দ্রব্যমূল্য : আওয়ামী দায়িত্ব ও বিএনপির দায়

  • ড. আবদুল লতিফ মাসুম

ঠাণ্ডা যুদ্ধের সময়কালে যখন দ্বৈত বৈশ্বিক ধারণায় পৃথিবীর রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হতো, তখন পৃথিবীর কোথাও কিছু ঘটলে আমেরিকা-রাশিয়ার দিকে অঙ্গুলি নির্দেশ করত মানুষ। ঢাকার পাতলা খান লেনে পটকা ফুটলে এমনিতেই ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ আসত ওই দ্বৈত ব্যবস্থায়। এক দল বলত, পটকাটি নিশ্চয়ই সিআইএ ফুটিয়েছে। অন্যদল প্রতিবাদ করে বলত, এটি কেজিবির কাজ। এখন সেই দিন আর নেই। নতুন বিশ্বব্যবস্থায় চলছে পৃথিবী। তবুও নিজের দায়িত্বের জন্য অন্যকে দায়গ্রস্ত করার প্রবণতা রয়েই গেছে।
মানুষের নেতিবাচক যেসব বৈশিষ্ট্যের কথা আমরা জানি তার একটি হচ্ছে দায় স্খলন। ধরুন পাশের বাড়ির ছেলেটি চুরি করে হাতেনাতে ধরা পড়েছে। চোরের মা বড় গলা করে বলছে, কোনোক্রমেই তার ছেলে ওই চুরির জন্য দায়ী না। পাশের বাড়ির আরেক ছেলে তাকে কুকাজটি করার জন্য ছলে-বলে-কলে-কৌশলে নিয়ে গেছে। আসলে তার ছেলের চরিত্র ফুলের মতো পবিত্র। অপ্রিয় হলেও সত্য, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ওই দ্বৈত অবস্থা ও নিজের দোষ পরের ঘাড়ে তুলে দেয়ার প্রবণতা প্রবলভাবে বিদ্যমান। বাংলাদেশে যখনই কোনো অঘটন ঘটে, তখন দ্বৈত দায়-দায়িত্বের কথা শোনা যায়।

পঁচাত্তরের পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিএনপি একটি অনিবার্য অনুঘটক হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর আওয়ামী লীগ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর থেকে রাজনীতিতে নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। এই উভয় দল সরকার পরিচালনা করেছে এবং বিরোধী রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। ১৯৯০ সালের পর এই দ্বৈত অবস্থান বা দ্বিদলীয় ব্যবস্থা বাংলাদেশে বিকশিত হয়েছিল। ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ গায়ের জোরে ক্ষমতায় রয়েছে। সব কিছুর ওপর তারা নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করেছে। জুতা সেলাই থেকে চণ্ডিপাঠ সব কিছুই তারা করছে। চাপরাশি থেকে প্রেসিডেন্ট সবই তাদের। কিন্তু ব্যর্থতার দায় যখন আসে, তখন তারা প্রায়ই ক্ষমতা থেকে যোজন যোজন দূরে থাকা বিএনপির ঘাড়ে দোষ চাপায়। সবই কেষ্ট ব্যাটার দোষ বলে নিজ দোষ এড়াতে চায়। ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’ এই প্রবাদ বাক্যটি এদের সম্পর্কে ব্যবহার করা যায়।

এত কথা এলো আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বয়ান শুনে। তিনি বলেছেন, বিএনপি দ্রব্যমূল্য নিয়ে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে মজুদদার এবং সিন্ডিকেটকে পৃষ্ঠপোষকতা ও মদদ দিচ্ছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের মনে করেন, বিএনপির পুরোনো সিন্ডিকেট দ্রব্যমূল্য নিয়ে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করছে। তিনি আরো বলেন, বিএনপি সরকার ছিল ব্যবসায়ী সরকার। আওয়ামী লীগ ব্যবসায় করতে আসেনি। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার হাল ছেড়ে দিয়েছে এ কথা মনে করারও কারণ নেই। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও কথা বলেছিলেন নির্বাচনের আগে। বিএনপি নির্বাচনের পরে ফেব্রুয়ারি-মার্চে বিদেশীদের সহায়তায় দেশে দুর্ভিক্ষ অবস্থা তৈরি করতে চায় বলে সতর্ক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। তখন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মন্তব্য করছিল যে, খাদ্য মজুদ, বিতরণব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্ব সামনে রেখে নিজের দায় এড়ানোর জন্য তিনি ওই আগাম মন্তব্যটি করেছিলেন।
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আওয়ামী লীগ সরকারের ব্যর্থতার কারণে বিষয়টি আবার সামনে এসেছে। ওই সংবাদ সম্মেলনে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, মার্চের দিকে দেশে দুর্ভিক্ষ তৈরির একটি চক্রান্ত চলছে বলে আপনি নির্বাচনের আগে বলেছিলেন, আন্তর্জাতিক মহলও জড়িত আছে, দেশের তো জড়িত আছেই- এই আশঙ্কা থেকে আমরা দূরে আছি কি না? এমন প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, যারাই এই নির্বাচন বানচালের পথে তারা যখন দেখল নির্বাচন কিছুতেই আটকাতে পারবে না, কারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ততা আছে, তখন চক্রান্ত হলো যে, জিনিসের দাম বাড়ালে সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হবে- তখন তারা আন্দোলন করে সরকারকে উৎখাত করবে। এটি তাদের পরিকল্পনার অংশ, এই চক্রান্তটি আছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রচেষ্টা সবসময়, যখন করোনাভাইরাসের অতিমারী দেখা দিলো, সারা বিশ্বব্যাপী স্যাংশন এলো, পণ্য পরিবহনে যখন বাধাগ্রস্ত হলো তখন থেকেই আমি বলে আসছি- আমাদের নিজেদের খাদ্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। এক ইঞ্চি জায়গা যেন ফাঁকা না থাকে, অনাবাদি না থাকে। মজুদদারদের গণধোলাই দেয়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, একসময় বাংলাদেশে অভাব হলে শোনা যেত- পেটে ভাত নেই। আর এখন কি বলে- তেলের দাম, পেঁয়াজের দাম, গরুর মাংসের দাম, এটি কি একটি পরিবর্তন না?

১৫ বছরে এই পরিবর্তনটা আসছে, সেটি তো স্বীকার করবেন। ১৫ বছর আগে কী ছিল, ভাতের জন্য হাহাকার ছিল, নুন ভাত, ভাতের ফেন ভিক্ষা চাইত। এখন তো এগুলো নেই। তিনি আরো বলেন, আপনি নিজেই তো বলেছেন ডিম লুকিয়ে রেখেছে। আপনার কি মনে হয় না যারা সরকার উৎখাতের আন্দোলন করে তাদের এখানে কারসাজি আছে? এর আগেও এ রকম পেঁয়াজের খুব অভাব, বস্তাকে বস্তা পানিতে ফেলে দিচ্ছে। এই লোকগুলোকে কী করা উচিত? সেটি আপনারাই বলেন। এদের গণধোলাই দেয়া উচিত। কারণ আমরা সরকার কিছু করতে গেলে বলে- সরকার করছে, তার থেকে পাবলিক যদি এর প্রতিকার করে তাহলে আর কেউ কিছু বলতে পারবে না। এর আগেও আওয়ামী লীগের মন্ত্রী ও আধা-মন্ত্রীরা একই ভাষায় কথা বলছিলেন। একজন মন্ত্রী বলেছিলেন, বিদেশের তুলনায় দ্রব্যমূল্য বিচারে বাংলাদেশের লোকেরা স্বর্গে আছে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি গণমাধ্যমের কারসাজি- এটি ছিল একজন পতিত আধা-মন্ত্রীর কথা।
প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, পণ্যসামগ্রীর সরবরাহ স্বল্পতা ছিল না। সরকারের বাজার তদারকি ছিল। তাহলে সঙ্গতভাবেই প্রশ্ন আসে, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রিত হলো না কেন?

প্রধানমন্ত্রী যখন মজুদদারদের গণধোলাইয়ের কথা বলেন, তখন প্রকারান্তরে সরকারের ব্যর্থতার দায় স্বীকার করলেন। সরকার প্রধানের এ ধরনের মন্তব্য ব্যর্থতা ও দায়িত্বহীনতার প্রমাণ। আইন যদি জনগণকেই প্রয়োগ করতে হয়, তাহলে সরকারের অস্তিত্ব থাকে কি? সরকারপ্রধান নিজেই জনগণকে আইন হাতে তুলে নেয়ার উসকানি দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। একই সাথে প্রশ্ন আসে, বাজার নিয়ন্ত্রণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা তাহলে কী করবেন? সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আইনের পর আইন করছে। এমনিতেই ১৯৫৩ সালে প্রণীত মূল্যনিয়ন্ত্রণ ও মজুদদারি-বিরোধী আইন রয়েছে। ২০০৯ সালে প্রণীত হয় ভোগ্যপণ্য সংরক্ষণ আইন। ২০১৮ সালে কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ আইন প্রণীত হয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, আইন আছে-প্রয়োগ নেই। লুটপাট আছে, দেখার কেউ নেই।

পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত জাতীয় সংসদে ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব বেড়েছে। খুব মজার কথা, যেসব রাজনীতিবিদ সংসদে আসছেন তারা ইতঃপূর্বে ব্যবসায়-বাণিজ্য না করলেও সংসদে আসার পর ব্যবসায়ী হয়েছেন। অনেকে ঠাট্টা-মশকরা করে বলেন, কোটিপতিদের ক্লাব। লেনিন বুর্জোয়া সংসদীয় গণতন্ত্রের পার্লামেন্টকে বলেছেন ‘শুয়োরের খোঁয়াড়’।

এখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণে প্রমাণিত হয়েছে, ‘দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য আওয়ামী ব্যবসায়ী সিন্ডেকেট দায়ী’। মুষ্টিমেয় লোভী ব্যবসায়ীর কারণে নিত্যপণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। পত্রিকান্তরে প্রকাশিত একটি বিশ্লেষণে বলা হয়- বিশ্ববাজারে পণ্যের দামে ওঠানামা, ডলার সঙ্কট, চাঁদাবাজিসহ নানা যুক্তি দাঁড় করিয়ে নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে বাজারকে অস্থিতিশীল করছে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট। কিছু দিন পরপর এই সিন্ডিকেট চক্রের কারসাজিতে চাল, ডাল, সয়াবিন তেল, চিনি থেকে শুরু করে পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, ডিম ইত্যাদি নিত্যপণ্যেরে দাম বাড়ানো হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে- উঁচু পর্যায়ের এই সিন্ডিকেটে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কিছু প্রভাবশালী ও তাদের আশীর্বাদপুষ্টরা থাকায় এর বিরুদ্ধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া যাচ্ছে না। আর বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, সরকারের উচ্চ পর্যায়ে সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব স্বীকার করা হলেও ক্রেতা সুরক্ষায় কঠোর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। ফলে কারসাজি করে দাম বাড়াচ্ছে একটি সিন্ডিকেট চক্র।

ভোক্তাসাধারণকে জিম্মি করে প্রতি বছর হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে হাজার কোটি টাকা। সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর দায় চাপিয়ে বাজার সিন্ডিকেটকে আরো সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে মাঠ পর্যায়ে অভিযান পরিচালনা করলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন রাঘববোয়ালরা। বর্তমান সরকারের টানা দেড় দশকের শাসনামলে বেশির ভাগ পণ্যের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। বাজারের লাগাম টানতে দাম বেঁধে দেয়া, অভিযান পরিচালনা করে জরিমানা করা, বিদেশ থেকে আমদানিসহ নানা উদ্যোগ নেয়া হলেও সিন্ডিকেট চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। অতীতে সিন্ডিকেটের সামনে কখনো খোদ বাণিজ্যমন্ত্রীকে অসহায় বোধ করতে দেখা গেছে। বর্তমান বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব নেয়ার পর সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিলেও তা কোনো কাজে আসছে না; বরং মন্ত্রীরা বাজার সিন্ডিকেট ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দিচ্ছেন। নিত্যপণ্যের মূল্য নিয়ে কেউ যাতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মনোপলি করতে না পারে সে জন্য ২০১২ সালে প্রতিযোগিতা আইন প্রণয়ন ও ২০১৬ সালে গঠন করা হয় বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। কিন্তু আইন করেও ঠেকানো যায়নি বাজার সিন্ডিকেট। আবার সরকারের উচ্চ পর্যায়ে সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব স্বীকার করা হলেও ক্রেতাকে সুরক্ষা দিতে কঠোর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা তথা সংসদীয় রাজনীতিতে সরকার ও বিরোধী দলের দায়-দায়িত্বের বিভাজন রয়েছে। জনগণের কল্যাণের জন্য সরকারকে সুশাসন নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিতে হয়। আর বিরোধী দল ছায়াসরকার হিসেবে সরকারকে পর্যবেক্ষণ করে ও পরামর্শ দেয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বা সংসদীয় রাজনীতিতে এখন আর বিরোধী দল বলতে কারো কোনো অস্তিত্ব নেই। ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদে বিরোধী দল নেই, অধীনতামূলক মিত্র রয়েছে। দীর্ঘ প্রায় দুই দশক ধরে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ক্ষমতার বাইরে। আওয়ামী লীগ যেহেতু সরকার চালাচ্ছে সেহেতু নৈতিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে ও অর্থনৈতিকভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব তাদের। যে বিরোধী দলের অস্তিত্ব নেই বলে তারা আত্মসুখ লাভ করেন। আবার তারাই যখন ব্যর্থতার দায়ভার আসে তখন সেই বিরোধী দল-বিএনপিকেই দায়ী করেন। এর চেয়ে আত্মপ্রতারণার বিষয় আর কী হতে পারে? বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী যথার্থই বলেছেন, সরকার আর মুনাফাখোর বাজার সিন্ডিকেট এখন একাকার। তাদের অশুভ আঁতাত দেশের মানুষকে নিঃস্ব করে ফেলছে। আওয়ামী লীগের লুটেরা সিন্ডিকেট রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় এখন বাজারের ওপর নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণ এবং কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। ১৫ বছর ধরে বিনাভোটের সরকারের দুর্নীতি, দুঃশাসন, অর্থপাচার আর আওয়ামী বাজার সিন্ডিকেটের কারণে আবারো দেশে ১৯৭৪-এর অবস্থা বিরাজমান। দেশে এখন নীরব দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

রিজভী আহমেদের ওই মন্তব্য ধ্বনিত-প্রতিধ্বনিত হয়েছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বুদ্ধিজীবী ও অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের ভাষায়। তিনি বলেন, ব্যবসায়-বাণিজ্য, সম্পদ বাড়ানোর জন্য এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করেন। রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় বাজারে সিন্ডিকেট ব্যবস্থা সৃষ্টি হয়। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং সানেম-এর কনফারেন্সে ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি এ কথা বলেন। রাজনীতিক ও অর্থনীতিকদের ভাষা যখন এক ও অভিন্ন হয়ে দাঁড়ায় তখন সতত সত্যই বেরিয়ে আসে।

লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

Nayadiganta