যাপক এম এম আকাশ।
“সব ভর্তুকি প্রত্যাহার, সমস্ত কলকারখানা ব্যক্তিখাতে প্রত্যার্পন, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা, বাংলাদেশের শিল্প ব্যাংকগুলো থেকে টাকা দিয়ে ব্যক্তিখাতগুলোকে কৃত্রিমভাবে দাঁড় করানো এবং মুহূর্তের মধ্যে কিছু লোক বেশ বড় টাকার মালিক হয়ে গেল। বাজেট বাড়লো। কিন্তু বাজেটের টাকা যোগাড় হয় না দেখে তখন বৈদেশিক সাহায্যের ওপর নির্ভরতা বেড়ে গেল” বলেন মি. আকাশ।
তার মতে সেই সময়ে বিদেশ নির্ভর বাজেট ব্যবস্থা ছিল।সেই দাতা নির্ভর বাজেট থেকে বের হয়ে স্বাধীন বাজেট প্রণয়ন তখন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
মানবসম্পদের ওপর জোর
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, কয়েক দশকের বাজেট পর্যালোচনা করলে বুঝতে পারা যায় যে বাংলাদেশে অবকাঠামো ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে মনোযোগ বেড়েছে। পাশাপাশি বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পও হাতে নিচ্ছে৷
বলছিলেন –“ ক্রমান্বয়ে একটা ঐক্যমত দেশের ভিতরে গড়ে উঠেছে – মানবসম্পদের দিকে নজর দিতে হবে। শিক্ষা স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিতে হবে। এটা আশির দশকের দিক থেকে দেখেছি,” বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
সে সময় থেকে বাংলাদেশ শিক্ষা স্বাস্থ্যের দিকে অগ্রগামী ছিল বলে এমডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
“বর্তমান সরকারের ১৫ বছরে দেখেছি আমরা ভৌত অবকাঠামোর প্রতি প্রচুর জোর দেয়া হয়েছে। রাস্তাঘাট, সেতু ইত্যাদি এর সাথে বিদ্যুতের ওপরেও জোর দেয়া হয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে যেটা হয়েছে কতগুলো বিষয়ে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক পরিকল্পনার ব্যাপারে ঐক্যমত বিরাজ করে”।
বাংলাদেশ যে মানবসম্পদে জোর দিচ্ছে, খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষি, কৃষির বহুবিধিকরণ, যান্ত্রিকীকরণ এসব বিষয়ে ঐক্যমত পোষণ করছে সরকারগুলো – এটা ইতিবাচক দিক বলে মনে করেন মি. ভট্টাচার্য।
তার মতে সাম্প্রতিককালে বাজেট বরাদ্দের ক্ষেত্রে একটা ধারাবাহিকতা বা গতানুগতিকতা লক্ষ্য করা যায়।
“দশ শতাংশ করে রাজস্ব বাড়বে, দশ শতাংশ করে খরচ বাড়বে। প্রত্যেক খাতে এটাকে দেয়া হবে। বড় বড় প্রকল্প কিছু থাকবে সেটাতে ৭০ শতাংশ চলে যাবে বাকি শতাংশ অন্যান্য প্রকল্পকে ভাগ করে দেব- এভাবে কাজগুলো হচ্ছে” বলেন দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
অর্থনীতিবিদদের মতে বাজেট এখন অনেক বেশি নীতিভিত্তিক কাঠামোর মধ্য দিয়ে হচ্ছে৷ যেমন, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, এসডিজি অথবা সরকারের বিভিন্ন খাতভিত্তিক পরিকল্পনাকেও প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে৷
ফাহমিদা খাতুন বলছিলেন “বাজেট বড় হয়েছে, সক্ষমতার জায়গা অবশ্যই তৈরি হয়েছে – চাহিদার জায়গা সৃষ্টি হয়েছে অনেক জায়গায় কার্যক্রম চলছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রসারিত হয়েছে”।
কিন্তু পঞ্চাশ বছর পর এসে বাজেট নিয়ে যে ‘এক্সপেক্টেশন’ তৈরি হয়েছে তা কতটা বাস্তবায়ন হচ্ছে তা নিয়েই প্রশ্ন বিশেষজ্ঞদের।
“বড় বাজেট করছি কিন্তু বাজেট বাস্তবায়নের হারের ক্ষেত্রে আমি কোনও পরিবর্তন দেখি না, উন্নতি দেখি না। এখনও স্বাস্থ্যখাতে টাকা দিলেও বাস্তবায়ন করতে পারে না। আকার বড় হওয়া ছাড়া বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন নাই।
মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে, জিডিপির আকার বেড়েছে -এর পাশাপাশি কর যতটুকু পরিবর্তন হওয়া উচিত ছিল সেই পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করেছেন ফাহমিদা খাতুন।
অর্থনীতিবিদদের মতে বাজেটে যে গুণগত পরিবর্তন দরকার ছিল সেটা তেমন একটা হয়নি।
“রাজস্বের ক্ষেত্রে বর্ধিত রাজস্ব কোথা থেকে আসবে? এটা কি প্রত্যক্ষ কর থেকে আসবে নাকি পরোক্ষ কর থেকে আসবে? যার দেওয়ার সামর্থ্য আছে সে দিবে নাকি যার সামর্থ্য সীমিত তারা সকলেই ভ্যাট দিতে থাকবে?
নাকি আমি সম্পদ কর বসাবো? যে বরাদ্দগুলো দেয়া হচ্ছে সেগুলোর কাঠামোগুলো কীরকম – আমি যে শিক্ষার জন্য বরাদ্দ দিচ্ছি সেখানে কি বিল্ডিং উঠবে নাকি শিক্ষকদের পেশাগত মানোন্নয়নের জন্য আমরা খরচ করবো? এগুলো হলো গুরুত্বপূর্ণ”।
টাকার অঙ্কে বাজেট বাড়লেও অর্থনীতির অনুপাত হিসেবে বাজেট বাড়েনি বলেই মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলছিলেন “জিডিপির ১৪/১৫ শতাংশে আমরা আটকে আছি। করের দিক থেকে যেহেতু আমরা দশ শতাংশের বেশি যেতে পারছি না জিডিপির তার ফলে আমরা পাঁচ শতাংশের ঘাটতি বাজেট নিয়ে আগাচ্ছি। বাজেটের ক্ষেত্রে বড় পরিবর্তন আনতে হলে আমাদের আয় বাড়াতে হবে এবং সেই আয় দিয়ে গুণমানসম্পন্ন ব্যয় করতে আমাদের শিখতে হবে”।
এবারের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে সরকার যে বাজেট পেশ করতে যাচ্ছে তা একটা বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
অধ্যাপক এম এম আকাশের ভাষায় “এখন যে মুদ্রাস্ফীতি চলছে, ইউক্রেন যুদ্ধ, করোনা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ডলার সংকট- এর মধ্যে সরকার ‘শ্যাম রাখি না কূল রাখি’ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছে। ‘এবারের বাজেট সন্ধিক্ষণের বাজেট বলে মনে করছেন এই অর্থনীতিবিদ।