বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ ১১২ বিলিয়ন ডলার ছাড়ালো

logo

অর্থনৈতিক রিপোর্টার

(১ দিন আগে) ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ১১:১৭ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ আপডেট: ১২:১৭ পূর্বাহ্ন

mzamin

facebook sharing button

গত জুনে মাসে পাঁচ বিলিয়ন ডলারের বেশি ঋণ পেয়েছে বাংলাদেশ। এতে বিদেশি ঋণ বেড়ে ১১২ দশমিক ১৫ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ২১৫ কোটি ডলার হয়েছে। প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে এই অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকা। এতে দেশের ইতিহাসে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ আবারও নতুন রেকর্ড গড়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমান বৈদেশিক ঋণের মধ্যে প্রায় ৮১ বিলিয়ন ডলারই বেড়েছে গত সাড়ে ১৫ বছরে, আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে। এই সময়ে সরকার আইএমএফ, বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, এআইআইবি-সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা থেকে ব্যাপক হারে ঋণ গ্রহণ করেছে। একইসঙ্গে, বেসরকারি উদ্যোক্তারাও বিদেশি উৎস থেকে কম সুদের ঋণে ঝুঁকেছেন।

গত কয়েকবছর ধরে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের তুলনায় ব্যয় বেশি থাকায় দেশে ডলারের সংকট তৈরি হয়। বিদায়ী সরকারের সময়ে আমদানি নিয়ন্ত্রণ, বিদেশি ঋণ বৃদ্ধি ও বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হলেও রিজার্ভের পতন ঠেকানো সম্ভব হয়নি। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে রিজার্ভে স্থিতিশীলতা এসেছে। প্রবাসী আয় বেড়েছে, পাশাপাশি বিদেশি ঋণের প্রবাহ চালু থাকায় ডলারের বিনিময় হারেও স্থিতিশীলতা দেখা যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জুন মাস (অর্থবছর) শেষে সরকারি ও বেসরকারি খাতে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ১১২ দশমিক ১৬ বিলিয়ন বা ১১ হাজার ২১৬ কোটি ডলার। এই অর্থ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৩ লাখ ৬৮ হাজার ৩৫২ কোটি টাকার সমান (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, গত মার্চ মাসে বিদেশি ঋণের স্থিতি ছিল ১০৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন বা ১০ হাজার ৪৮০ কোটি ডলার। সেই হিসেবে গত তিন মাসের ব্যবধানে বিদেশি ঋণের স্থিতি বেড়েছে ৭৩৬ কোটি ডলার। আর ছয় মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৮৪৩ কোটি ডলার; গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিদেশি ঋণ ছিল ১০ হাজার ৩৭৩ কোটি ডলার।

২০১৫-১৬ অর্থবছর শেষে দেশের বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ ছিল ৪১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ গত ১০ বছরে এই ঋণ বেড়েছে প্রায় তিনগুণ। এর আগে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন ডলার ঋণের মাইলফলক অতিক্রম করে। জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালে বাংলাদেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি ৫৭ লাখ। সেই হিসেবে, মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণ এখন দাঁড়িয়েছে ৬৩৮ ডলার, অর্থাৎ প্রায় ৭৭ হাজার ৪৩৩ টাকা। ১০ বছর আগে এই পরিমাণ ছিল মাত্র ২৫৭ ডলারের কিছু বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, বৈদেশিক ঋণের মধ্যে সরকারি খাতে রয়েছে ৮২ শতাংশ, আর বেসরকারি খাতে রয়েছে প্রায় ১৮ শতাংশ। ২০২৫ সালের জুন শেষে সরকারি খাতের ঋণ দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৩৭ কোটি ডলার, যা মার্চে ছিল ৮ হাজার ৪৯২ কোটি ডলার। অর্থাৎ তিন মাসে সরকারি ঋণ বেড়েছে ৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। অন্যদিকে, বেসরকারি খাতের ঋণ জুন শেষে ছিল ১ হাজার ৯৭ কোটি ডলার, যা মার্চে ছিল ১ হাজার ৯৮ কোটি ডলার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here