জলদস্যুদের কবল থেকে নাবিকসহ জাহাজটি মুক্ত হওয়ার আগেই নাবিকেরা কে কোথা থেকে সাইন অফ (জাহাজের কর্ম হতে অব্যাহতি) করবেন, তার তালিকা চূড়ান্ত করে রাখে জাহাজের মালিকপক্ষ। তাদের নির্দেশে এ ব্যাপারে ক্যাপ্টেনকে একটি তালিকাও দিয়েছে নাবিকরা। সেই তালিকায় জাহাজের ২৩ নাবিকের মধ্যে ১৮ জন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বন্দর থেকে সাইন অফ করবেন বলে জানিয়েছেন। বাকি পাঁচজন জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছালে সাইন অফ করবেন বলে জানিয়েছেন। তারপরও নাবিকদের সবাইকে দুবাই থেকে এক যোগে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে জাহাজটির মালিকপক্ষ।
এদিকে জলদস্যুদের সঙ্গে বোঝাপড়া চূড়ান্ত হওয়ার কথা স্বীকার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শনিবার দিবাগত রাতে একটি পোস্টও করেছে কেএসআরএম গ্রুপের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত। বাংলা নতুন বছরের শুরুর দিনই এমন সুসংবাদ দিলেন তিনি। এটা নিয়ে আজ রোববার দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনও করতে যাচ্ছে জাহাজটির মালিকপক্ষ।
মালিকপক্ষের মুখপাত্র ও মিডিয়া অ্যাডভাইজার মিজানুল ইসলাম জানান, আজ রোববার সোমালিয়ান জলদস্যুদের কাছে জিম্মি জাহাজ এমভি আবদুল্লাহর বিষয়ে কেএসআরএম কর্পোরেট কার্যালয়ে বেলা ১২টায় এক সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাজটি মুক্ত করা হয়েছে। এটি এখন আরব আমিরাতের দিকে যাচ্ছে। সেখানে পণ্য খালাস করবে। আর নাবিকরা বিমানযোগে দেশে ফিরে আসবে শিগগির। ঠিক কোনদিন তারা ফিরবেন তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি।’
এদিকে গত শনিবার ‘জিম্মি ২৩ নাবিক সহসাই মুক্তি পাবেন’ বলে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে আটক এমভি আবদুল্লাহ জাহাজ ও নাবিকদের মুক্তি প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছিলেন, ‘আমাদের প্রচেষ্টা আছে, সর্বমূখী প্রচেষ্টা পরিচালনা করা হচ্ছে। যারা হাইজ্যাক করেছে তাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা চলছে। এবং নাবিকরা ভালো আছেন। তাদের খাবার-দাবারেরও কোনো অসুবিধা নেই, তারা কেবিনে আছে। যেহেতু আলোচনা অনেকদূর এগিয়েছে, আমরা আশা করছি সহসা তাদেরকে মুক্ত করা সম্ভবপর হবে।’
প্রসঙ্গত গত ১২ মার্চ ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজকে জিম্মি করে সোমালিয়ান জলদস্যুরা। এরপর তারা মুক্তিপণ দাবি করে। বিষয়টি মালিকপক্ষ সরাসরি স্বীকার না করলেও মুক্তিপণ দিয়েই জাহাজটিকে মুক্ত করেছে তারা। ১৪ বছর আগে একই মালিকের আরেকটি জাহাজ এমভি জাহান মণিকেও একইভাবে মুক্ত করে কেএসআরএম গ্রুপ।
samakal