আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন- এখন কোয়ার্টার ফাইনাল, সামনে সেমিফাইনাল, ফাইনাল হবে জানুয়ারিতে। খেলা হবে সারা বাংলায়। এখনই ক্লান্ত হলে চলবে না। আজ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমেরিকার মুরুব্বিদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়ে গেছে। তলে তলে সব হয়ে গেছে। এসব করে লাভ নেই।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির সমাবেশ সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন- মির্জা ফখরুলের সর্বশেষ বক্তৃতা শুনে মনে হলো, মির্জা ফখরুল এখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মরা লাশ নিয়ে টানাটানি করছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার মরা লাশ।
আজিমপুরের গোরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত। গোরস্থান থেকে ফখরুল এখন ওই মরা লাশ টেনে আনছেন। এই মরা লাশের মুক্তি আসবে না। মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন হবে বাংলাদেশে। বঙ্গবন্ধুর কন্যা বেঁচে থাকলে এই দেশে নির্বাচন কেউ বন্ধ করতে পারবে না। নির্বাচন হবে, শান্তিপূর্ণ হবে। এদেশে নজীরবিহীন উন্নয়ন করেছেন শেখ হাসিনা। এদেশে নজিরবিহীন নিরপেক্ষ নির্বাচন শেখ হাসিনাই করবেন। নজিরবিহীন নিরপেক্ষ নির্বাচন হবেই। ফখরুল সাহেব নির্বাচনে না আসলে আমও যাবে, ছালাও যাবে। দুইটাই হারাবেন। দুনিয়াব্যাপী আপনারা বদনাম করেছেন, দেশে দেশে বদনাম করছেন, বদনাম ঘোচানোর জন্য শেখ হাসিনা এমন নির্বাচন করবেন, যে নির্বাচন হবে নজিরবিহীন। ফখরুল সাহেব হারালে আর পাবেন না।
২০০৪ সালের ২১শে আগস্টকে স্মরণ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকে এখানে দাঁড়ালে বিএনপি’র সেই নৃশংস চরিত্র আমাদের চোখের সামনে আসে। এই বিএনপি ওই বিল্ডিং থেকে গ্রেনেড মেরে আমাদের নেত্রীকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আমাদের ২৩টি প্রাণ সেদিন রক্তাক্ত করেছিল। আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছিল। এই সেই বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, এখানে এলে বিএনপি কতো ভয়ঙ্কর, বিএনপি কতো নিষ্ঠুর, সেই ছবি আমরা বারবার দেখতে পাই। কাজেই প্রস্তুত থাকতে হবে, সবদিক থেকেই খেলা হবে। ওরা ফাউল করবে, ফাউলের জবাব দিতে হবে। লাল কার্ড দেখাতে হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সেদিন বলেছিলাম রূপপুর ইউরেনিয়ামের চালান আসছে। ফখরুল, মির্জা আব্বাস, মঈন খানরা বলে- রূপপুর বন্ধ করে দেবে। ইউরিনিয়াম যেটা আছে সেটা সারা দুনিয়ায় স্বীকৃত। এই রূপপুর পরমাণবিক বিদ্যুৎ, আমরা ইউরেনিয়াম ক্লাবে তেত্রিশ নম্বরে যুক্ত হয়েছি। এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র যারা বন্ধ করে দিতে চায়, আমরা এত কোটি কোটি টাকার ইউরিনিয়াম কেন আনলাম, এজন্য বলেছি ওদের মাথার ওপর ঢালবো। ফখরুল মির্জা আব্বাসরা গরম হয়ে যায়, তাই তাদের মাথার ওপর ঢালতে হবে। বিএনপিকে আমেরিকা রোগে পাইছে জানিয়ে সেতুমন্ত্রী বলেন, আর কাউকে তো পায় না। ওইভাবে আমেরিকানরাও আসে না। পাত্তা দেয় না। দৌড়ে যায় পিটার হাসের কাছে। সকালে ঘুম থেকে উঠে পিটার হাস, দুপুরে লাঞ্চ করতে যায় পিটার হাস, রাতে ডিনার করতে যায় পিটার হাস। আমি জানি না পিটার হাস ফখরুলকে কী স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তবে ক্ষমতার স্বপ্ন দেখিয়ে কোনো লাভ নেই।
ফখরুল সাহেব দিল্লি বহুদূর। ক্ষমতার পথ আপনারাই বন্ধ করে দিয়েছেন। পিটার হাস সাহেব কী করবেন? ভিসা নীতি দেবেন? কী করবেন, নিষেধাজ্ঞা দেবেন? পিটার হাস সাহেবের মুরুব্বিদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়ে গেছে। আমেরিকার মুরুব্বি যারা তাদের সঙ্গে কথাবার্তা শেষ। উচ্চপর্যায়েও কথাবার্তা হয়ে গেছে। তলে তলে যখন সব শেষ তখন আর এসব করে লাভ কি? পিটার হাসকে দেখিয়ে নির্বাচন বন্ধ করবেন, ঢাকায় তাণ্ডব করবেন, সেই খেলা খেলতে দেবো না। সেই খেলা সন্ত্রাসের খেলা, বিএনপিকে কোনো খেলা খেলতে দেবো না।
মানব জমিন