বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলা চলবে

রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের দায়ের করা মামলা চলবে বলে জানিয়েছেন নিউইয়র্ক আদালত। একই সঙ্গে ব্যক্তিগত এখতিয়ার না থাকায় আরো চার আসামিকে মামলা থেকে খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট এ রায় দেন। শনিবার ফিলিপাইনের গণমাধ্যম এনকোয়ারার ডট নেট এ তথ্য জানায়।

রায়ে নিউইয়র্ক রাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, তিনটি ‘কজ অব অ্যাকশনের’ আইনি ভিত্তি নেই। আরসিবিসি ব্যাংক ও সব বিবাদীর বিরুদ্ধে অর্থ রূপান্তর, চুরি, আত্মসাৎ—এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সহায়তা বা প্ররোচনা, জালিয়াতি (আরসিবিসির বিরুদ্ধে), জালিয়াতিতে সহায়তা বা প্ররোচনা—এসব অভিযোগ খারিজ করা হয়েছে।

এছাড়া ব্যক্তিগত এখতিয়ার না থাকায় চার আসামিকে মামলা থেকে খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। তারা হলেন ইসমায়েল রেয়েস, ব্রিজিত ক্যাপিনা, রোমুয়ালদো আগারাদো ও নেস্তর পিনেদা।

তবে নিউইয়র্কের আদালত জানিয়েছেন, আরসিবিসি ও অন্যান্য আসামির বিরুদ্ধে অন্য অভিযোগে মামলা চলতে পারে, যেমন যে অর্থ আরসিবিসিতে গেছে, তা ফেরত দেয়া। এ বিষয়ে আরসিবিসি জানিয়েছে, আদালতের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কিনা, তা ভেবে দেখা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আসামি করে মামলাটি করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। তাদের বিরুদ্ধে অর্থ রূপান্তর, চুরি, আত্মসাৎ, এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সহায়তা বা প্ররোচনা, জালিয়াতি (আরসিবিসির বিরুদ্ধে), জালিয়াতিতে সহায়তা বা প্ররোচনাসহ বেশকিছু অভিযোগ আনা হয়। এর আগে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইফট সিস্টেমে ভুয়া বার্তা পাঠিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (ফেড) রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেয়া হয় রিজাল ব্যাংকে। ওই অর্থ স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোয়। এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে ফিলিপিন্স সরকার বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দিয়েছে। বাকি ৬ কোটি ৬৪ লাখ ডলার আর পাওয়া যায়নি।

এর তিন বছর পর ২০১৯ সালে ওই অর্থ উদ্ধারের আশায় নিউইয়র্কের ম্যানহাটন সাদার্ন ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে একটি মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই মামলা খারিজে আবেদন করে আরসিবিসি। গত বছরের এপ্রিলে নিউইয়র্কের আদালত আরসিবিসির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের মামলাটি খারিজ করে দেন। রায়ে বলা হয়েছিল, মামলা বিচারের ‘পর্যাপ্ত এখতিয়ার’ আদালতের নেই। এরপর বাংলাদেশ বাংকের পক্ষ থেকে নিউইয়র্কের ‘এখতিয়ারভুক্ত’ আদালতে মামলা করা হয় বলে জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক।

Bonik Barta