পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন পিএমএল-এন ও পিপিপির নেতারা। ওই বৈঠকে ‘দেশকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থেকে রক্ষায়’ দুই পক্ষের মধ্যে মতৈক্য হয়েছে বলে পিএমএল-এনের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।
পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফ আজ রোববার দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে লাহোরে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির বাসভবনে যান। সেখানে দুই পক্ষ দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
দুই দলের শীর্ষ নেতারা রাজনৈতিক সমঝোতার বিষয়ে একমত হন উল্লেখ করে পিএমএল-এনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে রাজনৈতিক সহযোগিতার জন্য নেতারা একমত হয়েছেন।’
এদিকে ওই বৈঠকের পর পিএমএল-এন ও পিপিপি একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে বলে জিও নিউজ জানিয়েছে। যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পিএমএল-এন প্রেসিডেন্ট শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে পিএমএল-এনের একটি প্রতিনিধিদল পিপিপি চেয়ারম্যান বিলওয়াল ভুট্টো জারদারি ও কো-চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারির সঙ্গে বৈঠকে সরকার গঠনে তাঁদের সহযোগিতা চেয়েছেন। জবাবে পিপিপি নেতৃত্ব পিএমএল-এন নেতাদের বলেছেন, প্রস্তাবটি নিয়ে তাঁদের দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির (সিইসি) বৈঠকে আলোচনা করা হবে। সোমবার ওই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বৈঠকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতে রাজনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পিএমএল-এন ও পিপিপি রাজনৈতিক সহযোগিতার নীতিতে একমত হয়েছে। উভয় পক্ষ দেশকে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা থেকে রক্ষায় একমত হয়েছে।’
পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই দলগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতার দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি ৯৩ আসনে জয় পেয়েছেন।
এরপর ৭৫ আসন নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে পিএমএল-এন এবং ৫৪ আসন নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পিপিপি। এই দুই দলের সমঝোতা হলে স্বতন্ত্র ও অন্যান্য ছোটখাটো দলের সমর্থন নিয়ে তারাই সরকার গঠন করবে।
এই দুই দলসহ আরও কয়েকটি দলের সমন্বয়ে গড়ে তোলা পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্টের (পিডিএম) চাওয়ার মুখেই ২০২২ সালে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন পিটিআই প্রধান ইমরান খান। পিডিএম পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনলে ভোটে হেরে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হন ইমরান। এরপর পিডিএমই সরকার গঠন করেছিল। সেই সরকারে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শাহবাজ শরিফ আর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে বসেছিলেন বিলাওয়াল।
এর আগে কয়েকটি রাজনৈতিক সূত্র জিও নিউজকে জানিয়েছিল, পিপিপির কো-চেয়ারম্যান জারদারি ইতিমধ্যে নওয়াজ শরিফ নেতৃত্বাধীন পিএমএল-এনের সঙ্গে জোট করতে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। তবে শর্ত হিসেবে সরকারে প্রধানমন্ত্রী পদে বিলাওয়ালকে দেখতে চেয়েছেন। তবে এ বিষয়ে এখনো পিএমএল-এনের পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি।
প্রথম আলো