দুর্ঘটনা নিত্যসাথী আমাদের

  • ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ
  •  ১৪ জুন ২০২২, ১৯:৫১

দুর্ঘটনা নিত্যসাথী আমাদের। – ছবি : সংগৃহীত

দেশে বিভিন্ন সময়ে বারবার মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় প্রাণহানির মতো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটলেও সরকারি কর্তৃপক্ষ ও মালিকপক্ষের উদাসীনতা, অবহেলা এবং দুর্ঘটনা রোধে যথাযথ কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করার কারণে দুর্ঘটনা যেন সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়েছে। অথচ দুর্ঘটনা রোধে তদন্ত কমিটির সুপারিশ ও সুনির্দিষ্ট কিছু কাঠামোগত পদক্ষেপ নিলে সেসব দুর্ঘটনার হার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু নানা কারণে এই অতি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপগুলো না নেয়ার কারণে দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিদ্যমান ত্রুটিপূর্ণ ব্যবস্থা বা অব্যবস্থাপনাই বিভিন্ন গোষ্ঠীর জন্য লাভজনক, ফলে এসব গোষ্ঠীর প্রভাবে কাঠামোগত সমস্যাগুলো সমাধানের পথে বাধা তৈরি হয়। আবার দুর্ঘটনা প্রতিরোধ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার জন্য যে বাড়তি বিনিয়োগ করতে হয় তা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের জন্য দীর্ঘমেয়াদে লাভজনক হলেও তাৎক্ষণিক লাভ-লোকসান বিবেচনায় অনেকেই এই বিনিয়োগটুকু করতে চান না। আর এ কারণেই নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের প্রাতিষ্ঠানিক তদারকি এক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। কোনো প্রতিষ্ঠান যদি দেখে দুর্ঘটনা ঘটলে তাদের কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি বা ক্ষতিপূরণের মুখোমুখি হতে হচ্ছে না তাহলে দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বিনিয়োগের কোনো তাগিদ সেই প্রতিষ্ঠানের থাকে না। বাংলাদেশে খুব কম ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার জন্য কোনো কারখানা, যানবাহন, কোনো প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ব্যবস্থাপক থেকে শুরু করে অনুমোদন ও তদারককারী প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের জবাবদিহি ও শাস্তির মুখোমুখি হতে হয়! বিশ্বের যেসব দেশে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষকে রাজনৈতিক নেতৃত্বের কাছে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্বকে প্রতিটি দুর্ঘটনার জন্য জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয় সেসব দেশে দুর্ঘটনার হার অনেক কম। বাংলাদেশে এমন কোনো জবাবদিহিতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো বা সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি বলেই দুর্ঘটনার কাঠামোগত ভিত্তিগুলো দিনের পর দিন দুর্বল হয়েছে।

যেকোনো দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের কর্তব্য হলো, দুর্ঘটনার পূর্বশর্ত ও অন্তর্নিহিত কারণগুলোকে নির্মূল করা, যেন দুর্ঘটনা ঘটতে না পারে। আর যদি কোনো কারণে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেই যায়, সেক্ষেত্রে যথাযথ তদন্ত করে তার পেছনের কারণগুলোকে উন্মোচন করা এবং ভবিষ্যতে আর যেন এরকম দুর্ঘটনা ঘটতে না পারে তার জন্য যথাযথ সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নেয়া উচিত। বাংলাদেশে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটেÑ সড়ক-নৌ-রেলপথে, কর্মস্থলে; আগুনে পুড়ে, রাসায়নিক বিস্ফোরণে নানাভাবে মানুষ নিহত ও জখম হয়, প্রাণ-প্রকৃতি বিপন্ন হয় কিন্তু সেসব দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করার জন্য দুর্ঘটনার বিভিন্ন পূর্বশর্ত ও অন্তর্নিহিত কার্যকারণ শনাক্ত করে তা দূর করার কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হয় না। দুর্ঘটনার পর রুটিন অনুসারে এক বা একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেসব তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশিত হয় না। প্রকাশিত হলেও তদন্ত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন হয় না। তদন্তে অনেক সময় বিভিন্ন ব্যক্তিগত-গোষ্ঠীগত স্বার্থে প্রকৃত ঘটনা উঠে আসে না, ফলে সমস্যার প্রকৃত সমাধান পাওয়া যায় না। আবার তদন্তে দোষী সাব্যস্ত, ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অনেক ক্ষেত্রেই কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয় না। দুর্ঘটনার কারণে বহু ক্ষেত্রে জীবন ও সম্পদহানির জন্য কোনো ক্ষতিপূরণও দিতে হয় না, জবাবদিহিও করতে হয় না। এসব কারণে দেখা যায়, একই ধরনের দুর্ঘটনা বারবার ঘটতে থাকে যা বাংলাদেশের বেশির ভাগ দুর্ঘটনার পেছনের কাঠামোগত পূর্বশর্তের প্রাধান্যের দিকটাই নির্দেশ করে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) গবেষণা অনুসারে, নিয়ম লঙ্ঘন করে পুরান ঢাকায় রাসায়নিকের ব্যবসায় চালিয়ে নিতে ৩০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা ঘুষ লেনদেন হয়। টিআইবির গবেষণা থেকে দেখা যায়, আনুষ্ঠানিকভাবে রাসায়নিকের গুদাম ও কারখানা স্থাপনে লাইসেন্স প্রদান বা নবায়ন বন্ধ থাকলেও অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে এবং রাজনৈতিক প্রভাব কাজে লাগিয়ে লাইসেন্স বের করা হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের অসাধু কর্মকর্তাদের পরামর্শে ব্যবসায়ীরা তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম থেকে রাসায়নিক শব্দটি বাদ দিয়ে এন্টারপ্রাইজ হিসেবে ট্রেড লাইসেন্স বের করে নেয়। রাসায়নিকের ব্যবসায় অনাপত্তিপত্র, লাইসেন্স, ছাড়পত্র নেয়া বা নবায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশ অধিদফতর, বিস্ফোরক পরিদফতর, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কিছু অসাধু কর্মকর্তা জড়িত।

নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জ ট্র্যাজেডিতে হত্যাকাণ্ডের জন্য দায় কার? প্রথম দায় অবশ্যই কারখানা মালিকের। একে তো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়াই কারখানা স্থাপন করে তিনি মৃত্যুকূপ বানিয়েছেন; আগুনে ৫২ জনের মৃত্যুর পরও তার কথায় কোনো শোক ছিল না, মমতা ছিল না। সাংবাদিকদের আবুল হাসেম বলেছেন, ‘আমি তো আর জেগে আগুন লাগিয়ে দেইনি। অথবা আমার কোনো ম্যানেজার আগুন লাগায়নি। শ্রমিকদের অবহেলার কারণেও আগুন লাগতে পারে।’ এরই মধ্যে পুলিশ সজীব গ্রুপের মালিক আবুল হাসেমসহ আটজনকে গ্রেফতার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়েছে। ঘটনায় দায়ী সবার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত হবে আমরা আশা করি। ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক অধিদফতর, কারখানা পরিদর্শকসহ যাদের দায়িত্ব ছিল ভবনটির নিরাপত্তা মনিটর করা; তাদের সবাইকেও আইনের আওতায় আনতে হবে। সজীব গ্রুপের হাসেম ফুড লিমিটেডের অগ্নিকাণ্ড বাংলাদেশে এ ধরনের প্রথম নয়; এর আগেও তাজরীন ফ্যাশনসহ অনেক বেদনাদায়ক অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে আমাদের। এভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যার দায়ে কারো কি ফাঁসি হয়েছে? দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কথা বলা হয় এ কারণেই, যে শাস্তির ভয়াবহতা দেখে যেন আমরা সাবধান হই। কিন্তু যখন আমরা বুঝে যাই, তাৎক্ষণিক আবেগ স্তিমিত হলেই সব কিছু থেমে যাবে, কারো কোনো বিচার বা সাজা হবে না; তখন কারখানার নামে এমন মৃত্যুকূপ আরো তৈরি হবে। প্রত্যেকের দায় চিহ্নিত করে সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। আর কোনো মানুষকে যেন পুড়ে পরিচয়হীন লাশ হতে না হয়।

বিপর্যয় সৃষ্টিকারী ধ্বংসযজ্ঞের উৎস গুদাম-কারখানা আবাসিক এলাকা থেকে সরিয়ে নেয়া হয়নি। পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গুদাম সরিয়ে ফেলার জরুরি নির্দেশনাটির বাস্তবায়ন হলে চকবাজারে এমন ভয়াবহ ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি হয়তো জাতিকে এভাবে দেখতে হতো না। নিমতলীতে অগ্নিকাণ্ডের সময় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা জীবন বাজি রেখেও হতাহতের সংখ্যা কমিয়ে আনতে পারেননি। এর নানাবিধ কারণ, অপ্রশস্ত রাস্তা দিয়ে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি প্রবেশ করতে না পারা, পানির জোগান না থাকা ও কেমিক্যালের গুদাম। তখনো রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল পর্যায় থেকে বলা হয়েছিল, নিমতলী থেকে সব কেমিক্যালের গুদাম সরিয়ে নেয়া হবে। তবে এতদিন কেন নিমতলী কিংবা চকবাজারের কেমিক্যাল গুদাম সরিয়ে নেয়া হয়নি?

গত ৪ জুন রাতে সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে স্মরণকালের ভয়াবহ কেমিক্যালজনিত বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক প্রাণহানি ও হতাহতের ঘটনায় পরিবেশ ও পাবলিক সেফটি বলতে এসব স্থানে আদৌ কিছু আছে বলে মনে হয় না। থাকলে সাধারণ পণ্য ও বিস্ফোরকদ্রব্য আলাদা রাখা হতো। নীতিমালা ও বিধির আওতায় পণ্য খালাস, সংরক্ষণ ও সরবরাহ করা হতো। তা না হওয়ায় ভয়াবহ দুর্ঘটনায় অসংখ্য মানুষের জীবন ও অঙ্গহানি হয়েছে। সম্পদের প্রভ‚ত ক্ষতি হয়েছে। সীতাকুণ্ডের কনটেইনার ডিপোর হতাহতের বেশির ভাগই শ্রমিক, হতাহতের তালিকায় আছেন উদ্ধারকারী ফায়ারসার্ভিস কর্মী, পুলিশ সদস্য। কেউ জীবিকার জন্য, কেউ কর্তব্য পালনের সময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অকাতরে জীবনকে উৎসর্গ করে দিয়েছেন, কেউ কেউ মানবিক টানে মানুষকে বাঁচাতে নিজেদের জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছেন, এগিয়ে এসেছেন মানবতার সেবায়। যে শ্রমিক ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্য আগুনে পুড়ে জীবন দিলো, যারা দগ্ধ হয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে, দগ্ধ হয়ে পুরো জীবন অনিশ্চয়তার মুখে পড়ল, তাদের দায়িত্ব কে নেবে? মালিকপক্ষ নেবে না, কারণ দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে তাদের দেখা যায়নি। কঠিন সত্য হলো, এমনটাই ঘটে আসছে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, সীতাকুণ্ডের বিভীষিকায় চরম নিরাপত্তাহীনতার চিত্রটি নগ্নভাবে উন্মোচিত হয়েছে। জানা যায়, কনটেইনার ডিপো কর্তৃপক্ষের বিস্ফোরকদ্রব্য মজুদ রাখার ছিল না কোনো লাইসেন্স। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা যখন আগুন নেভাতে যান তখন কনটেইনার ডিপো মালিকপক্ষ কেমিক্যাল ও দাহ্যপদার্থ কনটেইনারে থাকার বিষয়ে অবগত না করায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা কেমিক্যাল স্যুট না পরে সাধারণ ফায়ার স্যুট পরে অগ্নি নির্বাপণ করতে গেলে, আমাদের ৯ জন সাহসী বীর ফায়ার ফাইটার সদস্যসহ মোট ৪৯ জনকে জীবন দিতে হলো। এ ছাড়া গুরুতর আহত হয়ে অনেকেই মৃত্যুর প্রহর গুনছে। এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এখনই দুর্ঘটনার লাগাম টেনে ধরতে হবে। যত প্রভাবশালী ও শক্তিশালী গোষ্ঠী হোক না, সব অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না করা হলে দোষী ব্যক্তিরা একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে পার পেয়ে যাবে আর নিরীহ শ্রমজীবী মানুষের লাশের সারি দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হবে। সভ্য সমাজ ও রাষ্ট্রে তা কখনো কাম্য হতে পারে না।

শিল্পপ্রতিষ্ঠান বা কারখানা কিভাবে পরিচালিত হবে, তার সেফটি গাইডলাইন কিভাবে রক্ষা করা হবে এটা অপারেটর বা শ্রমিকদের ঠিক করার কথা নয়। মালিক, পরিচালনা পরিষদ ও ব্যবস্থাপকরাই এটি ঠিক করবেন এবং শ্রমিক-কর্মীরা যেন তা মেনে চলেন তা নিশ্চিত করবেন। মালিক-পরিচালকরা অতিরিক্ত মুনাফার লোভে যেন কর্মস্থলের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো গাফিলতি না করতে পারেন, সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তার জন্য রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেমন- কলকারখানা পরিদর্শন অধিদফতর, বয়লার পরিদর্শন দফতর ইত্যাদি। কিন্তু পাঁচ-ছয় হাজার বয়লারের জন্য যদি মাত্র পাঁচজন পরিদর্শক থাকে তাহলে কিভাবে এই তদারকির কাজ যথাযথ হবে? এভাবে মালিকগোষ্ঠীর মুনাফার স্বার্থে যদি এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে অকার্যকর করে রাখা হয়, যদি প্রতিষ্ঠানগুলোতে পর্যাপ্ত লোকবল না থাকে, যদি নিয়মিত তদারকি না হয় এবং মালিকরা যদি যা ইচ্ছা তা করে পার পেয়ে যেতে থাকেন, তাহলে তো একের পর এক এরকম দুর্ঘটনা ঘটতেই থাকবে।

পরিশেষে বলতে পারি, দেশে একের পর এক কেমিক্যাল ও দাহ্যপদার্থজনিত কারণে বিভিন্ন সময়ে ব্যাপক অগ্নিকাণ্ড ও বিস্ফোরণ দুর্ঘটনায় মানবিক বিপর্যয়সহ ধনসম্পদের প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হলেও ফায়ার সার্ভিস, বিস্ফোরক অধিদফতর ও পরিবেশ অধিদফতর কর্তৃপক্ষের যথাযথ তদারকি, পরিদর্শন ও নজরদারির অভাব রয়েছে। তাছাড়া দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া এবং কলকারখানা মালিকপক্ষের উদাসীনতা, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা এবং ফায়ার সেফটি গাইডলাইন মেনে না চলা, সর্বোপরি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হওয়ার কারণে অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। ভিকটিম হচ্ছে সাধারণ নাগরিক। কাঠামোগত ও অব্যবস্থাপনার কারণেই প্রতিনিয়ত অগণিত দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। দুর্ঘটনা যেন আমাদের নিত্যসাথী হয়ে গেছে। দুর্ঘটনার অবহেলা আর অনিয়ম যেন নিয়মে পরিণত হয়ে গেছে। শ্রমিকদের নিরাপদ জীবন-জীবিকার অনক‚ল কর্মপরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে সরকারি সংস্থা ও মিলকারখানার মালিকপক্ষকে অধিকতর সচেতন ও দায়িত্বশীল হতে হবে।

লেখক : কলামিস্ট ও গবেষক, সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি