যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধরসহ শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগে চাঁদপুর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক পারভেজ করিম বাবুকে আসামি করে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার চাঁদপুরের আদালতে মামলাটি করেন তার স্ত্রী আসমা আক্তার নুপুর। মামলাটি আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
জানা গেছে, ২০১৯ সালের ২৪ এপ্রিল জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক পারভেজ করিম বাবুর সঙ্গে শহরের মমিনপাড়ার বাসিন্দা আসমা আক্তার নুপুরের বিয়ে হয় ৫ লাখ টাকা দেনমোহরে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের সময় স্ত্রীকে ওই ছাত্রলীগ নেতা নাকফুল ছাড়া আর কিছুই না দিলেও নুপুরের বাবা ১০ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও ১ লাখ টাকার সাজানিসহ মোট ৮ লাখ টাকা খরচ করেন। বিয়ের পর মোহরানা পরিশোধ না করেই দাম্পত্য জীবন শুরু করেন পারভেজ। সংসার জীবন চলাকালে আসামি বিভিন্ন সময় তার স্ত্রীকে চাঁদপুরের সেবা সিটি সেন্টারে ফ্ল্যাট কেনার জন্য বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দেয়ার জন্য নির্যাতন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ভুক্তভোগী নুপুরের বাবা তার মেয়ের সুখ-শান্তির কথা চিন্তা করে পরিশোধ করার শর্তে এক বছরের জন্য ধার হিসেবে পারভেজ করিমকে ৩০ লাখ টাকা দেন। পরে ওই টাকা দিয়ে সেবা সিটির অষ্টম তলায় ফ্ল্যাট কেনেন তিনি। টাকা দেয়ার পর থেকে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন বন্ধ রাখেন। কিন্তু সে আজও ওই টাকা ফেরত দেয়নি। এর কিছুদিন পর অভিযুক্ত ওই ছাত্রলীগ নেতা চাঁদপুরে ঠিকাদারী ব্যবসা সম্প্রসারণ করার জন্য তার স্ত্রীর কাছে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। কিন্তু এতে তার স্ত্রী রাজি না হওয়ায় ফের শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় পারভেজ করিম বাবু গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯ টার দিকে তালতলার ভাড়া বাসায় যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে মারধর করেন। এক পর্যায়ে ব্যবহৃত স্বর্ণালংকার, কাপড়-চোপড় রেখে দিয়ে স্ত্রীকে এককাপড়ে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। পরবর্তীতে বিষয়টি ভিকটিম তার মা এবং স্থানীয়দের জানানোর পর তাদের চেষ্টায় শহরের মমিনপাড়াস্থ বাসায় সালিশি বৈঠক বসে। সেখানে উপস্থিত হয়ে আসামি পারভেজ করিম বলেন, ‘১০ লাখ টাকা যৌতুক না দিলে তিনি তার স্ত্রীকে নেবেন না এবং অন্যত্র বিয়ে করে যৌতুক হিসেবে ১০ লাখ টাকা আদায় করবেন।’ এ বলেই তিনি বৈঠক ত্যাগ করেন।
নির্যাতনের শিকার আসমা আক্তার নুপুর বলেন, আমার স্বামী আমাকে বিভিন্ন সময় শারীরিক এবং মানসিকভাবে নির্যাতন করতো। সংসার রক্ষা করার জন্য কখনো প্রতিবাদ করিনি। কিন্তু এখন অনেকটা নিরুপায় হয়ে মামলা করতে হয়েছে।