বাংলাদেশে সরকার আছে আমরা টের পাই না: চুন্নু

বাংলাদেশে সরকার আছে তা আমরা টের পাই না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু। বুধবার জাতীয় সংসদে ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল-২০২৩ পাসের আলোচনায় অংশ নিয়ে মুজিবুল হক এ কথা বলেন। মুজিবুল হক বক্তব্য দেয়ার সময় সরকারি দলের কয়েকজন সংসদ সদস্য হাসতে থাকেন। তখন মুজিবুল হক বলেন, ‘আ হা করেন…বাজারে যান না, পেঁয়াজ কত করে দেখেন, আ হা করেন।’ সরকারি দলের সদস্যদের উদ্দেশে মুজিবুল হক বলেন, ‘ভাই ডিস্টার্বটা করেন! ডিস্টার্ব কইরেন না, বাস্তবতায় আসেন।’

মুজিবুল হক বলেন, ‘ফাইন্যান্স কোম্পানির কথা মনে হলেই পি কে (প্রশান্ত কুমার) হালদারের কথা আসে। তিনি লিজিং কোম্পানির এমডি ছিলেন। বান্ধবীর নামে ১০০ কোটি, তিন নম্বর বান্ধবীর নামে ৫০ কোটি, স্ত্রীর নামে ১০০ কোটি, শালীর নামে ৫০ কোটি, এভাবে শত শত কোটি টাকা পাচার করেছেন।’ আগেও আইন ছিল উল্লেখ করে মুজিবুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক তো ছিল, তারা কি তখন ঘাস কেটেছিল? আইন করে লাভ কি? দিয়ে দেন না ফ্রি।’

জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান বলেন, লিজিং কোম্পানি থেকে পি কে হালদার হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে চলে গেছেন। তখনো আইন ছিল। আইন কার্যকর না হলে আইন করে লাভ হবে না। পি কে হালদারেরা এভাবে টাকা নিয়ে চলে যাবে। আইন থাকবে আইনের জায়গায়।

বিরোধী সদস্যদের জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠ ভোটে পাস হয়। বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ফাইন্যান্স কোম্পানির (আর্থিক প্রতিষ্ঠান) শেয়ার কেন্দ্রীভূত করা যাবে না। কোনো ব্যক্তি বা একই পরিবারের সদস্যরা কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির ১৫ ভাগের বেশি শেয়ার কিনতে পারবেন না। এক পরিবার থেকে দুজনের বেশি পরিচালক নিয়োগ করা যাবে না। বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট পক্ষ প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা যৌথভাবে কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির উল্লেখযোগ্য (কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের শতকরা ৫ ভাগের বেশি শেয়ার) শেয়ার ধারক হলে অন্য কোনো ফাইন্যান্স কোম্পানি বা ব্যাংক কোম্পানির উল্লেখযোগ্য শেয়ার ধারক হতে পারবেন না। 

বিলে বলা হয়েছে, কারও কাছে ১৫ শতাংশের অতিরিক্ত শেয়ার থাকলে এই আইন কার্যকর হওয়ার দুই বছরের মধ্যে তা (অতিরিক্ত শেয়ার) হস্তান্তর করতে হবে। এটা না করলে অতিরিক্ত শেয়ার সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। তবে এসব বিধান সরকারি মালিকানাধীন ফাইন্যান্স কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

বিলে বলা হয়েছে, কোনো পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে দুজনের বেশি পরিচালক থাকতে পারবেন না। শতকরা ৫ ভাগের বেশি শেয়ারের অধিকারী হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ দুজন পরিচালক থাকতে পারবেন। আর ২ থেকে শতকরা ৫ ভাগ শেয়ারের অধিকারী হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে একজন ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন।