Prothom Alo
খুলনা

সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি ছাড়া জনগণ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেছেন, নির্বাচনের আগে প্রশাসনিক ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে, লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে এবং আওয়ামী লীগের বিচার করতে হবে। জুলাই সনদ জুলাই মাসেই ঘোষণা করতে হবে।
সোমবার বিকেলে ডুমুরিয়া উপজেলার বানিয়াখালী বাজারে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন জামায়াত সেক্রেটারি। দিনব্যাপী কর্মসূচিতে বসুন্দিয়া বাজার, শরাফপুর, ভুলবাড়িয়া, গজেন্দ্রপুর, বানিয়াখালীসহ বিভিন্ন স্থানে পথসভা, মতবিনিময় ও গণসংযোগে তিনি অংশ নেন।
জুলাই বিপ্লবকে কোনোভাবেই ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না উল্লেখ করে গোলাম পরওয়ার বলেন, খুনিদের দৃশ্যমান বিচার নিশ্চিত করতে হবে। গণ–অভ্যুত্থানে যাঁরা আহত ও নিহত হয়েছেন, তাঁদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সরকারের ভেতরে কোনো ফ্যাসিবাদী থাকতে দেওয়া যাবে না। আসন্ন নির্বাচন শুধু একটি নির্বাচন নয়; এটি একটি বিপ্লব-পরবর্তী জন–আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলনের সুযোগ। ফ্যাসিস্টদের বিচার এবং প্রয়োজনীয় সংস্কারের মধ্য দিয়েই একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব।
ইতিমধ্যে দেশ নির্বাচনী ট্রেনে উঠেছে উল্লেখ করে জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, প্রার্থীগণ প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় প্রার্থীদের ওপর হামলা, পোস্টার–ব্যানার ছিঁড়ে ফেলার ঘটনা ঘটছে। প্রশাসন নিরপেক্ষ না হলে নির্বাচনকে অবাধ ও সুষ্ঠু করা যাবে না। কোনো বিশেষ দল বা গোষ্ঠীর প্রতি মাঠপর্যায়ের প্রশাসন দুর্বল থাকলে প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। এ বিষয়ে সরকারকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
সরকারকে সতর্ক করে গোলাম পরওয়ার জানান, যেনতেনভাবে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠান করলেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা পায় না, বরং সমস্যার গভীরতা আরও বাড়ে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর সহযোগিতা চাইলে করা হবে। তিনি বলেন, বাংলাদেশকে একটি কল্যাণরাষ্ট্রে রূপান্তর করতে এবং ইনসাফভিত্তিক শাসন প্রতিষ্ঠায় জামায়াত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জনগণের মুখে হাসি ফোটানো, জীবনমান উন্নয়ন এবং মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় জামায়াত সক্রিয় ভূমিকা রাখতে চায়।
গণ–অভ্যুত্থানে সংঘটিত সহিংসতার প্রসঙ্গে জামায়াত সেক্রেটারি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও তাঁর বোন রেহানা পালিয়ে যাওয়ার আগমুহূর্তে দুই হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করা হয়েছে। আরও প্রায় ২০ হাজার আহত হয়ে অন্ধ ও পঙ্গু হয়েছেন। এখনো অনেকে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন।
গত ১৫ বছরে দেশের মানুষ প্রকৃত অর্থে ভোট দিতে পারেনি উল্লেখ করে গোলাম পরওয়ার বলেন, সরকারের কাছে দাবি, গুম ও খুনের বিচার, আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। অন্যথায় জনগণ সেই নির্বাচন গ্রহণ করবে না।
এসব আয়োজনে আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম কুদ্দুস, উপজেলা আমির মাওলানা মুখতার হুসাইন, নায়েবে আমির মাওলানা হাবিবুর রহমান, গাজী মো. সাইফুল্লাহ, আবুল খায়ের প্রমুখ।