নিজস্ব প্রতিবেদক
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় পলাতক সাবেক যুবলীগ নেতা কাজী আনিসুর রহমানের ঢাকার কলাবাগানের পাঁচতলা একটি ভবন, দুটি ফ্ল্যাট এবং পাঁচটি দোকানসহ বিপুল সম্পদ জব্দ করার কথা জানিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
কম্পিউটার অপারেটর থেকে যুবলীগের বিগত কমিটির দপ্তর সম্পাদকের চেয়ারে বসা কাজী আনিসের গোপালগঞ্জের মোকসেদপুরের বাড়ি-পেট্রোল পাম্পসহ অন্যান্য সম্পদও জব্দ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুদকের পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য।
গত বছর সেপ্টেম্বরে র্যাবের অভিযানে ঢাকার বিভিন্ন ক্রীড়া ক্লাবে ক্যাসিনো কারবারে যুবলীগ নেতাদের সম্পৃক্ততার তথ্য বেরিয়ে আসে। ক্যাসিনোকাণ্ডসহ নানা অনিয়মে যুবলীগের সামনের সারির কয়েকজন নেতা গ্রেফতার হন।
সে সময় কাজী আনিসের কয়েক বছরের মধ্যে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়ার তথ্য গণমাধ্যমে এলে গা ঢাকা দেন এই যুবলীগ নেতা। পরে ১১ অক্টোবর তাকে বহিষ্কার করে যুবলীগ।
এর সপ্তাহ দুয়েকের মাথায় গত বছরের ২৯ অক্টোবর কাজী আনিস ও তার স্ত্রী সুমি রহমানের বিরুদ্ধে আলাদা মামলা করে দুদক। আনিসের বিরুদ্ধে মামলায় ‘ক্যাসিনোর কারবারের মাধ্যমে’ ঘোষিত আয়ের বাইরে ১২ কোটি ৮০ লাখ টাকার সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধানের আবেদনে সাড়া দিয়ে সম্প্রতি ঢাকার একটি আদালত কাজী আনিসের সম্পদ জব্দ করার আদেশ দেয়।
জব্দ হওয়া সম্পদের বিষয়ে দুদকের একটি সূত্র জানায়, তদন্তে রাজধানীর কলাবাগানে আনিসের পাঁচতলা একটি বাড়ি পাওয়া গেছে। এছাড়া ধানমন্ডি ও ওয়ারীতে তার দুটি ফ্ল্যাট, এলিফ্যান্ট রোডের মাল্টিপ্ল্যান মার্কেটে তিনটি দোকান ও ১৩ বর্গফুট বাণিজ্যিক স্পেস, গুলশান-২ নম্বর এলাকার একটি মার্কেটে দুটি দোকান পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে রাজধানীর বাইরে কাজী আনিসের জন্মস্থান গোপালগঞ্জের মোকসেদপুরের বোয়ালিয়ায় বিলসাবহুল বাড়ি, একটি পেট্রোল পাম্প, ৩০ কোটি টাকার ১৫ বিঘা জমি ও কেরাণীগঞ্জে ৪০ কাঠা জমি পেয়েছে দুদক। এছাড়া আনিসের ৫০ কোটি টাকার ব্যাংক লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় অফিসে কম্পিউটার অপারেটর হিসেবে ২০০৫ সালে কাজ শুরু করেন গোপালগঞ্জের মোকসেদপুরের ছেলে আনিস।সংগঠনের তৎকালীন চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুযোগে ২০১২ সালে উপ-দপ্তর সম্পাদকের পদ পেয়ে যান আনিস। দপ্তর সম্পাদকের পদটি খালি থাকায় ছয় মাসের মধ্যে তাকে ওই পদ দেওয়া হয়। এরপর ঢাকায় একাধিক গাড়ি-বাড়ি, ফ্ল্যাট ও জমির মালিক হয়ে যান কাজী আনিস।