- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৬ জানুয়ারি ২০২১
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, ‘আজকে আমাদের কোনো নাগরিক অধিকার নেই। এ দুঃসহ অবস্থা থেকে আমরা পরিত্রাণ চাই।’
তিনি বলেন, ‘৭১-এ যে ধরনের তরুণদের দেখতে পেয়েছিলাম, যাদের এক মাসের ট্রেনিং দিয়ে যোদ্ধায় পরিণত করেছিলাম, যারা মাইন, কামানের গোলা, মেশিন গানের মুহুর্মুহু গোলা অতিক্রম করে শত্রুর ওপরে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, সেই ধরনের সাহসী সন্তানদের আবার রাজপথে দেখতে চাই। আসুন আমরা সবাই মিলে রাজপথে শামিল হয়ে দুঃশাসনের অবসান করি।’
শনিবার দুপুর ২টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডিতে একটি হোটেলে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিমের আহ্বানে দেশের মঙ্গল কামনায় এক দোয়া অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের অবসান চাই, দুঃশাসনের অবসান চাই, গণতন্ত্র আবার পুনঃপ্রতিষ্ঠা চাই, ভোটাধিকার চাই, মানবিক অধিকার চাই, সাম্য চাই, মানবিক মর্যাদা চাই। এটা কেউ আমাদের দেবে না। উত্তর দিক থেকেও দেবে না, দক্ষিণ দিক থেকেও দেবে না। কোনো দিক থেকে দেবে না। এটা আমাদের রাজপথে নেমে আদায় করতে হবে। আসুন আমরা সবাই একে অন্যের মঙ্গল কামনা করি। আমরা যেন আমাদের এ প্রিয় দেশটিকে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য বসবাসযোগ্য করে রেখে যেতে পারি।’
অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইন বিভাগের অধ্যাপক ও কলামিস্ট ড. আসিফ নজরুল বলেন, ‘এখন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের বলা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তি আর যারা রাতের আঁধারে ভোট করে তারা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের বলতে হবে যারা গণতন্ত্র দেয় না, যারা বৈষম্য সৃষ্টি করে, যারা দেশের সম্পদ লুট করে, তারা সবচেয়ে বড় মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপক্ষের শক্তি। বাংলাদেশের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধে সবচেয়ে বড় বিরোধী শক্তি বর্তমানে ক্ষমতায় আছে।’
আসিফ নজরুল বলেন, “মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আপনাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমি অনুরোধ করব আপনারা একটা শব্দ ইউজ (ব্যবহার) করবেন সেটা হচ্ছে ‘মুক্তিযুদ্ধের সঠিক চেতনার পক্ষের শক্তি’। তারা বলবে তারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষের শক্তি আর আপনারা বলবেন আমরা মুক্তিযুদ্ধের সঠিক চেতনার পক্ষের শক্তি। সঠিক চেতনাটা কী সেটা দেশের মানুষের কাছে তুলে ধরবো। কেন বঙ্গবন্ধু দেশ স্বাধীন করেছিল, কেন আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন দিয়েছিল।”
আসিফ নজরুল বলেন, ‘বিএনপির সময় মাগুরার একটি আসনে কারচুপির হয়েছিল বলে সব দল রাজপথে নেমে এসেছিল। কে কোন দল করে তা দেখেননি। এখন ৩০০ আসনের ভোট রাতে হওয়ার অভিযোগ আসে। আপনারা ঐক্যবদ্ধ হতে পারেন না।’
মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহিমের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপি নেতা সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবির, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা: মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ড. আ ন ম এহসানুল হক মিলন, সাবেক সংসদ সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি, সাবেক সচিব সৈয়দ মারগুব মোর্শেদ, বিমান বাহিনীর সাবেক প্রধান অবসরপ্রাপ্ত এয়ার ভাইস মার্শাল ফখরুল আযম, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলে এলাহী আকবর, মেজর জেনারেল (অব.) এহতেশাম, রিয়ার অ্যাডমিরাল অব. মোস্তাফিজুর রহমান, কল্যাণ পার্টির স্থায়ী কমিটির সদস্য ফোরকান ইবরাহিম, এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মনজু, মেজর (অব.) সরোয়ার, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শরীফ, কর্নেল (অব.) হান্নান, সাবেক রাষ্ট্রদূত আসাফউদ্দৌলা, কল্যাণ পার্টির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রফেসর ডা. ইকবাল মাহমুদ, বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) হাসান নাসির, জামায়াতে ইসলামীর নেতা মাওলানা আব্দুল হালিম, ইতিহাসবিদ নজরুল ইসলাম, মাওলানা মোশারফ হোসেন, বিএসএমএমইউএর সার্জারি বিভাগের সাবেক ডিন প্রফেসর সাইফুল ইসলাম, জাগপা মহাসচিব সাইফুল ইসলাম, ঢাবির অধ্যাপক নুরুল আমিন বেপারীসহ অর্ধশতাধিক অবসরপ্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।