উচ্চ পর্যায়ে মনিটরিং কমিটি গঠন * ফৌজদারি অপরাধ বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু দুদকের
বাংলাদেশ বিমানসহ ৬ এয়ারলাইন্সের কাছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্র্তৃপক্ষের (বেবিচক) পাওনা বকেয়া রয়েছে ৯ হাজার কোটি টাকারও বেশি।
বছরের পর বছর পড়ে থাকা এ অর্থ আদায়ে অনেক চিঠি চালাচালি হলেও গা করছে এয়ারলাইন্সগুলো। অবশেষে কঠোর হচ্ছে সরকার।
বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আহমেদ জামিল স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ১২ মার্চ মনিটরিং কমিটি গঠনে নাম মনোনয়নের জন্য বলা হয়েছে। ৬ সদস্যের এ কমিটির আহবায়ক হবেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (বিমান ও সিএ)। সদস্য থাকবেন বেবিচকের পরিচালক (অর্থ), পরিচালক ও উপপরিচালক পদমর্যাদার দুই কর্মকর্তা এবং আইন কর্মকর্তা। সদস্য সচিব থাকবেন মন্ত্রণালয়ের সিএ-৩ এর একজন উপসচিব।
পৃথক চিঠিতে দুদক দ্রুত বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থতার জন্য চুক্তিপত্রে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার শর্ত সন্নিবেশ করতে বেবিচককে চিঠি দিয়েছে। এছাড়া এয়ারলাইন্সগুলোর কাছে বেবিচকের বকেয়া রাজস্বের হিসাব বিবরণী প্রতি মাসে অবশ্যই প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে।
দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিমানসহ ৬ এয়ারলাইন্সের কাছে বেবিচকের অন্তত ৯ হাজার কোটি টাকা বকেয়া পড়ে আছে। বেবিচকের একটি চক্র এ টাকা আদায়ও করছে না, আবার সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থাও নিচ্ছে না। এ সংক্রান্ত চুক্তিপত্রেও অসংগতি রয়েছে। যার কারণে কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ারও সুযোগ নেই। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, বিমানসহ ৬ এয়ারলাইন্সের কাছে দেশের বাইরে কোনো বকেয়া নেই। যত বকেয়া ও অনিয়ম সব দেশে। কোম্পানিগুলো শত শত কোটি টাকা আয় করছে, কিন্তু সরকারের টাকা পরিশোধ করছে না।
পুঞ্জীভূত বকেয়া নিয়ে গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিবের দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছিল দুদক। এরপর প্রাথমিক অনুসন্ধান শেষে বকেয়া আদায়ে বেশকিছু সুপারিশ বাস্তবায়নে ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি।
দুদক সচিব মাহবুব হোসেন স্বাক্ষরিত চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার এয়ারলাইন্স, জিএমজি এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, রিজেন্ট এয়ারওয়েজ, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের কাছে বেবিচকের ৮ হাজার ৮২৫ কোটি ১ লাখ ১০ হাজার ৯৫১ টাকা বকেয়া রয়েছে। এ বকেয়া আদায়ে নিম্নোক্ত সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সিদ্ধান্তগুলো হলো-সব এয়ারলাইন্সের সঙ্গে দেশের সব বিমানবন্দরের কক্ষ/জমিজমার ইজারার পাশাপাশি আন্তঃঅবতরণ, বোর্ডিং চার্জ, এম্বারকেশন, বিদ্যুৎ, পানি, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন ফির বিষয়ে চুক্তিপত্র যথাশিগগির সম্পাদন করা এবং চুক্তিপত্রে বর্ণিত অন্যান্য শর্তের সঙ্গে বকেয়া পরিশোধে ব্যর্থতার জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের শর্ত সন্নিবেশ করা, এয়ারলাইন্সগুলোর কাছে বেবিচকের বকেয়া রাজস্বের রিকনসাইন হিসাব বিবরণী প্রতি মাসে অবশ্যই প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা। বকেয়া আদায়ের ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয় ও বেবিচকের সমন্বয়ে মনিটরিং সেল গঠন করার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা। অভিন্ন মন্তব্য ও সুপারিশ করে বেবিচককে চিঠি দিয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ও।