পারল না ‘চোকার’ দক্ষিণ আফ্রিকা, ফাইনালে অস্ট্রেলিয়া

বরাবরের মত এই বিশ্বকাপেও ভালো দল নিয়ে খেলতে এসেছিল প্রোটিয়ারা। গ্রুপ পর্বে ৯ ম্যাচের মধ্যে সাতটি ম্যাচে জয় পেয়ে সেমিফাইনাল খেলেছে। কিন্তু এবারও ‘চোকার’ তকমা ঘোচাতে পারল না দক্ষিণ আফ্রিকা। ভাগ্য দেবীর কাছে এবারও হতাশ হতে হল তাদের। হাইভোল্টেজ সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে চুপসে গেল চোকার্স খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকা। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে প্রোটিয়াদের ৩ উইকেটে হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। এবার নিয়ে পাঁচবার সেমিফাইনাল খেলল আফ্রিকার এই দেশটি। দুর্ভাগ্য, যেখানে একবারও ফাইনাল খেলার সুযোগ মেলেনি তাদের।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে ডি ককরা। শেষ পর্যন্ত মিলারের সেঞ্চুরিতে ৪৯.৪ ওভারে ২১২ রানে থামে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ১৬ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর ফেলে ওয়ার্নার-স্মিথরা। আগামী ১৯ নভেম্বর আহমেদাবাদের ফাইনালে স্বাগতিক ভারতের মুখোমুখি হবে ক্যাঙ্গারুরা।

২১৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা এনে দেয় অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার ও ট্রাভিস হেড। ৬ ওভারেই তুলে ফেলে ৬০ রান। এরপরই ঘটে ছন্দপতন। ৬০ রানের সময় ওয়ার্নার ২৯ রানে, ৬১ রানের মাথায় মিচেল মার্শ শূন্যরানে ও দলীয় ১০৬ রানে ট্রাভিস হেড ফেরেন ৯ চার ও ২ ছক্কায় ৬২ রান করে।

দলীয় ১৩৩ রানের মাথায় লাবুশানে ফেরেন ১৮ রান করে। ৪ রানের ব্যবধানে ফিরে যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এরপর জশ ইংলিসকে নিয়ে দলকে টানেন স্মিথ। ষষ্ঠ উইকেটে তারা দলীয় সংগ্রহে যোগ করেন ৩৭ রান। দলীয় ১৭৪ রানে স্মিথের বিদায়ে ষষ্ঠ উইকেট হারায় অসিরা। ২ চারে ৩০ রান করেন স্মিথ। এরপর স্টার্ককে নিয়ে জুটি গড়ার চেষ্টা করেন ইংলিস। ১৯৩ রানের মাথায় কোয়ের্টজে বলে ইংলিস(২৮) বোল্ড হলে লড়াইয়ে ফিরে প্রোটিয়ারা। শেষ পর্যন্ত প্রোটিয়াদের কাছ থেকে ম্যাচটি ছিনিয়ে নিয়েছেন মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স। তাদের ২২ রানের জুটিতে ১৬ বল আগেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে অসিরা। ১৬ রানে স্টার্ক ও কামিন্স অপরাজিত থাকেন ১৪ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে দুটি করে উইকেট নেন কোয়ের্টজে ও শামসি। একটি করে শিকার করেন রাবাদা, মার্করাম ও মহারাজ।

এর আগে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ২৪ রানে টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটারকে হারায় দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রোটিয়া শিবিরে প্রথম ধাক্কা লাগে অধিনায়ক বাভুমা ফিরলে। তিনি শূন্য করে ফিরে যান। এরপর ডি কক ১৪ বলে মাত্র ৩ রান করে সাজঘরে হাঁটা দেন। পরে এইডেন মার্করাম ১০ ও তিনে নামা রেসি ফন ডার ডুসন ৬ রান করে আউট হন।

এরপর ক্রিজে আসা ডেভিড মিলারকে নিয়ে দেখেশুনে ব্যাট করতে থাকেন হেনরিখ ক্লাসেন। ১৪তম ওভারে বৃষ্টির হানা দিলে ম্যাচ বন্ধ হয়। বৃষ্টি থামার পর মিলার ও ক্লাসেন মিলে বিপর্যয় সামাল দেন। ৯৫ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। দলীয় ১১৯ রানে ৪৮ বলে ৪৭ রান করে আউট হন ক্লাসেন। তার বিদায়ের পরই ফিরে যান মার্কো জানসেন। এরপর ক্রিজে আসা গেরাল্ড কোয়েটজে নিয়ে ৫২ রানের জুটি গড়েন মিলার। দলীয় ১৭২ রানে ৩৯ বলে ১৯ রানে আউট হন কোয়ের্টজে। এরপর ক্রিজে এসেই ফিরে যান কেশব মহারাজ।

একপ্রান্তে উইকেট হারালেও অন্যপ্রান্ত আগলে রেখে ১১৫ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন মিলার। সেঞ্চুরি পূর্ণ করেই আউট হন তিনি। ১১৬ বলে ১০১ রান করেন মিলার। শেষ ব্যাটার হিসেবে কাগিসো রাবাদা আউট হলে ২ বল বাকী থাকতে ২১২ রানে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স।

সমকাল