১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কাজ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতের তাদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন ঠেকানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধু ইউনূসকে দোষারূপ করেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা কেন আপনাকে অপছন্দ করেন? আপনি কি তার (শেখ হাসিনার) রাজনৈতিকভাবে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠছেন, না সত্যি এমন কোনো তার কাছে তথ্য রয়েছে যে আপনার রাজনৈতিক বিশাল অভিলাস রয়েছে?
জবাবে নোবেলজয়ী ড. ইউনূস বলেন, আমার মনে হয় উনি (শেখ হাসিনা) মনে করেন— আমি দেশের সর্বোচ্চ ডাকু, সন্ত্রাসী কিংবা আমি অপরাধী, সেরা চোর৷ আমাকে বলেন— আমি সুদখোর, ঘুষখোর৷ এমন সব কটু শব্দ ব্যবহার করে যেন মনে হয় আমার সম্পর্কে ধারণা খুবই খারাপ।
কিন্তু এটা তো ছিল না। কারণ ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আপনি অনেক কাজ করেছেন ?
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, সম্পর্কে কেন ফাটল সেটা বলতে পারব না। তবে আমি বলতে পারি— আমার তরফ থেকে হয়নি। আমি মাইক্রো ক্রেডিট সামিটে প্রধান অতিথি করে ওয়াশিংটন ডিসিতে শেখ হাসিনাকে নিয়ে গিয়েছিলাম। সবাই তাকে সম্মান করেছে। তিনি যেন বাংলাদেশের গৌরবটা আমাদের পক্ষ থেকে গ্রহণ করেন। এ জন্যই অনুষ্ঠানে নিয়েছিলাম।
স্বাভাবিকভাবেই এই সম্পর্ক থেকে যাওয়ার কথা ছিল; কিন্তু কী কারণে ঘাটতি হতে আরম্ভ করতে লাগল বুঝতে পারলাম না। কিছু দিন পর থেকেই তার (শেখ হাসিনার) আচরণ ও শব্দ পরিবর্তন হতে আরম্ভ করল। এমনভাবে পরিবর্তন হলো যে, শেখ হাসিনা এখন আমাকে চোর বদমাস ছাড়া আমাকে কিছুই মনে করেন বলে আমার মনে হয় না।
ড. ইউনূস বলেন, আমার নামই সহ্য হয় না শেখ হাসিনার। আমার নাম উঠলেই তার রাগ উঠে যায়। আমাকে সুদখোর না বললে তার তৃপ্তি হয় না। আমাকে পদ্মা নদীতে চুবিয়ে না ডুবালে তার মনে শান্তি আসে না।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, পদ্মা সেতুতে বাংলাদেশে যেন ঋণ না পায় সে জন্য চেষ্টার করেছেন— এ বিষয়ে কী বলবেন ?
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এটি হাস্যকর অভিযোগ। এ অভিযোগের বিষয়ে বারবার বিবৃতি দিয়েছি। সেখানে বলেছি, বাংলাদেশে পদ্মা সেতু হবে এতে আমি গৌরবান্বিত। বিরোধিতা করার প্রশ্নই ওঠে না।
অথচ উনি আমার বিরুদ্ধে বলতেই থাকলেন। তা হলে তো আমার কিছু করার নেই। উনি এত শক্তিধর যে আমার কথা কিছুই থাকে না। যাবতীয় প্রচারযন্ত্র শেখ হাসিনার হাতে।
jugantor