- গোয়ালন্দ ও বালিয়াকান্দি (রাজবাড়ী) সংবাদদাতা
- ১৫ জুলাই ২০২১
লকডাউনের কারণে দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকার পর গণপরিবহন চালু হওয়ায় দৌলতদিয়া ঘাটে যানজট দেখা দিয়েছে। একইসাথে কোরবানির পশুবাহী ট্রাকের চাপ বেড়েছে দৌলতদিয়া ঘাটে। ফলে প্রচণ্ড রোদে তীব্র গরমে পদ্মার দু’পাড়ে আটকে থাকা যাত্রীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি ট্রাকে থাকা গরুগুলো নিয়ে বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
এ সময় ঘাটের লোকজন জানায়, দীর্ঘদিন পর স্বরূপে ফিরেছে দৌলতদিয়া ঘাট। কঠোর বিধিনিষেধ ও লকডাউনে রোজার ঈদের পর দৌলতদিয়া ঘাট অনেকটা ফাঁকা ছিল। এ সময় নদী পারের জন্য কোনো যানবাহন মহাসড়কে সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়নি। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সেই পুরনো দৃশ্যের অবতারণা হয়। ফেরির জন্য প্রতিটি যানবাহনকে মহাসড়কে অপেক্ষা করতে হয় দীর্ঘ সময়। বিকেল সাড়ে ৩টা নাগাদ দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে অন্তত তিন কিলোমিটার দূরে বাংলাদেশ হ্যাচারিজ পর্যন্ত সৃষ্টি হয় যানবাহনের দীর্ঘ সারি। ধীরে ধীরে বাড়ছে যানবাহনের সংখ্যা। আরো দীর্ঘ হচ্ছে যানজট।
আটকে থাকা যানবাহনের যাত্রীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি প্রচণ্ড গরমে কোরবানির জন্য ঢাকাসহ আশপাশের জেলায় ট্রাকে করে বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া গরুগুলোর অবস্থাও বেগতিক। গরু ব্যবসায়ীরা রোদ ও গরমে অস্থির হয়ে পড়েছেন। বেশির ভাগ গরু অসুস্থ গরমে হাঁসফাঁস করছে। এমন পরিস্থিতিতে হাতপাখা নিয়ে গরুকে বাসাত দিতে দেখা গেছে ব্যবসায়ীদের।
বাসচালক মো: আয়নাল পাটোয়ারী বলেন, দীর্ঘ দিন পর পরিবহন চালানো সুযোগ পেয়েছি। এতদিনে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু দৌলতদিয়া ঘাটের দুর্ভোগের চিত্র একই আছে। প্রায় ঘণ্টা দুয়েক আগে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় এসেছি। প্রচণ্ড গরমে বাসের মধ্যেই বসে থাকতে হচ্ছে। যাত্রীরা অধর্য্য হয়ে পড়ছেন। কিন্তু কিছুই করার নেই। জানি না কখন ফেরির নাগাল পাব।
কুষ্টিয়ার গরু ব্যবসায়ী আব্দুল গফফার বেপারীসহ অনেকেই জানান, লাখ লাখ টাকার গরু নিয়ে তারা বেশি দামে বেচার আশায় ঢাকায় যাচ্ছেন। কিন্তু দৌলতদিয়া ঘাটে ফেরির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। এতে গরুগুলো বাঁচিয়ে রাখাই দায়। কারণ এসব গরু তো খুব বেশি কষ্ট সহিষ্ণু জাত না। ফলে গরুগুলো প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। একটি গরুর কোনো দুর্ঘটনা হলে ওই ব্যবসায়ীর অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যাবে।
বিআইডব্লিউটিসির স্থানীয় সূত্র জানায়, এক সাথে বিপুল সংখ্যক যানবাহন নদী পারাপার হতে আসায় দৌরতদিয়া ঘাট এলাকায় নদী পারের অপেক্ষায় যানবাহনগুলো সিরিয়ালে আটকা পড়েছে। দুর্ভোগ কমাতে যাত্রীবাহী যানবাহন ও কোরবানির পশুবাহি ট্রাকগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে।
বিআইডাব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) শিহাব উদ্দিন জানান, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ছোট বড় ১৫টি ফেরি চলাচল করছে। ঈদুল আজহা উপলেক্ষ দু-একদিনের মধ্যে আরো দু’টি রোরো ফেরি এ নৌরুটে যুক্ত হবে। এছাড়া ৩ নম্বর ফেরি ঘাটটি সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ রেখে মেরামত কাজ করা হচ্ছে। ঘাটটি সচল হলে যানজট কমে আসবে বলে তার ধারণা।