বাংলাদেশের মানুষ দালালদের কখনো ক্ষমা করবে না : মির্জা ফখরুল

  • অনলাইন প্রতিবেদক
  •  ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৪:৫১
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর – ছবি : নয়া দিগন্ত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দালালিরও শেষ আছে। বাংলাদেশের মানুষ দালালদের কখনো ক্ষমা করবে না, নো নেভার।

বুধবার দুপুরে বিএনপির চেয়াপারসনের গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তসহ অন্যান্য বিষয়াদি নিয়ে কথা বলার জন্য এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত আলোচনা ও মতবিনিময়ে রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানের কোনো সম্ভাবনা দেখছে না বিএনপি। তাই নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাব গ্রহণ করছে না দলটি। তবে পত্র প্রেরণের জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে।

সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল কর্তৃক মহাসচিবকে পাঠানো পত্রটির বিষয়ে আলোচনা হয়। পত্রে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপিকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়। সভা মনে করে, বর্তমানের মূল রাজনৈতিক সঙ্কট নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সাথে কোনো আলোচনা অথবা সংলাপ ফলপ্রসু হবে না এবং তা হবে অর্থহীন। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে যে- নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয় এবং ইচ্ছা থাকলেও নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের নেই।

সভায় বলা হয়, পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে জন-জীবন সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। অথচ অবৈধ সরকারের মন্ত্রী এবং শাসক দলের নেতৃবৃন্দের ‘জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে এবং এত মানুষ লাইন দিয়ে ইফতার সামগ্রী কিনছেন প্রমাণ করে যে, তাদের আয় বেড়েছে’ উক্তি জনগণের সাথে নিকৃষ্ট ধরনের মসকরা ছাড়া আর কিছু নয়। রাজনৈতিক দলগুলো বার বার সরকারকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান করলেও সরকার এ ব্যাপারে উদাসীন। সরকারি দলের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও এক শ্রেণীর কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণেই দ্রব্যমূল্য কমানোর কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। এই জনবিচ্ছিন্ন সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি ইতোমধ্যে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সভায় আগামী ১ এপ্রিল হতে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গৃহীত মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকল শাখাকে অনুরোধ জানানো হয়।

সভায়- ২২ মার্চ বাংলাদেশ সরকারের ভূমি দফতরে কর্মচারী সুলতানা জেসমিনকে র‌্যাব কর্তৃক বেআইনীভাবে তুলে নেয়া এবং নির্যাতনের ফলে তার মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

সভা মনে করে, সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে একজন নারীকে কোনো সুনির্দষ্ট মামলা ব্যতিরেকে তুলে নেয়া এবং ফলশ্রুতিতে মৃত্যু আবারো প্রমাণ করেছে এই সরকারের অধীনে কর্মরত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা যথেচ্ছভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেই চলেছে। হাইকোর্ট ইতোমধ্যে বিষয়টি আমলে নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে সকল তথ্য উপস্থাপন করতে নির্দেশ দিয়েছে। সংবাদ মাধ্যমগুলো ইতোমধ্যে এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করছে। এ কথা নিঃসন্দেহে প্রমানিত যে- সুলতানা জেসমিন র‌্যাব হেফাজতে মারা গেছে যা মৌলিক অধিকারের লঙ্ঘন। আন্তর্জাতিক অধিকার সংস্থাগুলো এ বিষয়ে অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্ত অনুষ্ঠানের দাবি জানিয়েছে। সভা অবিলম্বে নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত তথ্য জনসম্মুখে উপস্থাপনের এবং সুলতানা জেসমিনকে হত্যার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাছে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে ফখরুল বলেন, ১৮ সালের নির্বাচনের আগে একবার নয়, দু’বার প্রধানমন্ত্রী সকলের সামনে বললেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে। পুলিশ প্রশাসন ভোটে কোনো কারচুপি করবে না। বারবার করে বলছিলেন। কী লাভ হয়েছে?

সাংবাদিককে আটকের ঘটনায় মির্জা ফখরুল বলেন, এ ধরনের যদি কাজ হয়? কিভাবে সাংবাদিকতা করবেন? তবে দালালিরও শেষ আছে। বাংলাদেশের মানুষ দালালদের কখনো ক্ষমা করবে না, নো নেভার।