নিজেদের টাকায় নিজস্ব প্রকৌশলী দিয়ে নির্মাণ হয়েছিল তিস্তা ব্যারাজ

স্বাধীনতার পর তিস্তা নদীর ওপর ব্যারাজ বা বাঁধ নির্মাণে নকশা ও পরিকল্পনার কাজে হাত দেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রকৌশলীরা। এজন্য সম্পূর্ণ দেশী প্রযুক্তি ও জনবলকে কাজে লাগান তারা। প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ ও ভৌত উন্নয়নের কাজ শুরু হয় ১৯৭৯ সালে। বিদেশী অর্থায়নের অপেক্ষায় না থেকে নিজস্ব অর্থ ও জনবলে ভরসা করেই প্রকল্পটির বাস্তবায়ন শুরু করেছিল বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেষ পর্যন্ত নিজস্ব অর্থ ও জনবল দিয়েই প্রকল্পের মূল বাঁধ অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশ। এর নকশাকার ও প্রকৌশলী থেকে শুরু করে সাধারণ নির্মাণ শ্রমিক পর্যন্ত সবাই ছিলেন বাংলাদেশী। নিজস্ব সক্ষমতায় প্রকল্পটি সফলভাবে এগিয়ে যাওয়ায় একপর্যায়ে বিদেশী বিনিয়োগকারীরাও এটি নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করতে থাকে। তবে শেষ পর্যন্ত প্রকল্পের মূল বাঁধ ও ভৌত পরিকাঠামো নির্মাণ হয়েছে কোনো ধরনের ঋণ, অনুদান বা বিদেশী সংশ্লিষ্টতা ছাড়াই।

আর প্রকল্পের সেচ কাঠামোর কাজ শুরু হয় ১৯৮৪ সালে। বিদেশী বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের প্রেক্ষাপটে ১৯৮৫ সালে এ সেচ কাঠামো (সেচযোগ্য কৃষিজমি উন্নয়ন ও খাল খনন) উন্নয়নে সৌদি উন্নয়ন তহবিল, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক ও আবুধাবি উন্নয়ন তহবিল থেকে ২৮৩ কোটি টাকার ঋণ নেয়া হয়।

তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্প (ফেজ-১) সমাপ্ত ঘোষণা হয় ১৯৯৮ সালে। লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানী ও নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার খালিসা চাপানী ইউনিয়নের ডালিয়ার মধ্যবর্তী স্থানে তিস্তা নদীর ওপর ব্যারাজটি নির্মিত। মূল ব্যারাজের দৈর্ঘ্য ৬১৫ মিটার। এর মধ্যে স্লুইস গেট আছে ৪৪টি। আর ক্যানেল হেড রেগুলেটরের দৈর্ঘ্য ১১০ মিটার। এতে গেট আছে আটটি। সব মিলিয়ে মোট গেটের সংখ্যা ৫২। এ বাঁধের নকশা ও পরিকল্পনা থেকে শুরু করে নির্মাণকাজ পর্যন্ত সবই হয়েছে বাংলাদেশী প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানে। প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে করা এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, এটি নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৯৮৫ কোটি টাকার কিছু বেশি। গোটা প্রকল্পে সেচযোগ্য কৃষিজমি উন্নয়ন ও খাল খননে তিন আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে নেয়া ২৮৩ কোটি টাকা ছাড়া বাকি অর্থের পুরোটাই জোগান দিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

নির্মাণ শেষে তিস্তা ব্যারাজের উদ্বোধন হয় ১৯৯০ সালের আগস্টে। সে সময় তৎকালীন জাতীয় পার্টি সরকারের পানি উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন মেজর (অব.) মন্জুর কাদের। বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, ‘তিস্তা প্রকল্পের ভৌত উন্নয়নকাজ ১৯৭৯ সালে শুরু হলেও মূল বাঁধটি নির্মাণ হয়েছে মাত্র তেরো মাসে। ১৯৮৯ সালের এপ্রিল থেকে ১৯৯০ সালের জুলাইয়ে। মূল বাঁধের অংশটুকু নির্মাণে ব্যয় হয়েছিল ৩০০ কোটি টাকা। রংপুর ছিল তৎকালীন প্রেসিডেন্ট হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের নিজের এলাকা। তাই এটি নির্মাণের সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ও কাজ করেছে। তিস্তা ব্যারাজ নির্মাণের আগে ভারত বলেছিল যৌথ নদী কমিশন তৈরি করবে। কিন্তু এ ব্যারাজ নির্মাণের সময় তারাও গজলডোবায় নদীতে বাঁধ নির্মাণ করে।’

তিনি আরো বলেন, ‘তিস্তা নদীর সঙ্গে যেহেতু ভারত ও চীনের স্বার্থ জড়িয়ে পড়েছে, তাই এটি নিয়ে এক ধরনের চাপ থাকবেই। ব্যারাজ নির্মাণের সময় প্রতিবেশী দেশের চাপ ছিল। সেটিকে উপেক্ষা করেই আমরা নিজেদের অর্থায়নে কাজটি করেছি। এখনো তিস্তা মহাপরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছে। নিজেদের অর্থায়নে এটি নির্মাণেও আমি কোনো সমস্যা দেখি না। সরকার যদি চায় নিজেদের অর্থায়নে করবেই, তাহলে এটি করা জটিল কিছু না। তিস্তা ব্যারাজ ছাড়াও আমরা আরো অনেক পরিকল্পনাই নিজেদের অর্থায়নে করেছি।’

দেশে নিজস্ব অর্থায়নে বড় প্রকল্পের নির্মাণকাজ বাস্তবায়নের অন্যতম উদাহরণ হলো তিস্তা ব্যারাজ। আর এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে এ ধরনের প্রকল্পের সবচেয়ে বড় উদাহরণ হলো পদ্মা সেতু। বর্তমানে তিস্তা নদীকে ঘিরে নতুন করে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চায় সরকার। এজন্য বিদেশী অর্থায়নের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত এ মহাপরিকল্পনা নিয়ে প্রতিবেশী দুটি দেশ আগ্রহও দেখিয়েছে।

তবে বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিবিদরা মনে করছেন নিজস্ব অর্থায়ন ও লোকবল দিয়ে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বণিক বার্তাকে বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের জন্য তিস্তা প্রকল্পটি ভীষণ প্রয়োজন। সে প্রয়োজনের দিকে লক্ষ রেখেই আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে এটি সম্পন্ন করা হয়েছিল। এখনো নিজেদের অর্থায়নে তিস্তা প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন সম্ভব। অর্থের জন্য সরকারের এদিক-ওদিক দৌড়ঝাঁপের দরকার নেই বলে আমি মনে করি। এক্ষেত্রে সরকারকে অনেক আন্তরিক হতে হবে।’

বিশেষজ্ঞরাও বলছেন, বর্তমান ভূরাজনৈতিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে পরস্পর বৈরী দুই প্রতিবেশীর কারো ওপর নির্ভর না করে নিজস্ব সক্ষমতার ভিত্তিতে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের পথে হাঁটতে পারে বাংলাদেশ। পদ্মা সেতুর মতো জটিল ও ব্যয়বহুল প্রকল্পেই বাংলাদেশের সক্ষমতা প্রমাণ হয়েছে। আর তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মতো জনসম্পদ ও সক্ষমতা বাংলাদেশের আছে।

পানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষজ্ঞ এবং বুয়েটের পানিসম্পদ প্রকৌশল বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত এ বিষয়ে বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার পদ্মায় সেতু করেছে। তিস্তা ব্যারাজ নির্মাণের সময় এর সঙ্গে যেহেতু বিদেশী কেউ ছিল না, সেহেতু বাংলাদেশকে নিজস্ব জনবল ও প্রযুক্তির ওপরই ভরসা করতে হয়েছে। এখন নিজের পয়সা আর সাহস থাকলে তিস্তা মহাপরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করতে পারবে।’

ভারত ও বাংলাদেশের ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদীর মধ্যে চতুর্থ বৃহত্তম হলো তিস্তা। নদীটির উৎপত্তি ভারতে সিকিমের ৎসো লামো হ্রদে। সেখান থেকে পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে নদীটি। ৪১৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নদীটিতে বাংলাদেশের অংশ ১৭ শতাংশ। নীলফামারীর ডিমলা দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের পর লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা হয়ে আবার কুড়িগ্রামের চিলমারীর কাছাকাছি এসে ব্রহ্মপুত্রে মিশেছে নদীটি। বৃষ্টি ও পাহাড়ি বরফ গলা জলনির্ভর নদী তিস্তায় পানির প্রবাহ সারা বছর সমান থাকে না। নদীটির মোট পানিপ্রবাহের ৯০ শতাংশই হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চার মাসে। বাকি ১০ শতাংশ প্রবাহিত হয় বছরের অন্য আট মাসে। জলপ্রবাহ কমে গিয়ে এ সময়ে শীর্ণ হয়ে ওঠে তিস্তা। এর মধ্যেও নদীটির স্থানে স্থানে বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে সিকিমের রাজ্য সরকার। এখন পর্যন্ত নদীটির শুধু সিকিম অংশেই বড় আকারের বাঁধ নির্মিত হয়েছে আটটি। এসব বাঁধের কারণে সিকিমের পার্বত্য অঞ্চল পেরিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সমভূমিতে আসতে আসতেই শীর্ণ হয়ে পড়ছে তিস্তা, যা বাংলাদেশ অংশে হয়ে পড়ছে শীর্ণতর। এমনকি খরা মৌসুমে নদীর বাংলাদেশ অংশে গড় পানিপ্রবাহ সেকেন্ডে ১৪ ঘনমিটারে নেমে আসার নজিরও রয়েছে। এর মধ্যেও সিকিমে আরো বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এভাবে উজানে একের পর এক অবকাঠামো নির্মাণের ফলে বাংলাদেশে নদীটির অববাহিকা অঞ্চল রংপুর বিভাগের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগও মারাত্মকভাবে বেড়েছে।

বাংলাদেশে নদীটির অববাহিকা অঞ্চল রংপুর বিভাগকে বলা হয় দেশের দরিদ্রতম বিভাগ। এখানকার জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার উন্নয়নে নদীটির সুযোগ-সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না কোনোভাবেই। খরার মৌসুমে নদীটির পানিপ্রবাহ কমে যাওয়ার কারণে ভয়াবহ আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এ অঞ্চলের কৃষি ও মৎস্য আহরণ কার্যক্রম। অন্যদিকে বর্ষা মৌসুমে বাঁধগুলোর ফটক খুলে দিয়ে পানির অতিরিক্ত প্রবাহ ছেড়ে দেয়া হয় ভাটির দিকে। এ কারণে প্রতি বছরই বাংলাদেশে তিস্তা অববাহিকায় মারাত্মক বন্যা দেখা দেয়, যার ভুক্তভোগী হয় রংপুর অঞ্চলের দারিদ্র্যপীড়িত মানুষই। এ সমস্যা সমাধানে ২০১১ সাল থেকে ভারতের সঙ্গে তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে চুক্তি করার প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই চুক্তি করতে চাইছে বাংলাদেশ। এ বিষয়ে দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বারবার প্রতিশ্রুতি মিললেও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের বিরোধিতায় তা সম্ভব হয়নি।

তিস্তা চুক্তি না হওয়ার কারণ নিয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. তৌহিদ হোসেন সম্প্রতি বণিক বার্তাকে বলেন, ‘চুক্তিটি করতে হলে দুই পক্ষ থেকেই প্রত্যাশা থাকতে হবে। দশ বছর আগেই তো চুক্তি সইয়ের কাছাকাছি গিয়েছিল, কিন্তু তা হয়নি। আমি মনে করি, এটি শিগগিরই হবে না। হলে বাংলাদেশের সব মানুষ খুব খুশি হবে। এমনকি ভারত নিয়ে বাংলাদেশে বিরূপ মনোভাবের অন্যতম কারণ হলো তিস্তায় পানি না থাকার মতো বিষয়টি। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ক্ষুব্ধ হলেও ভারত পানি আটকে রাখাটাকেই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করছে। এ কারণে এটি হচ্ছে না। পাঁচ হাজার কিউসেকের মধ্যে তার নিজেরা তিন হাজার ব্যবহার করে দুই হাজার ছাড়ত! কিন্তু শুকনো মৌসুমে তারা সবগুলো বন্ধ করে দেয়। শুকনো মৌসুমে তাদের পানি লাগে বিধায় তারা আটকে দিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের পানি লাগে না? এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতি সহমর্মিতার প্রচণ্ড অভাব রয়েছে ভারতের।’

বারবার প্রয়াস নিয়ে চুক্তিটি সই না হওয়ায় সমস্যার সমাধানে তিস্তা মহাপরিকল্পনাকে সামনে নিয়ে আসে সরকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, তিস্তা মহাপরিকল্পনায় মোট ব্যয়ের পরিকল্পনা রয়েছে ৮ হাজার ২১০ কোটি টাকা। এ ব্যয়ে গৃহীত প্রকল্পটির মাধ্যমে তিস্তা নদীর দুই পাড়ে ২২০ কিলোমিটার গাইড বাঁধ নির্মাণের কথা রয়েছে। এছাড়া নদীর দুই পাড়ে পরিকল্পিত স্যাটেলাইট শহর, নদী খনন, শাসন ও ভাঙন প্রতিরোধ ব্যবস্থা, আধুনিক কৃষি সেচ ব্যবস্থা, মাছ চাষ প্রকল্প, পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে নতুন করে কর্মসংস্থান হবে৷ ৭ থেকে ১০ লাখ মানুষের।

নিজস্ব সক্ষমতায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা সম্পর্কে বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান বণিক বার্তাকে বলেন, ‘টেকনিক্যাল সাইড থেকে আমাদের কোনো দুর্বলতা নেই। এ ধরনের ব্যারাজ নির্মাণের অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। অনেক বৃহৎ অবকাঠামো নির্মাণে আমাদের প্রকৌশলীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। আমাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা অনেক বেড়েছে। স্ট্রাকচার নির্মাণে আমাদের প্রকৌশলীদের অভিজ্ঞতা আছে। কিন্তু পরিকল্পনায় যাতে কোনো খাদ না থাকে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।’

তবে শুধু স্ট্রাকচার দিয়ে মহাপরিকল্পনার সফলতা অর্জন সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন তিনি। এজন্য দুই দেশের সরকারকে সমন্বিত ও রাজনৈতিকভাবে সমাধানে আসতে হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের নদীপ্রবাহ নিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা আছে এমন মানুষজনের সমন্বিত অংশগ্রহণ এখানে গুরুত্বপূর্ণ। পরিকল্পনা পরিপক্ব না হলে শুধু স্ট্রাকচার দিয়ে সফলতা পাওয়া যাবে না। এখানে দেনা-পাওনার বিষয় রয়েছে। তাই এখানে রাজনৈতিক কৌশল কেমন হবে, তা দুই দেশের সরকারকে নির্ধারণ করতে হবে। ন্যায্যতার বিষয়টিকে সামনে রেখে আমাদের রাজনৈতিক কৌশল চালিয়ে যেতে হবে। আর টেকনিক্যাল কমিটিতে বাংলাদেশের নদী নিয়ে যারা ভালো জানে, তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ থাকতে হবে।’

নিজস্ব সক্ষমতা ও অর্থায়নে এ ধরনের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে দেশের নির্মাণ ও ভারী শিল্প খাত উপকৃত হবে বলে মনে করছেন অর্থনীতির পর্যবেক্ষকরা। তাদের ভাষ্যমতে, দেশের নির্মাণ ও ভারী শিল্প খাতের উৎপাদন সক্ষমতা এরই মধ্যে চাহিদাকে ছাড়িয়ে গেছে। নিজস্ব এ ধরনের মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তা শিল্পটির জন্য নতুন চাহিদা ও বাজার তৈরি করবে। এরই মধ্যে খাতটির প্রবৃদ্ধি শ্লথ হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় নতুন চাহিদা ও বাজার তৈরি হলে তা শিল্পটিতে নতুন করে প্রাণ সঞ্চার করতে পারবে।

Bonik Barta