বাংলাদেশে এখনও কার্ফু, চলছে ধরপাকড়, ইন্টারনেট বন্ধ, আরও কয়েক দফা দাবিতে আন্দোলন জারি

যে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে, সেই সংক্রান্ত মামলায় রবিবার রায় ঘোষণা করেছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। তার পরেও সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরেও স্বাভাবিক হল না বাংলাদেশের পরিস্থিতি। এখনও আন্দোলন চলছে। আরও কয়েক দফা দাবি সরকারের কাছে রেখেছেন আন্দোলনকারী ছাত্রছাত্রীদের একাংশ। ফলে বাংলাদেশে কার্ফু এখনও রয়েছে। চলছে না ইন্টারনেটও। হিংসার অভিযোগে ধরপাকড় চালাচ্ছে পুলিশ। শুধুমাত্র রবিবারই ঢাকায় ৫০০-র বেশি মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে অধিকাংশ বিরোধী দল বিএনপির কর্মী বলে অভিযোগ।

যে কোটা সংস্কারের দাবিতে ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে, তার কিছুটা সমাধান হয়েছে রবিবার। দেশের সর্বোচ্চ আদালত কোটা সংস্কারের নির্দেশ দিয়েছে। সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিদের সংরক্ষণ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশে এ বার থেকে ৯৩ শতাংশ নিয়োগই হবে মেধার ভিত্তিতে। বাকি সাত শতাংশ আসন সংরক্ষিত থাকবে। তার মধ্যে মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিরা পাঁচ শতাংশ এবং অনগ্রসর শ্রেণি ও প্রতিবন্ধীরা এক শতাংশ সংরক্ষণ পাবেন।

মুক্তিযোদ্ধাদের উত্তরসূরিদের সংরক্ষণ সম্পূর্ণ ভাবে তুলে দেওয়ার দাবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়েছিল বাংলাদেশে। তবে আদালত সেই নির্দেশ দেয়নি। তা সত্ত্বেও বলা যায়, ছাত্রছাত্রীদের দাবি অনেকটাই মান্যতা পেয়েছে। কিন্তু রবিবারের সেই রায়ের পরেও অশান্তি থামেনি বাংলাদেশে। কার্ফু জারি রেখেছে সরকার। গত বৃহস্পতিবার থেকে দেশের বিস্তীর্ণ অংশে বন্ধ রয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। সারা দেশে ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। মাঝে মাঝে এক থেকে দু’ঘণ্টার জন্য কার্ফু শিথিল করা হচ্ছে। ওই সময়ের মধ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করছেন নাগরিকেরা।

বাংলাদেশে আন্দোলকারীরা এখনও যে সমস্ত দাবি জানিয়েছেন, তার মধ্যে অন্যতম মন্ত্রীদের পদত্যাগ। একাধিক মন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চলছে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়ে অনেক ছাত্র নিখোঁজ হয়েছেন বলে অভিযোগ। তাঁদেরও ফিরিয়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। সোমবার ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ এবং মাহিন সরকার চার দফা দাবি পূরণের জন্য সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। ২৪ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়েছে সরকারকে। এই সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। চার দফা দাবির মধ্যে অন্যতম হল, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে আন্দোলনকারী ছাত্রদের হয়রানি বন্ধ করা, নিখোঁজদের অবিলম্বে ফিরিয়ে দেওয়া এবং কেন তাঁদের ‘গুম’ করা হয়েছিল, তার ব্যাখ্যা দেওয়া, হিংসার সঙ্গে জড়িত মন্ত্রীদের পদত্যাগ এবং তাঁদের বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তী তদন্ত শুরু, হিংসায় জড়িত ছাত্রলীগের নেতাদের পদ থেকে অপসারণ এবং শাস্তি।

Source: Anandabazar