- অনলাইন প্রতিবেদক
- ১১ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:২২
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বাংলাদেশের মানুষ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের মানুষ ৯০ সালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে এ দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে। আজকে আবার সেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে নেমেছি।
তিনি বলেন, আজকে ৩৫ লাখ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যে মামলা দেয়া হয়েছে। তাই বলে কি আওয়ামী লীগ আমাদেরকে দমিয়ে রাখতে পেরেছে? সারাদেশের মানুষ এখন জেগে উঠেছে। তাই নূরে আলম, আব্দুর রহিম এবং শাওন জীবন দিতে দ্বিধাবোধ করেনি। আজকে ঘোষণা করতে চাই আমরা কেউ প্রাণ দিতে দ্বিধা করবো না।
রোববার বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আওতাধীন উত্তরা-পূর্ব জোনের তিনটি থানার নেতা-কর্মীদের নিয়ে নানা দাবিতে এ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, আমরা আমাদের অধিকার ফিরে পেতে চাই। আমরা আমাদের বাঁচার অধিকার ফিরে পেতে চাই। আমরা আমাদের ভোটাধিকার ফিরে পেতে চাই। আমরা একটি মুক্ত সমাজে বাস করতে চাই, আমরা একটি সমৃদ্ধ দেশে বাস করতে চাই। চোর, ডাকাত, আওয়ামী লীগ থেকে আমরা মুক্তি চাই।
তিনি বলেন, আমরা প্রশাসনকে বলতে চাই জনগণকে প্রতিপক্ষ বানাবেন না। জনগণের টাকায় আপনাদের বেতন চলে, সংসার চলে অতএব জনগণকে সম্মান করবেন। কথায় কথায় গুলি করবেন না।
তিনি বলেন, নূরে আলম আব্দুর রহিম এবং শাওনকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে আমরা আন্দোলন করছি। প্রতিশোধ একটাই এদেশে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনা।
ফখরুল বলেন, এই ব্যর্থ সরকার যারা দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছে তাদেরকে এই মুহূর্তে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বাতিল করতে হবে, পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচন কমিশন গঠন করে সমস্ত দলের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন চাই। তাই আমরা করবো, ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, সারাদেশে গত ১৫ বছর ধরে এই আওয়ামী লীগ সরকার খুন করে, গুম করে, গুলি করে, নির্যাতন করে জনগণের যে অধিকার রয়েছে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। নাগরিক অধিকার আমার সাংবিধানিক অধিকার। এটা কোনো রাজতন্ত্র নয়, এটা কোনো পরিবার তন্ত্র নয়। জনগণকে অবশ্যই তাদের অধিকার পালন করতে দিতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এইভাবে আজ ১৪ থেকে ১৫ বছর ধরে এই সরকার অবৈধভাবে রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতা দখল করে রয়েছে। আবার নির্বাচন আসছে এখন এটা নিয়ে পাঁয়তারা শুরু করেছে। কী পাঁয়তারা, এখানে ইভিএম দিবে; আরে ইভিএম কিসের আমরা তো ভোটই মানি না। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলছি এই আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকতে এদেশে কোনো নির্বাচন হবে না। কারণ আমরা দেখেছি তোমরা জনগণকে ভোট দিতে দাও না। জনগণের অধিকার প্রয়োগ করতে দাও না।
বিচার বিভাগের কাছে মানুষ ন্যায় বিচার পায় না জানিয়ে তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার ওপর অন্যায়-অবিচার করা হয়েছে। যে মামলায় তাকে সাজা দেয়া হয়েছে এটা কোনো মামলাই নয়। ২ কোটি টাকার মামলা সেই দুই কোটি টাকার জায়গায় এখন ৮ কোটি টাকা হয়েছে। আজকে খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। সকল চিকিৎসকরা তাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করার জন্য বলেছেন। কিন্তু এরা বাইরে যেতে দিতে চায় না। কারণ তারা খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। দেশনেত্রী যদি বাইরে চলে আসে তাহলে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো লাখ লাখ লোক বাইরে চলে আসবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খুবই খারাপ। রিজার্ভ কমতে কমতে নিচে চলে আসছে। মানুষকে তারা সত্য কথা বলে না। যে রিজার্ভ আসে তা দিয়ে তিন মাসও চলবে না। গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে যেটা আসে তা দিয়ে বৈদেশিক অর্থ অর্জন করতে পারি সেই টাকা তারা সব খেয়ে ফেলেছে। সাড়ে সাত কোটি টাকা ইডিএফের নামে নিজেদের লোকদেরকে দিয়ে দিয়েছে। ব্যাংকগুলো খালি করে দিয়েছে। সমস্ত ভুয়া কোম্পানির নামে ঋণ দিয়ে দিয়ে সাধারণ মানুষের আমানত নিয়ে, সেই ব্যাংকগুলোকে খালি করে দিয়েছে। আজকে বলা হচ্ছে মানুষ ব্যাংকগুলোতে টাকা রাখতে নিরাপদ বোধ করছে না সবাই টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বিদেশী লোকেরা আজকে বিনিয়োগ করছে না কেন, কারণ এখানে অনেক ঘুষ দিতে হয়। পদে পদে ঘুষ দিতে হয় এখানে ব্যবসা করা যাবে না। এটা এই সরকার করেছে।
তিনি বলেন, গত বছর বাংলাদেশ থেকে ৮৫ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে। এই পাচার যারা সরকারের সুবিধাভোগী তারাই এই পাচার করেছে।
এ সময় ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম, উত্তরের সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুসহ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।