এবার জাতীয় নির্বাচনের আগেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) কাটছাঁটের কাজ শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে বিদেশি সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলোর বরাদ্দ কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে শিগগিরই বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)। এডিপিতে বিদেশি সহায়তার বিষয়টি দেখভাল করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এই বিভাগ।
অন্যদিকে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে বলা হয়, সংশোধিত এডিপিতে সম্পদ প্রাপ্তি ও জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রকল্পে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
ইআরডি থেকে সম্প্রতি ৫১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবদের চিঠি দেওয়া হয়। সংশোধিত এডিপিতে তাদের প্রকল্পে কত কাটছাঁট করা হবে, এসব প্রকল্পে বরাদ্দ কত চায়—তা জানাতে বলা হয় চিঠিতে। আগামী ১০, ১১, ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর এসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবে ইআরডি। এ বৈঠকে সংশোধিত এডিপির বিদেশি সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পের বরাদ্দ ঠিক করা হবে।
ইআরডির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনের কারণে ডিসেম্বরের মধ্যে বিদেশি সহায়তার বরাদ্দ চূড়ান্ত করা হবে। অন্য বছর এই বরাদ্দ চূড়ান্ত করতে সাধারণত জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময় লেগে যায়, এবার এত দেরি হবে না।
চলতি অর্থবছরের এডিপির আকার ২ লাখ ৭৪ হাজার ৬৭৪ কোটি টাকা। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গত জুলাই-অক্টোবর সময়ে এডিপির খরচ হয়েছে ৩১ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা বা সাড়ে ১১ শতাংশ। তবে বিদেশি সহায়তার অর্থ খরচ আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দেড় হাজার কোটি টাকা কমে গেছে। এ বছর প্রথম চার মাসে বিদেশি সহায়তার ১১ হাজার ৮৬৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। গতবার একই সময়ে বিদেশি সহায়তার অর্থ খরচের পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার ২৭৭ কোটি টাকা।
এদিকে গত চার মাসে বিদেশি সহায়তা ছাড়ও বেশ কমেছে। ইআরডি সূত্রে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৫ কোটি ডলার কম ছাড় করেছে উন্নয়ন সহযোগীরা। এই সময় ১৬২ কোটি ডলার ছাড় হয়েছে। গতবার একই সময়ে ১৯৭ কোটি ডলার ছাড় হয়েছিল। এ দিকে বিদেশি ঋণ পরিশোধের চাপও বেড়েছে। এ বছর প্রথম চার মাসে ১১০ কোটি ডলার ঋণের সুদাসল পরিশোধ করতে হয়েছে। গতবার একই সময়ে এর পরিমাণ ছিল ৭২ কোটি ডলার।