রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে পুলিশের বাধায় মানবপ্রাচীর কর্মসূচি পালন করতে পারেনি বলে জানিয়েছেন গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’।
‘মায়ের ডাক’-এর সদস্যরা বলেন, শাহবাগে দাঁড়িয়ে কর্মসূচি পালন করলে তাঁদের লাঠিপেটা করে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে পুলিশ। পরে তাঁরা জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গিয়ে কর্মসূচি পালন করেছেন।
তবে পুলিশ বলছে, শাহবাগ ক্রসিংয়ে বসে পড়লে যানজট তৈরি হওয়ার আশঙ্কায় তাঁদের দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি। তাঁরা স্বেচ্ছায় প্রেসক্লাবের সামনে চলে গেছে। জোর করে সরিয়ে দেওয়া হয়নি।
আগামীকাল রোববার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। এই দিবস উপলক্ষে ‘মায়ের ডাক’ ‘গুম-খুন, ক্রসফায়ার, কারা নির্যাতন বন্ধ করো! মানবাধিকার লঙ্ঘন রুখে দাঁড়াও!’ শীর্ষক মানবপ্রাচীর অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
‘মায়ের ডাক’-এর সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম বলেন, ‘দেশের যেকোনো জায়গায় দাঁড়ানোর অধিকার আমাদের আছে। আজ শাহবাগে জাদুঘরের সামনে আমাদের দাঁড়াতে দেওয়া হয়নি। এখানে গুমের শিকার সন্তানদের মায়েরা ছিলেন, আমরা যারা স্বজন রয়েছি, তাঁরা ছিলাম। কোন কারণে আমাদের শাহবাগে দাঁড়াতে দেওয়া হলো না, সেটা সরকার জানে। সরকারের যে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তারা জানে।’
সানজিদা ইসলাম আরও বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছে, এখানে (শাহবাগ) দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারব না। আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম। পুলিশ দিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘এই সরকার গুম খুনের বিচার তো করছেই না, উল্টো অন্যায় অত্যাচার ও গণগ্রেপ্তার চালিয়ে যাচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের চরম পর্যায়ে আমরা আছি। আমাদের কথা শোনার মতো সাহসও নেই সরকারের।’
এই অভিযোগের ব্যাপারে পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, শাহবাগে এখন কাউকেই এভাবে কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হয় না। কারণ, শাহবাগ একটি ব্যস্ত এলাকা। কর্মসূচি পালনের নামে ক্রসিংয়ে যদি মানুষজন বসে পড়েন, তাহলে পুরো এলাকায় যানজট তৈরি হয়। সেখানে কেউ বসে পড়ার ঝুঁকি থাকলেই সরিয়ে দেওয়া হয়।
‘মায়ের ডাক’ সংগঠনটি শাহবাগ ক্রসিং নয়, জাদুঘরের সামনে দাঁড়িয়েছিল। এ ব্যাপারে ডিসি মুহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, এর আগে বিভিন্ন সময় অনেক সংগঠন ক্রসিংয়ে বসে পড়েছিল। এমন আশঙ্কা থাকায় তাঁদের বসতে দেওয়া হয়নি।
প্রথম আলো