জীবন বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) আরও ১৩ সদস্য। তারা নাফ নদ পেরিয়ে টেকনাফ কোস্ট গার্ড সদস্যদের কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
আজ শুক্রবার সকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেন বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা (পিআরও) শরীফুল ইসলাম। তিনি জানান, ‘বৃহস্পতিবার টেকনাফের নাফ নদীতে নতুন করে আরও ১৩ জন বিজিপি সদস্য বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, টেকনাফ স্টেশনের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। পরবর্তীতে কোস্টগার্ড উক্ত বিজিপি সদস্যদেরকে বিজিবির নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের (১১ বিজিবি) নিকট হস্তান্তর করে। এ নিয়ে ২৭৪ জন বাংলাদেশে অবস্থান গ্রহণ করছে। তাদের ফেরত পাঠানো প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।’
এদিকে ঈদের দিন থেকে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জান্তা সরকারি বাহিনীর সঙ্গে আরাকান আর্মির চলমান তুমুল চলমান যুদ্ধে একের পর এক মর্টার শেল, গোলার বিকট শব্দে বাংলাদেশের কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তবর্তী বাসিন্দারা আতঙ্কের মধ্য আছেন।
নতুন করে কিছু মিয়ানমারের বিজিপি বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে উল্লেখ করে টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ সমকালকে বলেন, ‘সীমান্তে যাতে কোনো অবৈধ অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য আমরা সর্তক অবস্থানে রয়েছি।’
টেকনাফ সীমান্তের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘গতকাল রাতেও সীমান্তে মিয়ানমারের থেকে বিকট গোলার শব্দ পাওয়া গেছে। ওপারে যুদ্ধের কারণে টিকতে না পেরে দেশটির বিজিপির সদস্যরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার খবর পাচ্ছি। এছাড়া সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারাও অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জেনেছি।’
নতুন করে সীমান্ত দিয়ে কিছু মিয়ানমারের বিজিপি সদস্য ঢুকে পড়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আদনান চৌধুরী। সমকালকে তিনি বলেন, ‘বিজিপি সদস্যদের নিরস্ত্র করে বিজিবির হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। সীমান্তে আমরা সবাই মিলে কাজ করছি। পাশাপাশি সীমান্তে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহলের পাশাপাশি সর্তক অবস্থানে আছেন।’
এর আগে গত ১১ মার্চ নাইক্ষ্যংছড়ির জামছড়ি সীমান্ত দিয়ে পালিয়ে এসেছিলেন ১৭৯ জন মিয়ানমার বর্ডার পুলিশ (বিজিপি) সদস্য। তারাও নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবি ব্যাটালিয়নে রয়েছেন। তাদের মিয়ানমারের ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
এরও আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সীমান্তের ওপারে আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়। এর জের ধরে গত ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে মিয়নমার থেকে পালিয়ে আসে বিজিপিসহ ৩৩০ জন। এর মধ্যে ৩০২ জন বিজিপি সদস্য, ৪ জন বিজিপি পরিবারের সদস্য, ২ জন সেনা সদস্য, ১৮ জন ইমিগ্রেশন সদস্য ও ৪ জন বেসামরিক নাগরিক ছিলেন। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি তাদেরকে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেরত পাঠানো হয়।
samakal