ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন পশ্চিমা বিশ্বে কেন অপরাধ?

বেরিয়া এলামুদিন : উদার, গণতান্ত্রিক পশ্চিমা বিশ্বের একেবারে গোড়ার বিশ্বাস হলো মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার নিয়ে কথা বলার অধিকার। কিন্তু হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের যাঁরা ফিলিস্তিনপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি লালন করেন, তাঁদেরকে চাকরির ক্ষেত্রে কালো তালিকায় রাখা হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়েছে।

ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করেছেন। ফ্রান্সে বসবাসকারী ভিনদেশিদের মধ্যে কেউ যদি ‘সেমেটিক-বিরোধী কর্মকাণ্ড’ করে, তাঁকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন তিনি। একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে জার্মানিতে। পশ্চিমা বিশ্বের অন্যখানেও একই অবস্থা। ব্রিটেনের উন্মাদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান প্রকাশ্যেই বর্ণবাদী কথাবার্তা বলে সমালোচিত হন। তিনি ব্রিটেনের জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তাকে বলেছেন, কেউ যদি ফিলিস্তিনি পতাকা ওড়ায় অথবা আরবপন্থী স্লোগান দেয়, তাহলে সেটা অপরাধ বলে গণ্য করা হবে।

হামাস ইসরায়েলি শিশুদের, বন্দীদের ও বেসামরিক লোকদের হত্যা করেছে। এটা ন্যক্কারজনক ও ভুল পদক্ষেপ। এ হামলা ফিলিস্তিন ইস্যুকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এ ঘটনার সূত্র ধরে পুরো ফিলিস্তিনি জাতির ওপর বিভীষিকা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। পশ্চিমা রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমে উৎকটভাবে ইসরায়েলপন্থী ভাষা ব্যবহার করে চলেছে কিন্তু গাজায় যে গণহত্যা চলছে, তার জন্য সমান মাত্রার নৈতিক অবস্থান দেখা যাচ্ছে না।

পশ্চিমা বিশ্বে ইসরায়েলের প্রতি সমর্থন মহৎ ও পবিত্র বিষয় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সমর্থন সন্দেহজনক, বিপজ্জনক ও সম্ভাব্য অপরাধ বলে মনে করা হয়। দুই পক্ষের একটি রক্তাক্ত নৃশংসতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। একেকজন ইসরায়েলি হত্যার ঘটনার পর অনিবার্যভাবেই আগের চেয়ে ধ্বংসাত্মক সামরিক অভিযানের মাধ্যমে নির্বিচার পুরো জনগোষ্ঠীর ওপর প্রতিশোধ নেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপে জনতুষ্টিবাদি অতিডানপন্থী রাজনীতিবিদ এবং গণমাধ্যম বিদ্বেষপ্রসূতভাবে ও অনৈতিকভাবে তাদের উদারনীতিবাদ-বিরোধী সাংস্কৃতিক যুদ্ধে ফিলিস্তিন ইস্যুকে ব্যবহার করে। দুই পক্ষের মধ্যে তারা উত্তেজনা ছড়ায়। ইহুদি ও মুসলমান—দুই সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালাতে তারা ঘৃণ্যভাবে প্ররোচনা দেয়।