বাংলাদেশকে চীনা মুদ্রায় ঋণ নেয়ার প্রস্তাব

বিশ্বব্যাপী চলমান ডলার সংকটের মধ্যে বাংলাদেশকে চীনা মুদ্রায় ঋণ নেয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। গতকাল রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত পরিকল্পনামন্ত্রী মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুস সালামের সঙ্গে সাক্ষাতের পর এই কথা বলেন ঢাকায় চীনের রাষ্ট্রদূত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। বৈঠকের পর চীনা রাষ্ট্রদূতের কাছে জানতে চাওয়া হয়, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের অনুকূলে চীনা ঋণের ছাড় কম কেন?

ইয়াও ওয়েন বলেন, আপনি জানেন (ডলার সংকট) এখন সারাবিশ্বে সমস্যা বিস্তার করছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফাইন্যান্সিয়াল ও মানিটরি পলিসির কারণে সারা বিশ্বেই ডলারের রেট উঠানামা করছে। এর ফলে ডলারে লেনদেনে অনেক দেশের সমস্যা হচ্ছে। চীনও একই সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে এই সমস্যা সমাধানে আগ্রহী। চীনা মুদ্রায় লেনদেন একটা সমাধানের পথ হতে পারে। তাই চীন বাংলাদেশের সঙ্গে নিজস্ব মুদ্রায় (আরএমবি) কাজ (লেনদেন) করতে চায়। আমরা ইতিমধ্যেই সরকারকে আমাদের নিজস্ব মুদ্রায় (লেনদেনে) যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ছয় মাসে বাংলাদেশের অনুকূলে চীনা ঋণের ৩৬ কোটি ১৭ লাখ ডলার ছাড় হয়েছে। গত পুরো ২০২২-২৩ অর্থবছরে চীনা ঋণছাড়ের পরিমাণ ছিল ১১২ কোটি ৬৮ লাখ ডলার।
বৈঠকের পর মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

তার ভাষ্য, বাংলাদেশ ও চীনের উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রায় একই। চীনের মতো বাংলাদেশও পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। চীনের উন্নয়ন কমিশন হিসেবে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিফর্মস কমিটি আছে, বাংলাদেশে পরিকল্পনা কমিশনের কমিটির মতো।  এই দুই কমিটি একসঙ্গে কীভাবে কাজ করতে পারে সেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক এগিয়ে নিতে কাজ করছি। এ সময় পরিকল্পনামন্ত্রী আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের সঙ্গে তাদের যেসব সমস্যাগুলো আছে, সেগুলোর সমাধানে আলাপ হয়েছে। চীনের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা রয়েছে, আমাদেরও আছে। সেসব বিষয়ে কীভাবে অভিজ্ঞতা বিনিময় করা যায়, তা নিয়েও কথা হয়েছে।

সূত্র : মানবজমিন