৫ রানের হৃদয়ভাঙা হার দিয়ে যুব বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ দল। সেমির আগে বিদায় নিলেও ক্রিকেটবিশ্বের নজর কেড়েছেন বাংলাদেশ যুব দলের বোলাররা। বিশেষ করে তিন পেসার রোহানাত দৌলা বর্ষণ, মারুফ মৃধা ও ইকবাল হোসেন ইমন এবং অফস্পিনার শেখ পারভেজ জীবন। ঠিকঠাক পরিচর্যা এবং উপযুক্ত পরিবেশ দিতে পারলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল বলেই মনে করছেন অনেকে।
কিন্তু এখানেই যত হতাশা। ২০২০ সালে শিরোপাজয়ী যুবাদের নিয়েও উচ্ছ্বাস ছিল। সে ফাইনালে হেরে যাওয়া ভারতের যশ্বসী জয়সোয়ালের ব্যাট এখন বিশ্ব মাতাচ্ছে। তিলক ভার্মা ও রবি বিষ্ণুই ভারতের ওয়ানডে ও টি২০ দলে জায়গা করে নিয়েছেন এবং ধ্রুব জুরেল টেস্ট স্কোয়াডে আছেন। আর সে ফাইনালের হিরো আকবর আলী ক্রিকেট থেকে হারিয়েই গেছেন। ওই দলের ৮ জন জাতীয় দলে ডাক পেলেও পেসার শরিফুল ইসলাম ছাড়া আর কেউই সেভাবে প্রতিভার প্রতি সুবিচার করতে পারেননি।
ক্যারিবিয়ান এ কিংবদন্তি পেসার দক্ষিণ আফ্রিকায় চলতে থাকা এই আসরে ধারাভাষ্যকার হিসেবে কাজ করছেন। শুধু তিনি একা নন, পাকিস্তানকে ১৫৫ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর আরও অনেকেই বাংলাদেশ যুব দলের পেসারদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। এই তালিকায় রয়েছেন সাবেক পাকিস্তান অধিনায়ক রশিদ লতিফও। তিনি এক্সে লেখেন, ‘ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে পাকিস্তানকে ১৫৫ রানে অলআউট করে দিলেন বর্ষণ ও জীবন।’
সবচেয়ে বেশি প্রশংসা পেয়েছেন বর্ষণ। বেনোনির পেস উইকেটে সুইং ও ধারাবাহিকভাবে নিখুঁত লাইন-লেন্থে তাঁকে বোলিং করতে দেখে মুগ্ধ হন ধারাভাষ্যকাররা। ব্যাট হাতেও অবদান রাখতে পারেন তিনি। ১০ নম্বরে নেমে ২১ রান করে পাকিস্তানের বিপক্ষে তো ম্যাচই জিতিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। ধারাভাষ্যকাররা তাঁকে ভবিষ্যতের তারকা হিসেবেও দেখছেন। এ ম্যাচে খুব ভালো করতে না পারলেও পেসার মারুফ মৃধার প্রতিভা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। বিশেষ করে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৫ উইকেট নিয়ে মনোযোগ কাড়েন তিনি। বাঁহাতি এ পেসারের গতি আছে, সুইংও আছে; কিন্তু নিয়ন্ত্রণে ঘাটতি রয়েছে।
ব্যাটিং অবশ্য হতাশ করেছে। এক আরিফুল ইসলাম ছাড়া বাংলাদেশের আর কেউই ব্যাট হাতে ধারাবাহিক ছিলেন না। ৫ ম্যাচে ৫৭.৫০ গড়ে ২৩০ রান করেন তিনি। ব্যাটিংয়ে সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা ছিল ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলিকে ঘিরে। গত ডিসেম্বরে রানের বন্যা বইয়ে দিয়ে যুব এশিয়া কাপ জিতিয়ে ছিলেন উইকেটকিপার এ ব্যাটার। কিন্তু বিশ্বকাপে চরম ফ্লপ তিনি। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৪৪ রানের ইনিংসটি ছাড়া আর কোনো ম্যাচে দাঁড়াতেই পারেননি শিবলি। এ ছাড়া মোহাম্মদ রিজওয়ান, আহরার আমিন, জিশান আলমরাও ধারাবাহিকতা দেখানে পারেননি।
সমকাল