পুরোপুরি প্রস্তুতি নিয়ে শ্রীলংকার বিপক্ষে খেলতে চায় বাংলাদেশ


করোনাভাইরাসের কারণে গেল মার্চ থেকে মাঠের বাইরে থাকলেও পুরোপুরিভাবে প্রস্তুতি হয়েই শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)।

তবে সম্পূর্ণ প্রস্তুতির সুযোগ পাওয়ার ক্ষেত্রে টাইগারদের সামনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রীলংকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোভিড-১৯ নিয়ম-কানুন। সফরকারী দেশের জন্য শ্রীলংকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ দিয়েছে, তবে বিসিবি ও লংকান ক্রিকেট সাত দিনের কোয়ারেন্টাইনের বিষয়ে একমত হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিকল্পনায় ছিল কোয়ারেন্টাইন চলাকালীনই নিজেদের প্রস্তুতি সাড়া। কিন্তু শ্রীলংকার সর্বশেষ সিদ্বান্ত অনুসারে, বাংলাদেশ দলকে হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। জাতীয় দল ও হাই পারফরমেন্সের (এইচপি) ৬০ জন খেলোয়াড়ের সাথে অফিসিয়ালদের পাঁচ তারকা হোটেলে ১৪ দিন রাখা, বিসিবির জন্য যথেষ্ট কঠিন।

যেহেতু জাতীয় দল ও এইচপি দল নির্ধারিত সময়ের আগেই শ্রীলংকায় পৌঁছাবে, সিরিজের জন্য স্বাগতিকরা দায়িত্ব নেয়ার আগে প্রথম দিকে দু’দলের যাবতীয় খরচ বিসিবিকেই বহন করতে হবে।

তবে সমাধানের ব্যাপারে আলোচনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিসিবির ডিরেক্টর নাইমুর রহমান দূর্জয়, এমপি।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক দূর্জয় আজ বলেন,‘ শ্রীলংকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের নির্দেশ থাকলেও ‘দু’টি বোর্ড সাত দিনের কোয়ারেন্টাইনে একমত হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ আমরা কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালীন অনুশীলন করার চিন্তা করেছিলাম, কিন্তু এটি করা যাচ্ছে না। আমরা আমাদের সব কিছু জানিয়েছি। তবে এটি শ্রীলংকা ক্রিকেট বোর্ডে নিয়ন্ত্রণে নেই। তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও আর্মিদের এখানে অর্ন্তভুক্ত আছে। তারা এই সফরের সদস্য সংখ্যা কমানোর কথাও ভাবছেন। এটিও একটি বিষয়। কিন্তু আমরা সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর তথ্য দিয়েছি।’

শ্রীলংকা বোর্ড প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য বাংলাদেশকে কোন দল দিতে পারছে না। আমাদের জাতীয় ও এইচপি দল নিজেদের মধ্যে দু’টি অনুশীলন ম্যাচ খেলবে।

সফরের আগে যখন বেশ কিছু ইস্যু তৈরি দেখা দেয়ায় সিরিজ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিলেও সেটা মানতে রাজি নন দূর্জয় ।

গেম ডেভলপমেটে কমিটির চেয়ারম্যান দূর্জয় বলেন, ‘উদ্বেগের কারণ নেই। আপনি আসলে খেলতে চান, তবে সেখানে খেলার পরিবেশ থাকতে হবে। সেই পরিবেশটি তৈরি হয়েছে এবং আমরা সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়েই খেলতে যাচ্ছি। ছয়-সাত মাস পর টেস্ট ম্যাচ খেলবো এবং যদি আমরা পুরোপুরিভাবে প্রস্তুতি নিতে না পারি, তবে তা খুব কঠিন হবে। উভয়ই বোর্ড আন্তরিক যাতে আমরা মাঠে নামতে পারি।’

তিন ম্যাচের সিরিজটি আইসিসি বিশ্বকাপ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের অংশ হওয়ায়, বাংলাদেশকে সিরিজটি খেলতে হবে বলে দূর্জয় করেন। আর যদি সিরিজটি মিস করা হয়, তবে পরবর্তীতে সিরিজ খেলার জন্য সুযোগ পাওয়া কঠিন হয়ে যাবে।

তিনি আরো বলেন, ‘এই সিরিজটি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপের অংশ, তাই জাতীয় দলকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে আমরা যদি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশীপটি মিস করি, তবে পরবর্তীতে নতুন সূচি বের করা কঠিন হয়ে পড়বে। তাই জাতীয় দলের জন্য টেস্ট সিরিজটি অনেক বেশি গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।’

দূর্জয় আরও বলেন, ‘আমাদের এখনো জাতীয় দল ও এইচপি দলের একত্রে শ্রীলংকা খেলানোর পরিকল্পনা রয়েছে। শ্রীলংকা বোর্ড এবং আমাদের বোর্ড বেশ কিছু বিষয়ে একমতে পৌঁছেছে। তবে শ্রীলংকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কিছু পর্যবেক্ষণ করেছে, এজন্য আমাদের কিছুটা ধীরগতিতে চলতে হচ্ছে। আমরা আজ বৈঠক করেছি। আমরা সব কিছু লংকান বোর্ডকে জানাবো। এরপর শ্রীলংকা বোর্ড তাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে যোগাযোগ করে আমাদের জানবে।’